সখীপুরে বিদ্যুৎ লাইনের খুঁটি স্থাপনে আইনজীবীর বাধা,
শরিফুল ইসলাম বাবুল,সখীপুর(টাঙ্গাইল)প্রতিনিধি:টাঙ্গাইলের সখীপুরে সড়কের পাশ দিয়ে বিদ্যুৎ লাইনের কাজে বাধা দেওয়ার প্রতিবাদে এক আইনজীবীর বিরুদ্ধে অভিযোগ দিয়েছে এলাকাবাসী। গত সোমবার দুপুরে উপজেলার কালিয়া ধলীপাড়া ও সাড়াসিয়া এলাকার লোকজন ইউএনও’র কার্যালয়ে এসে ওই আইনজীবীর বিরুদ্ধে এ লিখিত অভিযোগ দেন। আইনজীবী জোবায়ের হোসেন সাড়াসিয়া গ্রামের বাসিন্দা। জোবায়ের টাঙ্গাইল জজ কোর্টে আইনজীবী পেশায় কর্মরত রয়েছেন।
সরেজমিনে খোঁজ নিয়ে জানা যায়, কালিয়া ঘোনারচালা-জিতেশ্বরী মাদরাসা সড়কের এক পাশ দিয়ে বিদ্যুতের এসটি লাইনের খুঁটি স্থাপনের কাজ চলছে। ওই লাইনের ২৫০ কেভি ট্রান্সফরমারের আওতায় চেয়ারম্যান বাড়ি মোড়ে গড়ে উঠা ‘ধলীপাড়া বাজার’ সহ শতাধিক আবাসিক ও বাণিজ্যিক মিটার চলমান রয়েছে। লো-ভোল্ডেজের কারণে ওই এলাকায় গড়ে উঠা গবাদি পশু ও পোলট্রি খামার, গভীর নলকূপসহ কৃষকরা ব্যাপক ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। ফলে বিদ্যুৎ উন্নয়নের আওতায় এসটি লাইনের প্রকল্পটি বাস্তবায়নে বিদ্যুৎ বিভাগ খুঁটি স্থাপনের কাজ শুরু করে। ওই আইনজীবী ও তার পরিবারের লোকজনের বাররার বাঁধার কারণে প্রকল্পটি বাস্তবায়ন হচ্ছে না বলে স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে।
বিদ্যুৎ বিভাগের ময়মনসিংহ জোনের বিদ্যুৎ বিতরণ ব্যবস্থা টাঙ্গাইল-২ এর আওতায় বাস্তবায়ন প্রকল্প কনসালটেন্ট শাহিনুর আলম বলেন, এক বছর আগে ওই এলাকায় বিদ্যুতের খুঁটি স্থাপন করা হয়। স্থানীয় এক আইনজীবী সেই খুঁটি তুলে ফেলতে বাধ্য করে। অন্য জায়গা দিয়ে লাইন নেওয়ার অনুরোধ করে। পরে সেই জায়গা দিয়েও লাইন স্থাপন করতে দিচ্ছে না। বর্তমানে খুঁটি স্থাপনের কাজ বন্ধ রয়েছে।
ভুক্তভোগী আসাদ আকন্দ বলেন, বিদ্যুতের খুঁটি স্থাপন না করায় বিদ্যুৎ সরবরাহ পাচ্ছি না। কৃষি পণ্য উৎপাদনের সেচ ব্যাহত হচ্ছে। প্রচন্ড গরমে খামারিরাও ঝুঁকিতে রয়েছে। বিষয়টি উপজেলা চেয়ারম্যান মিমাংসার জন্য এলে সে অসৌজন্যমূলক আচরণ করে। এক পর্যায়ে আমাকে মারার জন্যও এগিয়ে আসে।
জানতে চাইলে জোবায়ের হোসেন বলেন, আমার ওই জায়গাটি সেটেলমেন্ট রেকর্ডভূক্ত। ওই জায়গার ওপর দিয়ে বিদ্যুতের লাইন দেওয়া হলে আমার অনেক গাছপালা ও আবাদি জমির ক্ষতি হয়, এজন্য অন্য জায়গা দিয়ে লাইনটি নিতে বলা হয়েছে। তবে এ নিয়ে যারা অভিযোগ করেছেন, তাদের বিরুদ্ধে ফৌজদারি আইনে মামলা করবো।
সখীপুর বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের (পিডিবি) প্রধান প্রকৌশলী আবু বকর তালুকদার বলেন, আমি এখানে নতুন এসেছি। প্রকল্পের কাজটি অনেক আগেই শুরু হয়েছে। তবে ওই এলাকার খোঁজ-খবর নিয়েছি। কিন্তু এ বিষয়ে লিখিত কোনো অভিযোগ পাইনি।
উপজেলা চেয়ারম্যান জুলফিকার হায়দার কামাল বলেন, আমি ওই এলাকায় গিয়েছি। অভিযুক্তদের অসৌজন্যমূলক আচরণ খুবই দুঃখজনক। তবে এলাকার মানুষ বিদ্যুৎ না পাওয়ায় খুবই কষ্টে আছে। বিষয়টি দ্রুত সমাধান প্রয়োজন।
উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) ফারজানা আলম অভিযোগ পাওয়ার সত্যতা স্বীকার করে জানান, বিষয়টি নিরসনের জন্য ওই ইউনিয়নের দায়িত্বপ্রাপ্ত প্রশাসককে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে।
উপজেলা সমাজসেবা কর্মকর্তা ও কালিয়া ইউনিয়ন পরিষদের দায়িত্বপ্রাপ্ত প্রশাসক মো. মনসুর আহমেদ জানান, আইনজীবী একটি খুঁটিও স্থাপন করতে দেবে না উল্লেখ করে তিনি আমাকে মামলার হুমকি দিয়েছেন। বিষয়টি ইউএনও মহোদয়কে জানিয়ে দিয়েছি।