তানোরে কুড়ি পয়েন্টে অবৈধ মাটি বানিজ্যে
সোহানুল হক পারভেজ রাজশাহী বিভাগীয় প্রধান : রাজশাহীর তানোরের কলমা ও তালন্দ ইউনিয়নের বিভিন্ন এলাকায় প্রায় কুড়ি পয়েন্টে অবৈধ মাটি বাণিজ্য করে সরকারি পাকা-কাঁচা রাস্তা নষ্ট ও পরিবেশ দুষণের অভিযোগ উঠেছে।স্থানীয়দের অভিযোগ রাজনৈতিক নেতা ও প্রশাসনের একশ্রেণীর কর্মকর্তাকে আর্থিক সুবিধা দিয়ে এসব অবৈধ মাটি বাণিজ্য করা হচ্ছে।
স্থানীয়রা জানান, ট্রাক্টরে কাদামাটি
পরিবহণ করায় নষ্ট হচ্ছে কোটি কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত সরকারি কাচা-পাকা রাস্তাঘাট। মাটিবাহী গাড়ির বেপরোয়া গতির কারণে ধুলোবালিতে অতিষ্ঠ পথচারিরা। এছাড়া প্রায়ই ঘটছে দুর্ঘটনা। অবাধে মাটি কাটায় কমছে কৃষি জমির পরিমাণ, বিনষ্ট হচ্ছে পরিবেশের ভারসাম্য।
অভিযোগ রয়েছে, স্থানীয় জনপ্রতিনিধি ও রাজনৈতিক নেতাদের ছত্রছায়ায় একশ্রেণির এক্সকেভেটর (ভেকু) ব্যবসায়ীরা চুক্তিভিত্তিকভাবে রাতারাতি কৃষি জমি গিলে খাচ্ছে। আর সমাজের কিছু অসাধু ব্যক্তির পকেট ভরতে গিয়ে রাস্তাঘাট নষ্ট হয়ে সরকারের কোটি কোটি টাকা নিমিষেই বানের জলে ভেসে যাচ্ছে। কৃষি ও পরিবেশবিদরা বলছেন, অবাধে পুকুর খননে উপজেলায় কৃষি জমির পরিমাণ
হ্রাস পাচ্ছে একই সঙ্গে অস্তিত্ব সংকটে পড়েছে খাল-বিলের প্রাণিকুল।
উপজেলার কলমা ইউপির বংশীধরপুর, কুসুমপুকুর,নয়টিপাড়া,বাউরী গ্রাম, বহড়া, শংকরপুর, মালবান্ধা,তানোর পৌর এলাকার কালীগঞ্জহাট, দাড়দহ, জুড়ানপুর,তালন্দ ইউপির মোহর এবং সরনজাই ও পাঁচন্দর ইউপির বিভিন্ন এলাকায় কৃষি জমির মাটি কেটে বিক্রি করা হচ্ছে বলে একাধিক সুত্র নিশ্চিত করেছে। ভেকুঁ দালাল জনৈক রাকিবুল ও রাশেদুল বলেন, সবাইকে ম্যানেজ করে মাটিকাটা হচ্ছে এসব নিয়ে পত্রিকায় খবর করে লাভ হবে না। তারা বলেন,বিএনপি নেতা সহীদুল ইসলামের মাধ্যমে ম্যানেজ পক্রিয়া করা হয়েছে।
এদিকে খোলা ড্রাম ট্রাক ও ট্রাক্টরে কৃষি জমির মাটি এনে বিভিন্ন জায়গা ভরাট করা হচ্ছে। মাটিবাহী গাড়ির কাদামাটিতে পাকা সড়কে কাদামাটি
পড়ে নষ্ট হচ্ছে। সেই কাদামাটি সরানোর কাজে শ্রমিকদের নিয়োজিত রেখেছেন ভেকু ব্যবসায়ীরা। কোদাল দিয়ে মাটি
সরাতে গিয়ে পাকা সড়কের পাথর ও উপরের প্রলেপ বিটুমিন উঠিয়ে ফেলা হচ্ছে। উপজেলার বংশীধরপুর এলাকার বাসিন্দা আফজাল হোসেন ও আফসার আলী বলেন, ভেকুর বিকট শব্দ ও ধুলাবালিতে বসবাস করা কঠিন হয়ে পড়েছে।
তারা বলেন,বিষয়টি কলমা ইউপির বিট অফিসার এসআই রুহুল সাহেবকে জানানো হলেও কোনো কাজ হয়নি। গত শুক্রবার তিনি এসে ভেঁকু দালালের সঙ্গে কথা বলে গেছেন,তার পরেও বন্ধ হয়নি মাটিকাটা। ভেকুঁ দালাল রাকিবুল বলেন,দারোগা এসেছিল তাকে বিএনপি নেতা সহীদুল ভাইয়ের মাধ্যমে ম্যানেজ করা হয়েছে।
এবিষয়ে উপজেলা প্রকৌশলী সাইদুর রহমান বলেন, রাস্তার বিটুমিনের শত্রু হচ্ছে কাদামাটি। নিয়ম না মেনে মাটি পরিবহন করায় রাস্তায় কাদামাটি পড়ে রাস্তাঘাট দ্রুত নষ্ট হচ্ছে।এবিষয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার (ইউএনও) মুঠোফোনে কল করা হলেও কল গ্রহণ না করায় তার কোনো বক্তব্য পাওয়া যায়নি।