সংবাদ সম্মেলনে দলের সমালোচনা নাকি পদত্যাগ! কী করতে যাচ্ছেন মেজর হাফিজ?
ঢাকা : বিএনপির দলিয় সিদ্ধান্তের বাহিরে গিয়ে ১৪ই ডিসেম্বর সোমবার হঠাৎ রাজধানীতে সরকার বিরোধী বিক্ষোভ করে অবস্থান করেন কিছু সংখ্যক নেতা-কর্মী। ফলে দলের দুই ভাইস-চেয়ারম্যান মেজর (অব.) হাফিজ উদ্দিন আহমেদ ও শওকত মাহমুদকে কারণ দর্শানোর নোটিশ দিয়েছে দলটি। এর মধ্যে ভাইস-চেয়ারম্যান শওকত মাহমুদ নোটিশের জবাব দিলেও আরেক ভাইস-চেয়ারম্যান মেজর (অব.) হাফিজ উদ্দিন আহমেদ জবাব দেননি তবে আজ শনিবার ১৯ ডিসেম্বর সংবাদ সম্মেলন করে জবাব দেওয়ার কথা জানিয়েছেন। আর এতেই শুরু হয়েছে কৌতুহল। কী বলবেন মেজর হাফিজ? তিনি কি দল থেকে পদত্যাগের ঘোষণা দেবেন? এমন মন্তব্যের শেষে নেই!
সাবেক পানিসম্পদ মন্ত্রী ও বর্তমানে বিএনপি’র ভাইস চেয়ারম্যান অবসরপ্রাপ্ত মেজর হাফিজ উদ্দিন আহমেদের এই সংবাদ সম্মেলন ঘিরে এরইমধ্যে রাজনৈতিক অঙ্গনে তৈরি হয়েছে নানা আলোচনা সমালোচনা। বিএনপির পক্ষ থেকে তাকে সংবাদ সম্মেলন না করতে বলা হলেও শেষ পর্যন্ত কী করবেন তিনি! তিনি কী দল থেকে পদত্যাগ করতে যাচ্ছেন! নাকি সমালোচনা করতে পারেন বিএনপির নেতৃবৃন্দের। ভাইস-চেয়ারম্যান হাফিজ উদ্দিন আহমেদ এর বিরুদ্ধে বিএনপি বা কি সিদ্ধান্ত নিতে পারে এম প্রশ্ন ঘুরপাক খাচ্ছে।
তবে বিএনপির ভাইস-চেয়ারম্যান হাফিজ উদ্দিন আহমেদ এর ঘনিষ্ঠ একটি সূত্র জানা যায়, হাফিজ উদ্দিনের কাছে দেওয়া নোটিশে ১১টি বিষয়ে জবাব চাওয়া হয়েছে। তিনি প্রতিটির জবাব তৈরি করছেন। এর মধ্যে ১৩ বছর আগের এক–এগারোর ভূমিকার কথাও রয়েছে। নোটিশের ভাষা হাফিজ উদ্দিনকে বেশ ক্ষুব্ধ করেছে। যেহেতু গণমাধ্যমকে জানিয়ে নোটিশ করা হয়েছে, তিনিও গণমাধ্যমকে জানিয়ে জবাব দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।
সংশ্লিষ্ট সূত্রের দাবি, গণমাধ্যমে প্রকাশ না করে শোকজ নোটিশ হাফিজ উদ্দিন এর কাছে পাঠাতে পারত দলটি তা না করে তথ্য সাংবাদিকদের মাধ্যমে গণমাধ্যমে প্রকাশ করায় ক্ষুদ্র হয়েছেন তিনি। এই দিকে শোকজ করা হলেও হাফিজ উদ্দিন এর সাথে আলোচনা চালিয়ে যাচ্ছে বিএনপির হাইকমান্ড। এ ছাড়া তার ঘনিষ্ঠজনদের সঙ্গে আলোচনা করেছেন বিএনপির সিনিয়র নেতারা।
এর আগে ১৪ ডিসেম্বর রাতে দলের সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী আহমেদের স্বাক্ষরে দলীয় শৃঙ্খলা বিরোধী কার্মকাণ্ডের অভিযোগ বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান হাফিজ উদ্দিনকে ৫ দিন ও শওকত মাহমুদকে ৭২ ঘণ্টার মধ্যে জবাব দিতে বলা হয়।
বিভিন্ন সময়ে দলের সর্বোচ্চ পর্যায় থেকে দায়িত্ব দেওয়া হলেও সেটা পালনে অপারগতা প্রকাশ করেন অবসরপ্রাপ্ত মেজর হাফিজ উদ্দিন। বিশেষ করে, জাতীয়তাবাদী কৃষক দলের মনিটরিংয়ের দায়িত্ব দেওয়া হলেও তিনি তা করতে সরাসরি অস্বীকৃতি জানান। এছাড়া সম্প্রতি একাধিকবার প্রকাশ্যে দলের হাইকমান্ডের বিরুদ্ধে সমালোচনামূলক বক্তব্য দিয়েছেন তিনি। একারণে তাকে শোকজ করা হয়েছে।
হাফিজ উদ্দিনকে পাঠানো নোটিশে বলা হয়েছে, ওয়ান-ইলেভেনের সময়ে দলকে বিভক্ত করে মহাসচিব হওয়া, বিভিন্ন সময়ে দলের সর্বোচ্চ পর্যায় থেকে দায়িত্ব দেয়া হলে সেটা করতে অপারগতা প্রকাশ করা বিশেষ করে কৃষক দলের মনিটরিংয়ের দায়িত্ব দেয়া হলেও তা করতে অপারগতা প্রকাশ করেন। এছাড়া বিভিন্ন সময়ে দলের জ্যেষ্ঠ নেতাদের অসম্মান করে বক্তব্য দিয়েছেন।