কবিতা “রাতুলরা ঘরে ফেরে না”
ইন্দ্রজিৎ বিশ্বাস
রাতুল ফেরেনি ঘরে,ফিরতে ছিল মানা,
উদয়-বিদায়ের বিস্তর ফারাক-
মাসের পাঁচ খানা।
বিদায় কালে অনেক আদর,মুখ্য সমাবেশে
সবার মুখে রাতুল-রাতুল-
রাতুল শবাধারে।
(০২)
রাজার মতো ফিরলো বাছা,চার বেহারার কাঁধে
সঙ্গী সাথি হাজার দুয়েক-
নিথর রাজার শেষে।
মাতৃভূমির শোধ করে ঋণ, ঘরে ষোল আনা
অস্ত যাবে তরুন সূর্য-
মায়ের ছিল না জানা।
( ০৩)
হাতের শাঁখা নোয়াপলা,এয়োস্ত্রীর বেশ
দেশের ভিটায় খুইয়েছে জায়া-
বুকের জমিন দেশ।
রাতুল ফেরেনি ঘরে,ফিরতে ছিল মানা
কর্তব্যে ছাড়তে হতো-
অনেক লেনাদেনা।
( ০৪)
বন্দোবস্তের নিয়ম কঠিন, অনুশাসনের ভয়,
হৃদয় ভরে গাইতো সে-
দেশের জমির জয়।
ফুটতো যখন পাহাড়ি গাছে, সবুজ কচি পাতা
বুকের ভিতর উঁকি দিত-
তনুজ স্নেহের ব্যথা।
( ০৫)
তুহিন গুহায় সজাগ জীবন মুহু্রমুহু শঙ্কিল পথে
বারুদের গন্ধ সোহাগ দিত-
বনিতার মতো এসে।
দেখতো তখন চোখের পাতায়, জীবন মরণ সুখ
কোন ঘরেতে ডুবলো সূর্য-
কার ভাঙলো বুক।
(০৬)
সিঁথির সিঁদুর কে মোছে’ছে, জোয়ার ভরা গাঙে
কার সন্তান নিঃস্ব হলো-
কোন বিধবার সনে।
তুষার ভরা চাঁদের আলো,সবই লাগতো কাঁচা
মরণ পথে পণের জীবন-
লড়াই করে বাঁচা।
( ০৭)
বাস্তভূমি গাঁয়ের ঘ্রাণ, পড়তো মনে বেশ
সকল পাওয়া’র আগে চাওয়া-
রক্ষা করা দেশ।
মাসের শেষে গোনা টাকা,হিসাব ভরা পাতা
কোন টাকাতে মায়ের ঔষধ-
সবই থাকতো পাকা।
(০৮)
আজকে রাতুল রথ ছেড়েছে, শেষ বিদায়ের পথে
সকল বোঝা চাপিয়ে দিয়ে-
দুই বিধবার কাঁধে।
পত্নীর শাড়ির আঁচল জুড়ে,প্রতিক্ষার গিট বাঁধ সব দিন
অগ্নি নিশান করে রাতুল-
মিটালো কেমন ঋণ!