ঢাকা | ডিসেম্বর ২৩, ২০২৪ - ১১:০২ অপরাহ্ন

অবাধে নিয়ম বহির্ভূত বহুতলা বিশিষ্ট ভবন গড়ে উঠছে ব্রাহ্মণবাড়িয়া শহরে।

  • দৈনিক নবোদয় ডট কম
  • আপডেট: Friday, December 18, 2020 - 3:32 pm
  • News Editor
  • পঠিত হয়েছে: 111 বার

ফয়সাল আহমেদ,ব্রাহ্মণবাড়িয়া প্রতিনিধিঃব্রাহ্মণবাড়িয়ার ৭৫ শতাংশ বহুতল ভবনের বৈধ অনুমোদন নেই। ভবন নির্মাণে সরকারি বিধি না মেনেই মালিকেরা নিজেদের ইচ্ছা মতো গড়ে তুলেছেন আবাসিক ও বাণিজ্যিক ভবনগুলো। তবে জেলা প্রশাসন বলছে, সরকারি আদেশ মানতে বাধ্য করা হবে অবৈধ ভবন মালিকদের।

১৯৬৮সালে ব্রাহ্মণবাড়িয়া পৌরসভা প্রতিষ্ঠিত হয়। দেড়শত বছরের পুরানো প্রথম শ্রেণির এই পৌরসভায় ভবন নির্মাণের ক্ষেত্রে অনেকেই মনগড়া ভাবে কাজ করছেন। পৌরসভা থেকে ৬ তলা বিশিষ্ট ভবনের অনুমোদন নিয়েও অনেক ভবন মালিক কাঠামো পরিবর্তন করে নির্মাণ করছেন সুউচ্চ ভবন। এতে একদিকে যেমন সরকার রাজস্ব থেকে বঞ্চিত হচ্ছে তেমনি বড় ধরনের দুর্ঘটনার আশংকা করা হচ্ছে।

অনুমোদন বিহীন ভাবে গড়ে উঠছে পৌর এলাকার পাড়া মহল্লাসহ অলি গলিতে এসব বহুতল ভবন। আবার কোন কোন ক্ষেত্রে দুর্বল ভিত্তির উপরেই গড়ে তোলা হচ্ছে ভবন।অভিযোগ রয়েছে, সংশ্লিষ্টদের ম্যানেজ করে অনুমোদন বিহীন এসব ভবন গড়ে তোলা হচ্ছে। তবে কর্তৃপক্ষ বলছে এই বিষয়ে ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে।

সরেজমিনে খোঁজ নিয়ে জানা যায়, পৌর কর্তৃপক্ষ ছয় তলা পর্যন্ত ভবন নির্মাণ কাজের অনুমোদন দিয়ে থাকে। এর উপরে ভবন নির্মাণের জন্য জেলা বিল্ডিং নির্মাণ কমিটি সহ সংশ্লিষ্ট বিভাগের অনুমোদন নিতে হয়। তবে এসব নিয়ম-নীতির তোয়াক্কা না করে শহরের কাউতলী,দাতিয়ারা,পুনিয়াউট, ফুলবাড়ীয়া, বাগানবাড়ী,মধ্যপাড়া, হালদার পাড়া, পাইকপাড়াসহ বিভিন্ন এলাকায় আবাসিক ও বাণিজ্যিক ভাবে অবাধে নিয়ম বহির্ভূত বহুতল বিশিষ্ট ভবন গড়ে উঠছে। তবে কি পরিমাণ ভবন রয়েছে তার কোনো সঠিক তথ্যও নেই সংশ্লিষ্টদের কাছে।

কথা হয় স্থানীয় কিছু এলাকাবাসির সাথে কথা বলে জানা যায় , অলিতে গলিতে অপ্রশস্ত সড়কের

পাশে জায়গা না রেখে যেভাবে ভবন নির্মাণ করা হচ্ছে এতে যে কোনো বড় ধরনের দুর্ঘটনার পর উদ্ধার কার্যক্রম কঠিন হয়ে পড়বে। এছাড়াও ভূমিকম্প প্রবন ও গ্যাস সমৃদ্ধ এলাকায় এসব সুউচ্চ ভবন নির্মিত হওয়ায় ঝুঁঁকিও আতংকে রয়েছে সাধারণ মানুষ। রাস্তার পাশে বহুতল এসব ভবন নির্মাণ করা অবস্হায় রাস্তায় চলাচলরত পথচারীদের নিরাপওার বিষয়টি অনেকে মানছেন না।

ব্রাহ্মণবাড়িয়া পরিবেশ অধিদপ্তরের উপপরিচালক মো.নূরুল আমিন বলেন, ইতিমধ্যে আমরা কিছু ভবনকে সার্ভে করেছি।আরো কি পরিমাণ ভবন রয়েছে তা আমরা সার্ভে করছি। যারা আইনকে অমান্য করে বহুতল ভবন নির্মাণ করছেন তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

ব্রাহ্মণবাড়িয়া পৌর মেয়র নায়ার কবির বলেন, আমরা পৌর আইনে ছয়তলা পর্যন্ত ভবনের অনুমোধন দিয়ে থাকি।তারা ছয়তলা পর্যন্ত ভবন নির্মাণ করেন। কিন্তু ইদানিং লক্ষ্য করা যাচ্ছে কিছুৃ কিছু এলাকায় ভবনের ক্ষেত্রে পৌর আইন লঙ্গন করে উচ্চ ভবন তৈরি করা হচ্ছে। কেউ যদি নিয়ম-বহিভূত ভাবে ভবনের মালিকদের কাছ থেকে কোনরকম সুবিধা নেন সেক্ষেএে অবশ্যই ব্যবস্হা নেওয়া হবে।

ব্রাহ্মণবাড়িয়া ফায়ার সার্ভিসের এর উপ-সহকারী পরিচালক মোঃ মোস্তফা মোহসীন বলেন, এখানে বহুতল ভবনে অগ্নি প্রতিরোধ ব্যবস্থা খুবই দূর্বল। ভবনের অগ্নি নিরাপদ ব্যবস্থা আরো জোরদার করতে হবে না হলে ঝুঁকি থেকে যায়।

এ বিষয়ে জেলা প্রশাসক হায়াত-উদ-দোলা খান বলেন, আমরা লক্ষ করছি পৌরসভা থেকে ৭৫ফুট ভবনের অনুমোদন নিয়ে অনেকে আইন ভঙ্গ করে উচুঁ ভবন তৈরি করছেন। পৌরসভাকে ইতিমধ্যেই আমরা চিঠি দিয়েছি যারা তাদের অনুমতি নিয়ে শর্তভঙ্গ করছে, তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে। কেউ যদি ৭৫ ফুটের উপরে উচূঁ ভবন নির্মাণ করতে চান, তাহলে তাকে অবশ্যই জেলা বিল্ডিং কনস্ট্রাকশন কমিটির অনুমোদন নিতে হবে । যারা আইন ভঙ্গ করে উচূঁ ভবন নির্মাণ করছেন ইতিমধ্যে শনাক্ত করে তাদের বিরুদ্ধে ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করেছি ।