ময়মনসিংহে মাজারে হামলা–ভাঙচুরের ঘটনায় মামলা, আসামি দেড় হাজার
স্টাফ রিপোর্ট ময়মনসিংহ – ময়মনসিংহ কোতোয়ালি মডেল থানা সংলগ্ন প্রায় পৌনে ২০০ বছরের পুরোনো হজরত শাহ সুফি সৈয়দ কালু শাহ্ (রহ.) এর মাজারের সামা কাওয়ালি অনুষ্ঠানে হামলা ও মাজার ভাঙচুরের ঘটনায় থানায় মামলা দায়ের করা হয়েছে।
বৃহস্পতিবার (৯ জানুয়ারি) অজ্ঞাত পরিচয় দেড় হাজার জনকে আসামি করে কোতোয়ালি মডেল থানায় এ মামলাটি দায়ের করেন মাজারের অর্থ সম্পাদক মো. খলিলুর রহমান।
এর আগে গত বুধবার (৮ জানুয়ারী) দিবাগত রাতে ব্রহ্মপুত্র নদের পাড়ে অবস্থিত হজরত শাহ সুফী সৈয়দ কালু শাহ (রহ)–এর মাজার। মাজারে ১৭৯তম বার্ষিক ওরস উপলক্ষে সামা কাওয়ালি গানের আয়োজন করে ভক্তরা। সেই গানের আশরেই বুধবার (৮ জানুয়ারী) দিবাগত রাত ১১টার দিকে হামলা- ভাংচুরের ঘটনা ঘটলে এর একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়ে।এতে দেখা যায়, পাঞ্জাবি–পায়জামা ও টুপি পরা দুই শতাধিক মানুষ মাজারের অনুষ্ঠানে হামলা ও ভাঙচুর চালাচ্ছে। এ সময় মঞ্চ ও শতাধিক চেয়ার এবং সাউন্ড সিস্টেম ভাঙচুর করা হয়। এতে মাজারের বেশ কিছু অংশ গুঁড়িয়ে দেওয়াও হয়েছে।
মামলার বাদী খলিলুর রহমান বলেন, ‘শাহ সুফি সৈয়দ কালু শাহের মাজারের ১৭৯তম বার্ষিক ওরস উপলক্ষে মিলাদ ও গানের অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। তিন-চারটি গান হওয়ার পরই হঠাৎ থানার ওসি সাহেব এসে লোকজনকে দ্রুত সরে যেতে বলেন। এর মধ্যে বড় মসজিদ মাদ্রাসার শিক্ষার্থীরা এসে হামলা চালিয়ে সব তছনছ করে ফেলে। পরে গভীর রাতে মাজারটিও গুঁড়িয়ে দেয় তাঁরা। আমি এদের গ্রেপ্তারের দাবি জানাচ্ছি।’
ময়মনসিংহ কোতোয়ালি মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) সফিকুল ইসলাম খান গণমাধ্যম কে বলেন, ‘কালু শাহের মাজার ভাংচুরের ঘটনায় খলিলুর রহমান বাদী হয়ে অজ্ঞাতনামা ১ হাজার পাঁচশত জনকে আসামি করে মামলা করেছে। মামলায় কারও নাম উল্লেখ করে আসামি করা হয়নি। ওসি জানান-বৃহস্পতিবার রাতেই থানায় মামলা নথিভুক্ত হয়েছে। এখানে দুটি পক্ষই খুবই স্পর্শকাতর।এখনো কোনো আসামি গ্রেপ্তার হয়নি। তবে আমরা ভিডিও ফুটেজ দেখে আসামি গ্রেপ্তারের চেষ্টা করছি।’
তবে অভিযোগের বিষয়ে স্থানীয় জামিয়া ফয়জুর রহমান বড় মসজিদের প্রধান মুয়াজ্জিন শহীদুল ইসলাম জানান, রাতের মাইক বাজিয়ে গানবাজনা করছিলেন মাজারের লোকজন। উচ্চ স্বরে গান বাজানোর কারণে ছাত্রদের পড়ায় সমস্যা হয়। এমন অবস্থায় ছাত্ররা গিয়ে গানের সাউন্ড কমাতে বলেন। কিন্তু তা না করে গানের আসর থেকে উসকানিমূলক কথা বলায় ছাত্ররা ক্ষিপ্ত হয়ে সেখানে গিয়ে ভাঙচুর করেন।
উল্লেখ্য, নগরীর কোতোয়ালি মডেল থানার বিপরীত দিকে অবস্থিত হজরত শাহ সুফী সৈয়দ কালু শাহের (রহ.) মাজারে ১৭৯তম বার্ষিক ওরস উপলক্ষে গত বুধবার (৮ জানুয়ারী) দিবাগত রাতে ব্রহ্মপুত্র নদের পাড়ে সামা কাওয়ালি গানের আয়োজন করে ভক্তরা। রাত ১১টার দিকে গানের অনুষ্ঠান শুরুর একপর্যায়ে মাথায় টুপি পরা শত শত লোক অনুষ্ঠানে এসে হামলা চালিয়ে মঞ্চ ও চেয়ার ভাঙচুর করে চলে যায় তারা। পরবর্তীতে গভীর রাতে হামলা হয় মাজারে। এসময় মাজারের পাকা স্থাপনার বেশ কিছু অংশ ও ভেতরে থাকা জিনিসপত্র ভেঙে গুঁড়িয়ে দেওয়া হয়।’