অবশেষে মুখ খুললেন সেনাপ্রধান ওয়াকার-উজ-জামান
মোঃ নাসির, নিউ জার্সি (আমেরিকা) প্রতিনিধিঃ শেখ হাসিনা হঠাৎ করে দেশ ছেড়ে পালিয়ে যাওয়ার আগের রাতে সেনাপ্রধান তার জেনারেলদের সঙ্গে বৈঠক করেন। সিদ্ধান্ত নেন কারফিউ বলবৎ রাখতে সেনারা বেসামরিক লোকদের ওপর গুলি চালাবেন না। তবে সেনাপ্রধান জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামান যখন বাংলাদেশের সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে স্পষ্টভাবে জানান যে সামরিক বাহিনী আর তার নেতৃত্বাধীন সরকারকে আর সমর্থন দিতে পারবে না,
সোমবার প্রধানমন্ত্রীর বাসভবন গণভবন অভিমুখে মিছিলের কর্মসূচি ছিল আন্দোলনকারী জনতার। মিছিল শুরু হওয়ার একঘণ্টা আগে গণভবনে আসেন সেনা, বিমান ও নৌবাহিনীর প্রধান এবং পুলিশের মহাপরিদর্শক। শেখ হাসিনাকে সেনাপ্রধান বলেন, সেনাবাহিনীকে জনবিক্ষোভ প্রতিরোধ করার যে আহ্বান জানিয়েছেন তিনি, তা পালনে তার সেনারা অক্ষমতা প্রকাশ করেছে; কারণ পরিস্থিতি পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণের বাইরে।প্রথমদিকে এই পরামর্শ মানতে একেবারেই নারাজ ছিলেন শেখ হাসিনা।
তাকে বোঝাতে ব্যর্থ হয়ে তার ছোটবোন শেখ রেহানাকে আসন্ন বিপদ সম্পর্কে বলেন সেনাপ্রধান এবং শেখ হাসিনাকে বোঝানোর অনুরোধ জানান।কিন্তু তিনিও ব্যর্থ হওয়ার পর শেখ হাসিনার ছেলে সজীব ওয়াজেদ জয়ের সঙ্গে যোগাযোগ করেন সেনাপ্রধান। জয়ের সঙ্গে কথা বলার পর দেশত্যাগে সম্মত হন শেখ হাসিনা। সেসময় নিরাপদে গণভবন থেকে বের হওয়ার জন্য তাদের হাতে সময় ছিল এক ঘণ্টারও কম।প্রতিবেদনে বলা হয়, ঊর্ধ্বতন সামরিক কর্মকর্তাদের মধ্যকার অনলাইন বৈঠকের বিশদ বিবরণ এবং শেখ হাসিনার কাছে দেওয়া বার্তা আগে প্রকাশিত হয়নি।
ওই বৈঠক আর বার্তায় ফুটে উঠেছিল, তিনি সেনাবাহিনীর সমর্থন হারিয়েছেন।এসব বিষয়ের ব্যাখ্যা থেকে বোঝা যায়, হাসিনার ১৫ বছরের শাসনকালে তিনি ভিন্নমত খুব কমই সহ্য করেছেন। গত সোমবার তিনি বাংলাদেশ থেকে ভারতে পালিয়ে যাওয়ার পর তার এমন বিশৃঙ্খল শাসনকাল আকস্মিকভাবে শেষ হয়ে গিয়েছিল।সে সময়েই তার দেশত্যাগের পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়।সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে সেফ এক্সিট দেওয়া কি ঠিক ছিল? নাকি তাকে দেশে রেখে বিচার করা উচিত? অনেকের মনেই রয়েছে এমন প্রশ্ন। কানাডাভিত্তিক বাংলা সংবাদমাধ্যম সিটিজেন টেলিভিশনের সঙ্গে আলাপচারিতায় এ প্রশ্নের উত্তর দেন সেনাপ্রধান ওয়াকার-উজ-জামান।
>>
>> সম্প্রতি নাগরিক টেলিভিশনের সঙ্গে টেলিফোনে আলাপচারিতায় সেনাপ্রধান বলেন, রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে আলোচনা করছিলাম। তখন জানতে পারি শেখ হাসিনা চলে যাচ্ছেন। কিন্তু তিনি যে দেশ ছাড়ছেন তা জানতাম না। আমি মনে করি, দেশে থাকলে শেখ হাসিনার জীবন ঝুঁকির মধ্যে পড়তে পারতো।
একটি বিচার বহির্ভূত হত্যাকাণ্ড হোক, এটি কেউ চাইবে না। এটি নিশ্চয়ই কাম্য নয়।তিনি বলেন, সবাই একসাথে কাজ করলে দেশ সংস্কার করা সম্ভব হবে। একটি সুন্দর গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ায় যেতে পারব। সেনাবাহিনীও সরকারের সাথে রয়েছে, কাজ করছে। সেই লক্ষ্যে আমাদের যেতে হবেই, কারণ এই কার্যক্রমকে অর্ধেক সম্পন্ন অবস্থায় রাখা যাবে না। এই লক্ষ্য থেকে ফিরে যাওয়ার সুযোগ নেই।জনগণের উদ্দেশে তিনি বলেন, অনেকেই গুজব ছড়াচ্ছেন। সত্যের সাথে মিথ্যার মিশ্রণ ঘটিয়ে বিভিন্ন ধরনের সংবাদ উপস্থাপন করা হয়। ফলে মানুষ ভুল ধারণা পায়।যা সমীচীন নয়। এ সময় জনগণকে সত্য সংবাদ জানাতে এবং ধৈর্য ধারণ করারও আহ্বান জানান সেনাপ্রধান ওয়াকার-উজ-জামান।
>>
>> ১৬ বছরের জগাখিচুড়ি ১৬ দিনে সমাধান হবে না মন্তব্য করে তিনি আরও বলেন, সমস্যা ১৬ মাসে মেটানো গেলেও ভালো। কথায় আছে Rome wasn’t built in a day, but they were laying bricks every hour.আমি মোঃ নাসির মনে করি একটি প্রক্রিয়ার গতি বাড়ানোর পরামর্শ দেওয়ার জন্য “রোম একদিনে তৈরি হয় না”
প্রকাশ করার একটি সঠিক বিপরীত উপায় হতে পারে: “মহান জিনিসগুলি দ্রুত ঘটতে পারে।” এটি এই ধারণার উপর জোর দেয় যে স্বল্প সময়ের মধ্যে উল্লেখযোগ্য অর্জনগুলি সম্পন্ন করা যেতে পারে। আরেকটি বিকল্প হতে পারে: “কিছু অগ্রগতি একদিনে করা যেতে পারে।” এটি বোঝায় যে যখন বড় প্রকল্পগুলি সময় নেয়, অবিলম্বে পদক্ষেপগুলি যথেষ্ট অগ্রগতির দিকে নিয়ে যেতে পারে।আমলাতন্ত্র-পুলিশ ইত্যাদি সব দিকেই সমস্যা রয়েছে। এই সরকারকে সময় দিতে হবে। তারা কাজ করছে। অধৈর্য হলে হবে না।