ঢাকা | ডিসেম্বর ২৬, ২০২৪ - ১২:০৩ পূর্বাহ্ন

সংবাদ শিরোনামঃ

বাঘায় ‘সিদীপ’ এনজিওর হয়রানিতে বিপাকে গ্রাহক

  • দৈনিক নবোদয় ডট কম
  • আপডেট: Thursday, June 15, 2023 - 2:55 pm
  • News Editor
  • পঠিত হয়েছে: 49 বার

রাজশাহী প্রতিনিধি:রাজশাহীর বাঘায় সেন্টার ফর ডেভেলপমেন্ট ইনোভেশন এন্ড প্র্যাকটিসেস ‘সিদীপ’ নামের এক বে-সরকারি এনজিওর ম্যানেজার ও মাঠকর্মীর প্রতারণা ও হয়রানিতে ঈদ সামনে রেখে বিপাকে পরেছে এক ব্যবসায়ী। কৌশলে গ্রাহকের ঋণ পরিশোধ করিয়ে, নানা অযুহাত সহ আর ঋন দিচ্ছেন না। এতে করে চরম বেকায়দায় পড়েছেন বলে অভিযোগ করেছেন ব্যবসায়ী শামিম আহম্মেদ।

শামিম একজন গার্মেন্টস দোকানী। তার অভিযোগে জানাযায়, ব্যবসার প্রয়োজনে তিনি তার স্ত্রীকে সদস্য করে প্রথম ২০২১ সালে সিদীপ এনজিও থেকে ত্রিশ হাজার টাকা ঋন নেন। এনজিও টির শর্ত অনুযায়ী সপ্তাহে ৭৫০ টাকা কিস্তি এবং ১০০ টাকা সঞ্চয় হিসেবে, ৪৫ সপ্তাহে নিয়মিত প্রদান করে পরিশোধ করেন। এতে তাকে গৃহীত টাকার সুদ গুনতে হয় ৩৮৪০ টাকা। এর পর ২০২২ সালে তিনি দ্বিতীয় দফায় এক লক্ষ টাকা নেন, যার সুদ আসে ১২৮০০ টাকা। সপ্তাহে ২৫০০ টাকা কিস্তি এবং ১০০ টাকা সঞ্চয় যথারীতি ভাবে প্রদান করে। এদিকে ৪২ সপ্তাহে এসে ঈদ-উল- আযহার ব্যবসা উপলক্ষে তিনি আরো কিছু টাকার প্রয়োজন বোধ করে এবং প্রাথমিক ভাবে মাঠকর্মীর ও ম্যানেজার এর সাথে আলোচনা করে। এতে তারা তাকে জানায়

আপনাকে আগামী তিন সপ্তাহের কিস্তি পরিশোধ করতে হবে এবং আমরা আরএমও স্যারের থেকে অনুমতি নিয়ে ঋন প্রদান করবো আপনাকে। কিন্তু গত তিন সপ্তাহে আর মাঠকর্মী কিস্তি নিতে আসেনা, একাধিক বার অবগত করলেও তারা বিষয়টা গুরুত্ব দেয় না। ঈদের দিন এগিয়ে আসছে এমন সময় তাদের বললে তারা,হঠাৎ করে জানায় আপনি এসে আপনার জমা সঞ্চয়ের টাকা হিসেব করে নিয়ে যান,আপনাকে আর ঋন দেওয়া হবেনা। এমতাবস্থায় আমি তাদের এই প্রতারণা ও হয়রানিমূলক আচরণে চরম বেকায়দায় পরেছি।

জানা গেছে, উপজেলার বেশির ভাগ মানুষ এনজিও নির্ভর। বিশেষ করে ছোট যানবাহন চালক, শ্রমিক, মৎসজীবি থেকে শুরু করে সকলেই একাধিক এনজিও ঋণের উপর নির্ভর। এজন্য বৈধ অবৈধ এনজিওর ছড়াছড়ি। এনজিওর ঋণ পেতে খুব একটা বেগ পেতে হয় না। এজন্য এনজিওর দিকে ঝুকে পড়েছেন তারা। আর এনজিও গুলোর কাজের কোন নিয়ন্ত্রণ নেই। তাদের ইচ্ছেমত চলে কার্যক্রম। প্রায়ই তারা গ্রাহকদের সাথে করে দুর্ব্যবহার। দিন রাত ছুটি কিছুই থাকে না। তারা মানেন না সরকারি নিয়ম-কানুন। আবাসিক ভবন ভাড়া নিয়ে চলে এনজিও আর কর্মকর্তা কর্মচারীরা সবাই থাকেন ওই ভবনে। সকাল সাতটা থেকে টানা রাত্রি আটটা ও নয়টা পর্যন্ত চালিয়ে যায় অফিস। যার কারণে কিছু এনজিও শুরু করেছেন বাড়তি ঋণ প্রদানের আশ্বাসে কিস্তি আদায় কৌশল। এতে অনেক দিনমজুর তাদের প্রতারণার ফাঁদে পড়ছেন।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে এক গ্রাহক জানান, আমি বেশ কয়েক বছর ধোরে সিদীপ এনজিওর বাঘা শাখার সঙ্গে লেনদেন করে আসছি। প্রতি মাসের ২৪ তারিখ আমার কিস্তির দিন। যেটা আমি নিয়মিত পরিশোধ করি। কিন্তু তারপরও সাত-আট দিন আগে থেকেই আমাকে ফোন দিয়ে অস্থির করে দেয়। আবার বাসায় ফোন দিয়ে টাকা চাই। বললে বলে ভুলে ফোন দিয়েছি।

ব্যবসায়ী শামিম বলেন, গত দুই বারে কোন সপ্তাহে আমি কিস্তির টাকা প্রদান করতে বিলম্ব করিনি। আমরা ব্যবসায়ী বিভিন্ন খাতের টাকার উপরে আমাদের কিছু পরিকল্পনা থাকে, এবার সিদীপের টাকাটা নিয়ে আমি ঈদ সামনে রেখে দোকানে মাল উঠাতাম। তারা দিতেও চেয়েছিল।কিন্তু হঠাৎ শেষ সময়ে এসে দিবেনা বলছে। তারা যদি আমার সঙ্গে এমন আচরণ করে তাহলে যারা গরীব অসহায় তাদের সাথে কি জালিয়াতি, প্রতারণা ও জুলুম করে! এই সকল এনজিও গুলোকে আইনের আওতায় আনা একান্ত প্রয়োজন ।

সিদীপ এনজিওর মাঠকর্মী সুরুজ হাসান বলেন, আমি এখানে নতুন এসেছি। তার কাছথেকে এক সপ্তাহের কিস্তির টাকা নিয়েছি, আর এক সপ্তাহে গিয়ে দেখি তিনি দোকানে নেই। সমস্যা কি এটা আমার জানানেই।

শামিমকে ঋণ কেন দেওয়া হবে না প্রশ্নের উত্তরে সিদীপ এনজিওর ব্রাঞ্চ ম্যানেজার বলেন, সমস্যা আছে। তার দোকানে গিয়ে কিস্তি আদায় করতে হয়। এছাড়া আর কি সমস্যা জিজ্ঞাসা করা হলে কোন সদ উত্তর না দিয়ে তিনি ব্যস্ততা দেখান।