ঢাকা | ডিসেম্বর ২৩, ২০২৪ - ১০:১৫ অপরাহ্ন

আল্লামা শাহ আহমদ শফীর রহ. এর  মৃত্যু নিয়ে মিথ্যাচার আলেম-উলামা ও ছাত্রদের বিরুদ্ধে  মামলার প্রতিবাদে সাংবাদিক সম্মেলন

  • দৈনিক নবোদয় ডট কম
  • আপডেট: Wednesday, December 23, 2020 - 6:13 pm
  • News Editor
  • পঠিত হয়েছে: 100 বার

সুমন পল্লব হাটহাজারীচট্টগ্রাম ঃঃ প্রতিনিধি
আল্লামা শাহ আহমদ শফীর রহ. এর স্বাভাবিক মৃত্যু নিয়ে মিথ্যাচার আলেম-উলামা ও ছাত্রদের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রমূলক মামলা দায়েরের প্রতিবাদে সাংবাদিক সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়েছে।

গতকাল বুধবার আল-জামিয়াতুল আহলিয়া দারুল উলূম মঈনুল ইসলাম হাটহাজারী ( বড় মাদ্রাসা) মিলনায়তনে দারুল উলূম মুঈনুল ইসলাম হাটহাজারী মাদ্রাসা ও হেফাজত ইসলাম বাংলাদেশ এর ব্যবস্থাপনা এ সাংবাদিক সম্মেলন আয়োজন করেন।

সাংবাদিক সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন হেফাজত ইসলাম বাংলাদেশের বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিষয়ক সম্পাদক ড. নুরুল আবছার আল আহাজারী। লিখিত বক্তব্যে তিনি বলেন, বাংলাদেশের সর্ববৃহৎ অরাজনৈতিক ধর্মীয় সংগঠন হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশের আমীর ছিলেন আল্লামা শাহ আহমদ শফী।

তিনি হাটহাজারী মাদরাসাসহ বাংলাদেশের সর্বস্তরের কওমী মাদরাসা সমূহের মুরুব্বি ও অভিভাবক ছিলেন। তার ইন্তিকালে মাদরাসার সকল শিক্ষক, ছাত্র ও কর্মকর্তাবৃন্দ গভীর শোকাহত বলে উল্লেখ করেন। সংবাদ সম্মেলনে হযরতের দারাজাত বুলন্দির জন্য দেশবাসীর কাছে দুআ কামনা করা হয়। আল্লাহ তাআলা হযরতকে জান্নাতের সুউচ্চ মাকাম দান করুন।

মাদরাসার তৎকালীন শিক্ষাপরিচালক আল্লামা মুফতী নূর আহমদ দা.বা. কে পাশকাটিয়ে সহকারি শিক্ষাপরিচালক মাওলানা আনাস মাদানী দীর্ঘদিন থেকে ছাত্রদের নানাভাবে হয়রানি করে আসছিলো। সে একক সিদ্ধান্তে ছাত্রদের ভর্তি ফরম এবং দাওরায়ে হাদিস ছাত্রদের বোর্ড পরীক্ষার প্রবেশপত্র আটকে রাখে। অনেক ছাত্রদের বোর্ডিং এর খাবার এবং আবাসিক সিট অন্যায়ভাবে বাতিল করে।

তার অনিয়ম ও স্বেচ্ছাচারি কর্মকান্ডে অতিষ্ঠ হয়ে আল্লামা আহমদ শফি রহ. এর ইন্তিকালের দু’দিন পূর্বে ১৬ সেপ্টেম্বর ২০২০ ইং তারিখে সর্বস্তরের ছাত্ররা বিক্ষোভে ফেটে পড়ে। বিক্ষুদ্ধ ছাত্ররা তাদের সুনির্দিষ্ট দাবি দাওয়া তৎকালীন মুঈনে মুহতামিম আল্লামা শেখ আহমদ সাহেবের মাধ্যমে আল্লামা শাহ আহমদ শফি রহ. নিকট পেশ করেন।

তিনি ঘটনার বিষয় অবহিত হয়ে শূরা আহ্বান করে মাওলানা আনাস মাদানীকে স্থায়ীভাবে বহিষ্কার করেন এবং ছাত্রদের দাবি মেনে নেয়ার ঘোষণা দেন। ছাত্রদেও অন্যান্য সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নে গত ১৯ সেপ্টেম্বর পুনরায় শূরার অধিবেশন আহ্বান করেন। এ ঘোষণার পর মাদরাসায় শান্তিপূর্ণ পরিবেশ ফিরে আসেন। এরপর ১৬ সেপ্টেম্বরের পরদিন ১৭ সেপ্টেম্বও শূরার সদস্যদের সিদ্ধান্তকে অমান্য করে মাওলানা আনাস মাদানী অনির্দিষ্ট কালের জন্য মাদরাসা বন্ধ করে দেয়ার পায়তারা করলে, পুনরায় ছাত্ররা ব্যপকভাবে বিক্ষুদ্ধ হয়ে ওঠে।

তখন আল্লামা শাহ আহমদ শফি রহ. পুনরায় শূরা আহ্বান করেন। সারা দিন নানা উদ্বেগ উৎকন্টার পর বা’দে মাগরিব উপস্থিত শূরা সদস্যগণ আল্লামা আহমদ শফি রহ. সহ মাদরাসা সিনিয়র শিক্ষকদের সাথে বৈঠকে বসেন। ছেলে মাওলানা আনাস মাদানীর দীর্ঘদিনের স্বেচ্ছচারিতা, অনিয়ম, ছাত্র-শিক্ষকদের প্রতি জুলুম-নির্যাতনসহ নানা দূর্ণীতি হযরতের সামনে স্পষ্ট হলে, তিনি বাকরুদ্ধ হয়ে পড়েন।

যার ফলে তিনি আনাস মাদানীর উপর ক্ষুদ্ধ হয়ে স্বেচ্ছায় স্বজ্ঞানে মাদরাসার মহাপরিচালকের পদ থেকে পদত্যাগ করে শূরার নিকট ক্ষমতা হস্থান্তর করেন। কিন্তু শূরাসদস্যগণ তা গ্রহণ করতে রাজি হননি। পদত্যাগে হযরতেরে দৃঢ় সিদ্ধান্তের কারণে শূরা সদস্যগণ হযরতকে সদরে মুহতামিম হিসেবে মনোনীত করেন। ইতোমধ্যে আল্লামা আহমদ শফি রহ. অসুস্থতাবোদ করলে শূরার সদস্য এবং সিনিয়র আসাতিযায়ে কেরামের উপস্থিতিতে হযরতকে হাসপাতালে নেয়ার ব্যবস্থা করেন এবং চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করেন।

১৮ সেপ্টেম্বও তারিখে বেলা ১১ টায় জামিয়ার মুহাদ্দিস এবং বর্তমান মজলিসে ইদারীর সদস্য মাওলানা ইয়াহইয়া সাহেবকে মাওলানা আনাস মাদানী ফোন করেন। ফোনে মাওলানা ইয়াহইয়া সাহেব হযরতের খুজখবর নেন। আনাস মাদানী মাওলানা ইয়াহইয়া সাহেবকে বলেন, আব্বা এখন কিছুটা ভালোর দিকে।

ঐ দিন বিকালে প্রতিবারের ন্যায় আরও উন্নত চিকিৎসার জন্য হযরতকে ঢাকার আজগর আলী হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। হাসপাতালে ভর্তি করার পর সন্ধা ৬.২০ মিনিটে তিনি ইন্তিকাল করেন। তার ইন্তিকালে মহামান্য রাস্ট্রপতি, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী, বিরুধী দলীয় নেতৃবৃন্দসহ আন্তর্জাতিক ইসলামিক স্কলারগণ শোকবার্তা প্রদান করেন এবং জাতীয় সংসদে সর্বসম্মতিক্রমে শোক প্রস্তাব গৃহিত হয়। এত স্পষ্টপ্রতিয়মান হয় যে আল্লামা শাহ আহমদ শফি রহ. এর মৃত্যু স্বাভাবিক ছিলো। কিন্তু আমরা লক্ষ করছি যে, আল্লামা শাহ আহমদ শফি রহ. এর স্বাভাবিক মৃত্যু নিয়ে একটি কুচক্রি মহল ষড়যন্ত্র মূলকভাবে নির্জলা মিথ্যাচার করে যাচ্ছে।

হযরতের ইন্তিকালের তিন মাস পর ঐ কুচক্রি মহল তাঁর মৃত্যুকে অস্বাভাবিক আখ্যা দিয়ে একটি মিথ্যা মামলাও দায়ের করে। দায়ের কৃত মামলাটি ‘রাজনৈতিক চক্রান্ত এবং দেশের স্থিতিশীল অবস্থা বিনষ্ট করার দুরভিসন্ধি বলে সাংবাদিক সম্মেলন আয়োজনকারীরা মনে করেন। একটি চিহ্নিত দালালগোষ্ঠী আল্লামা শাহ আহমদ শফীকে জিম্মি করে হাটহাজারী মাদরাসায় ব্যক্তিতন্ত্র কায়েম করে রেখেছিল। সেখানে নানা অনিয়ম এবং ছাত্রদের ওপর অব্যাহত হয়রানি ও নির্যাতন চালিয়ে তাদের জীবনকে অতিষ্ঠ করে তোলা হয়েছিল।

এছাড়া বেশ কিছু স্বনামধন্য শিক্ষককে মাদরাসা থেকে অন্যায়ভাবে চাকুরিচ্যুত করে বের করে দেয়া হয়েছিল, যা ছিল অত্যন্ত অবমাননাকর। তাদের অনিয়ম ও ক্রমাগত হয়রানিতে অতিষ্ঠ হয়ে হাটহাজারি মাদরাসার ছাত্ররা জুলুমতন্ত্রের বিরুদ্ধে তাদের দাবি-দাওয়া নিয়ে আন্দোলনে নামতে বাধ্য হয়েছিল। আল্লামা শাহ আহমদ শফীর স্বাভাবিক মৃত্যুর বিষয়টি তাঁর পরিবার ও মাদরাসা কর্তৃপক্ষ সুস্পষ্টভাবে দেশবাসীকে জানিয়ে ছিলেন। অনেক আগ থেকে আল্লামা শফীর শারীরিক অবস্থা এতই নাজুক ছিল যে, বেশ কয়েকবারই তার মৃত্যুর গুজব ছড়িয়ে পড়েছিল। সুতরাং, আল্লামা আহমদ শফীকে হত্যার অভিযোগ তুলে যারা মামলা করেছে, তারা একটি চিহ্নিত দালালগোষ্ঠী। তারা দেশের আলেম সমাজ ও সচেতন তৌহিদি জনতার কাছে প্রত্যাখ্যাত। মামলায় তথাকথিত হত্যার যেসব কারণ উল্লেখ