কেরানীগঞ্জে প্রধান শিক্ষকের দূর্নীতি, অনিয়ম, পদত্যাগের দাবীতে মানববন্ধন
কেরানীগঞ্জ (ঢাকা) প্রতিনিধিঃ
কেরানীগঞ্জে হাসনাবাদ কামুচানশাহ উচ্চ বিদ্যালয়ে প্রধান শিক্ষক দূর্নীতির ও অতিরিক্ত বেতন আদায়, আওয়ামী লীগের প্রভাব খাটিয়ে ম্যানেজিং কমিটির সাথে হাত মিলিয়ে নিজের আখের গুছান প্রধান শিক্ষক কানিজ ফাতিমা। স্কুলের সঠিক হিসাব না দেয়ার শিক্ষার্থীরা মাঠে নেমে এসেছেন।
গতকাল ৯ সেপ্টেম্বর, সোমবার সকাল ১০ টা থেকে এ কর্মসূচি পালন করে এ কর্মসূচি চলে ২ টা পর্যন্ত। এসময় কর্মসূচির সাথে একমত পোষন করেছেন বৈষম্যের স্বীকার শিক্ষকরা।
সমান্বয়ক কামুচান শাহ উচ্চ বিদ্যালয়ের দশম শ্রেনীর শিক্ষার্থী এশা জানান, প্রধান শিক্ষক সরকারি নিয়মনীতি অনুসরণ না করে আমাদের স্কুলের শিক্ষার্থীদের নিকট থেকে অতিরিক্ত ফি আদায় করে নিজের আখের ও স্কুলের টাকা আত্মসাত করেছেন।
তিনি আরো জানান, আওয়ামী লীগের সভাপতি ও ম্যানেজিং কমিটির সদস্যদের সাথে হাত মিলিয়ে ২২ লক্ষ ৫০ হাজার টাকা দূর্নীতি করেছেন। আমরা এই দূর্নীতিবাজ প্রধান শিক্ষক এর পদত্যাগ দাবী করছি। তিনি আরো বলেন, সরকারি নির্ধারিত
২০২৩/২৪,রেজিস্টেশন ফি ৬ষ্ঠ শ্রেণির – ৫৮ আদায় করেছেন ১৫০ টাকা, ৮ম শ্রেণির -৭৪ টাকা – আদায় করেছেন ৩০০ টাকা,৯ম শ্রেণির -১৭১ টাকা – আদায় ৫০০ টাকা, এসএসসি -২০২০ টাকা আদায় ২২৫০ টাকা, সাইন্স ২১৪০ টাকা,আদায় ২৩৫০ টাকা। এ ছাড়া ২০২১ সালের এসএসসি পরীক্ষার্থীদের তিন পরীক্ষা শেষ হয়ে করোনার কারনে বন্ধ হয়ে যায়। সেখানেও ৫৭ হাজার টাকা বোর্ড থেকে ফেরত দিয়েছে তারও কোন হিসাব দেয় নি তিনি। তিনি তৎকালীন মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার কে ভাগবাটোয়ারা করে খেয়েছেন।
কামুচান শাহ উচ্চ বিদ্যালয়ের সাধারন শিক্ষার্থী দশম মিমি বলেন,আমাদের তিনটি দাবী-দাওয়া ছিল, প্রধান শিক্ষক এর পদত্যাগ, দূর্নীতি মুক্ত শিক্ষা ব্যবস্থা, সরকারি আইনের নিয়ম নীতি অনুযায়ী ফি বাইরে কোন ফি না নেয়া।
তিনি আরো বলেন, ম্যানেজিং কমিটিতে থেকে এ দূর্নীতির প্রশ্রায় দিয়েছেন তাদেরও আইনের আওতায় এনে বিচার দাবী করছি।
আহসান হাবীব ইরান,৯ম শ্রেণীর শিক্ষার্থী বলেন,আমাদের পিতা মাতার কষ্টে অর্জিত টাকা দিয়ে সে আরাম আয়াস করবে। আওয়ামী লীগের প্রভাবশালী নেতাদের ক্ষমতার প্রভাব দেখিয়ে এ সব দূর্নীতি করেছেন। আমরা সকল শিক্ষর্থীরা তার
পদত্যাগ দাবি ও তাকে দূর্নীতির দায়ে আইনের আওতায় আনার দাবী করছি।
কামুচান শাহ উচ্চ বিদ্যালয়ের বৈসম্যের স্বীকার সহকারি শিক্ষিকা জানান, ২০০৩ সালে আমি স্কুলের চাকুরী শুরু করি। এর মধ্যে একজন প্রধান শিক্ষকা কমিটি বাতিল করেছেন কানিজ ফাতিমা আসার পর থেকে আমাকে এমপিও করে দেয়ার কথা বলে প্রায় আড়াই লক্ষ টাকা নিয়েছে। আমাকে কোন এমপিও তো দূরের কথা উল্টো চাকুরী থেকে বাদ করে দেয়ার হুমকি শুনতে হয়েছে। তিনি নিজে এসব দূর্নীতির মাধ্যমে হাসনাদে বাড়ি করেছেন। আমরা তার বিচারদাবী ও পদত্যাগ চাই।
সহকারী শিক্ষিকা মোহসেনা আক্তার বলেন, ২০১০ সালে তাকে নিয়োগ প্রদান করা হয়। দূর্নীতিবাজ লোভী প্রধান শিক্ষক তার চাকুরী এমপিও করার কথা বলে তার কাছ থেকে ২ লক্ষ টাকা নিয়েছেন কিন্তু এমপিও তো দূরের কথা সে চাকুরী খেয়ে ফেলার ভয় দেখায়। আমি এই দূর্নীতিবাজ প্রধান শিক্ষক এর বিচার ও দূর্নীতির তদন্ত সাপেক্ষে জেলা- উপজেলা প্রশাসনের কাছে জোড় বিচার দাবী করছি।
এ বিষয় শুভাঢ্যা ০৯ নং ওয়ার্ডর সেলিম মেম্বার
জানান, আমি বিষয়টি শুনেছি শিক্ষার্থীদের দাবী যৌক্তিক আমি তাদের দাবীর সাথে একমত পোষন করছি। সে যদি দূর্নীতি করে থাকে কোন ছাড় দেয়া হবে না। তিনি সবাইকে ক্লাশে ফিরে যাওয়ার জন্য আহবান জানান। আমি উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার ও প্রশাসন এর সাথে আলাপ করে অতিদ্রুত এর সমাধান করবো।
এ বিষয়ে কামুচান শাহ উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক কানিজ ফাতিমার পদত্যাগ ও দূর্নীতির ব্যাপারে জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমি কোন দুর্নীতি করিনি বলে এরিয়ে জান। তিনি বলেন,
একটি মহল আমার বিরুদ্ধে শিক্ষার্থীদের লেলিয়ে দিছে, আমি স্কুলে প্রবেশ করতে পারি না। শিক্ষকরা আমার বিরুদ্ধে উপজেলা প্রশাসন এর কাছে দূর্নীতির অনিয়ম করেছি বলে অভিযোগ করেছেন, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা তদন্ত করুক। তদন্ত রিপোর্টে আসুক, আমি যদি দুর্নীতির এত জড়িত থাকি যে ব্যবস্থা না আমি মেনে নিব।
কেরানীগঞ্জ উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার জানান, হাসনাবাদ কামুচান শাহ উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষক/ শিক্ষিকা, ছাত্র/ ছাত্রীরা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আমাদের স্যার এর নিকট দূর্নীতি অভিযোগে একটি দরখাস্ত জমা দিয়েছেন। এর মধ্যে স্যার বদলী হয়েছে এ কারনে কোন তদন্ত কমিটি হয়নি নতুন স্যার এসেছেন। তিনি তদন্ত কমিটি করলে তদন্তে দূর্নীতির কোন রাস মিললে কোন ছাড় নয় বিধিমোতাবেক ব্যবস্থা নিব।
কেরানীগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা রিনাত ফৌজিয়া অসুস্থ ছুটিতে রয়েছে বলে তার মোবাইল সরকারি নাম্বারটি কেরানীগঞ্জ মডেল সহকারী কমিশনার ( ভূমি) এর কাছে রয়েছে নলে জানান,তার সাথে কথা বলার সুযোগ হয়নি।