চোখের সামনে বাসচাপায় ঝরল সন্তান-শ্বশুরের প্রাণ, মূর্ছা যাচ্ছেন মরিয়ম
চট্টগ্রামে শাশুড়ী বিবি আনজেরাকে চিকিৎসা করিয়ে বাসযোগে ভোলার গ্রামের বাড়ি ফিরছিলেন বিবি মরিয়ম। সঙ্গে ছিলেন শ্বশুর নাছির মোল্লা ও চার বছরের শিশু কন্যা মিম। কিন্তু পথেই শ্বশুর ও শিশুকন্যাকে হারিয়েছেন মরিয়ম।
লক্ষ্মীপুর সদর উপজেলার হাজিরপাড়া এলাকায় একটি বাসচাপায় প্রাণ গেছে এ দুইজনের।
বাড়ির বদলে তাদের ঠাঁই হয়েছে লক্ষ্মীপুর জেলা সদর হাসপাতালের মর্গে।
সোমবার (৮ জুলাই) সকাল ৯টার দিকে লক্ষ্মীপুর-নোয়াখালী মহাসড়কে যমুনা বাসের চাপায় ওই দুজনের প্রাণ ঝরে।
শ্বশুর ও কন্যাকে চোখের সামনে প্রাণ হারাতে দেখে মূর্ছা যাচ্ছেন বিবি মরিয়ম। আর স্বামী ও নাতনিকে হারিয়ে বাকরুদ্ধ বৃদ্ধ বিবি আনজেরা।
এ পরিবারের বাড়ি ভোলা জেলার দিঘলদী ইউনিয়নে। মরিয়মের স্বামী মো. ফারুক চট্টগ্রামে থাকেন। রিয়াজ উদ্দিন বাজারে কাঁচামালের আড়তের শ্রমিক তিনি। এ দম্পতির এক ছেলে ও এক মেয়ে। মেয়েকে হারিয়ে ফেলেছেন৷ ১২ বছরের ছেলে আয়ান একটি মাদরাসায় পড়ে।
কাঁদতে কাঁদতে বিবি মরিয়ম জানান, অসুস্থ শাশুড়ীকে চট্টগ্রামে চিকিৎসা করিয়ে বাড়ি ফিরছিলেন। সোমবার ভোর ৫টার দিকে তারা শাহী পরিবহনের বাসে করে লক্ষ্মীপুরের মজুচৌধুরীর হাটের উদ্দেশ্যে রওনা হন। সেখান থেকে লঞ্চযোগে ভোলায় যাওয়ার কথা ছিল। তিনি, শাশুড়ী, শ্বশুর ও তার শিশুকন্যা গাড়িতে ছিলেন। গাড়িটি লক্ষ্মীপুরের হাজিরপাড়া সংলগ্ন একটি পেট্রোল পাম্পে তেল নেওয়ার জন্য দাঁড়ায়। এসময় যাত্রীরা গাড়ি থেকে নামেন।
মরিয়ম জানান, তার শ্বশুর নাছির মোল্লা নাতনি মিমকে সঙ্গে করে গাড়ি থেকে নেমে রাস্তা পার হয়ে অন্য পাশে যান। ফেরার সময় একটি বাস তাদের চাপা দেয়। সেখানেই মিম ও হাসপাতালে নেওয়ার পর নাছির মোল্লার মৃত্যু হয়।
বিবি মরিয়ম হাউমাউ করে বলেন, ‘আমার চোখের সামনেই এ ঘটনা। আমি কীভাবে এ শোক সহ্য করবো?’
চন্দ্রগঞ্জ হাইওয়ে পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) রুহুল আমিন লেবন,বলেন রাস্তা পারাপারের সময় দুর্ঘটনাটি ঘটেছে। নিহত দুইজনের মরদেহ সদর হাসপাতালের মর্গে রাখা হয়েছে। ঘাতক বাসটি আটক করা হয়েছে। তাদের পরিবারের অন্য সদস্যরা আসছেন, তাদের কাছে মরদেহ বুঝিয়ে দেওয়া হবে।