ঢাকা | ডিসেম্বর ২৩, ২০২৪ - ৬:০০ অপরাহ্ন

সংবাদ শিরোনামঃ

অনিশ্চয়তা থেকে রক্ষায় উপাচার্যের দ্বারস্থ ঢাবি শিক্ষার্থীরা

  • দৈনিক নবোদয় ডট কম
  • আপডেট: Thursday, December 10, 2020 - 2:20 pm
  • admin
  • পঠিত হয়েছে: 130 বার

করোনা পরিস্থিতির কারণে গত মার্চ থেকে বন্ধ আছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষা কার্যক্রম। কবে খুলবে বিশ্ববিদ্যালয়, তা এখনো অজানা। পরিস্থিতি স্বাভাবিক থাকলে চলতি বছরে স্নাতক শেষ হতো ২০১৬-১৭ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থীদের। স্নাতকের শেষ প্রান্তে এসে এই বর্ষের শিক্ষার্থীরা অনিশ্চয়তা থেকে রক্ষায় এবার উপাচার্যের দ্বারস্থ হয়েছেন।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ২০১৬-১৭ শিক্ষাবর্ষের পরীক্ষাসহ সব একাডেমিক কার্যক্রম দ্রুত শেষ করা ও ৪৩তম বিসিএসে আবেদনের সময় বাড়ানোর দাবিতে আজ বৃহস্পতিবার দুপুরে রাজু ভাস্কর্যের পাদদেশে মানববন্ধন করেছেন শিক্ষার্থীরা। পরে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য মো. আখতারুজ্জামানের কার্যালয়ে গিয়ে স্মারকলিপি দেন তাঁরা। এই মানববন্ধনে প্রায় ৩০ জন শিক্ষার্থী অংশ নেন।

গত ৩০ নভেম্বর পাবলিক সার্ভিস কমিশনের (পিএসসি) প্রকাশ করা ৪৩তম সাধারণ বিসিএসের বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, ২০২১ সালের ৩১ জানুয়ারি সন্ধ্যা ছয়টা পর্যন্ত আবেদনপত্র জমা দেওয়া যাবে। ২০১৬-১৭ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থীরা বলছেন, স্নাতকের পরীক্ষা হয়ে গেলে তাঁরা অংশ নিতে পারতেন ৪৩তম বিসিএসসহ অন্যান্য চাকরির পরীক্ষায়। কিন্তু করোনাকালে অনলাইনে ক্লাস চললেও কোনো পরীক্ষা না হওয়ায় তাঁদের সেশনজটের আশঙ্কা তৈরি হয়েছে। পরীক্ষা কবে হবে, তারও ঠিক নেই। সব মিলিয়ে তাঁরা বড় ধরনের অনিশ্চয়তার মুখে পড়েছেন।

৪০তম বিসিএসের লিখিত ও ৪১তম বিসিএসের প্রিলিমিনারি পরীক্ষাই যেখানে হয়নি, সেখানে ৪৩তম বিসিএসের আবেদনের শেষ সময় জানুয়ারিতে রাখার কোনো মানে হয় না। ২০১৬-১৭ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থীদের ৪৩তম বিসিএস পাওয়ার কথা ছিল। কিন্তু আবেদনের শেষ তারিখ ৩১ জানুয়ারি হওয়ায় তাঁরা অংশ নিতে পারছেন না।
আজ রাজু ভাস্কর্যের পাদদেশে হওয়া মানববন্ধনে রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের ২০১৬-১৭ শিক্ষাবর্ষের ছাত্রী স্নিগ্ধা দেবনাথ বলেন, ‘চতুর্থ বর্ষের পরীক্ষা যাদের হয়ে গেছে, তারা বিসিএস পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করতে পারছে। করোনার কারণে আমরা একাডেমিক কার্যক্রম শেষ করতে পারিনি। তাই আমরা ৪৩তম বিসিএস পরীক্ষাটি ধরতে পারছি না। এটি নিয়ে খুবই হতাশায় ভুগছি। প্রশাসন যদি আমাদের এই বিষয়টি মানবিকভাবে দেখে দ্রুত সময়ের মধ্যে পরীক্ষা নেয় এবং সরকারও যদি বিসিএস পরীক্ষার আবেদনের সময়সীমা বাড়ায়, তাহলে আমরা হতাশার জায়গাটি কাটিয়ে উঠতে পারব।’

বিজ্ঞাপন

মানববন্ধন শেষে উপাচার্যের কার্যালয়ে গিয়ে তাঁর হাতে স্মারকলিপি তুলে দেয় ২০১৬-১৭ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থীদের প্রতিনিধিদল। স্মারকলিপিতে দাবির পক্ষে যুক্তি তুলে ধরে বলা হয়, ২০১৬-১৭ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থীরা ৪৩তম বিসিএসে অংশ নিতে না পারলে তাঁদের জীবন থেকে এক-দেড় বছর চলে যাবে। কারণ ৪৪তম বিসিএসের সার্কুলার ২০২২ সালের আগে হওয়ার সম্ভাবনা ক্ষীণ। তাই ৪৩তম বিসিএসে তাঁরা অংশগ্রহণ করতে চান। ৪০তম বিসিএসের লিখিত ও ৪১তম বিসিএসের প্রিলিমিনারি পরীক্ষাই যেখানে হয়নি, সেখানে ৪৩তম বিসিএসের আবেদনের শেষ সময় জানুয়ারিতে রাখার কোনো মানে হয় না। ২০১৬-১৭ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থীদের ৪৩তম বিসিএস পাওয়ার কথা ছিল। কিন্তু আবেদনের শেষ তারিখ ৩১ জানুয়ারি হওয়ায় তাঁরা অংশ নিতে পারছেন না। তাই আবেদনের সময় বাড়ানোর দাবি তাঁদের।

শিক্ষার্থীদের পক্ষ থেকে স্মারকলিপিতে আরও বলা হয়, শুধু বিসিএসই নয়, ২০১৬-১৭ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থীদের পরীক্ষাসহ সব একাডেমিক কার্যক্রম দ্রুত শেষ করা না গেলে নিকট ভবিষ্যতে সার্কুলার আসা অন্য কোনো চাকরিতেই শিক্ষার্থীদের এই বৃহৎ অংশ আবেদন করতে পারবেন না। এটি ব্যক্তি, সমাজ ও রাষ্ট্রের জন্য ক্ষতিকর। ২০১৬-১৭ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থীরা পরীক্ষাসহ সব একাডেমিক কার্যক্রম দ্রুত শেষ করে সরকারি ও বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের মধ্যে সমন্বয় করতে হবে। কারণ, বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ুয়া এই শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থীরা ইতিমধ্যে স্নাতক শেষ করেছেন।

উপাচার্য দাবির ব্যাপারে আশ্বস্ত করেছেন বলে জানালেন সমাজবিজ্ঞান বিভাগের ২০১৬-১৭ শিক্ষাবর্ষের ছাত্র আকরাম হুসাইন। তিনি প্রথম আলোকে বলেন, ‘উপাচার্য আমাদের দাবির সঙ্গে একমত হয়েছেন। তিনি বলেছেন, বিসিএসে আবেদনের সময়সীমা বাড়ানোর বিষয়টি নিয়ে তিনি পিএসসির সঙ্গে কথা বলবেন আর দ্রুত পরীক্ষা নেওয়ার ব্যাপারে বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভাগগুলোকেও তিনি বলবেন, যাতে কোনো শিক্ষার্থী অধিকার থেকে বঞ্চিত না হয়।’