রাজশাহীর দূর্গাপুরে ফসলি জমিতে চলছে অবাধে পুকুর খনন, নেই প্রশাসনের নজরদারী
লিয়াকত রাজশাহী ব্যুরো: রাজশাহী দূর্গাপুরে মাঠে ফসলি জমিতে চলছে অবাধে পুকুর খনন। নেই প্রশাসনের নজরদারী। এতে আশংখ্যাজনকহারে কমছে ফসলি জমি। দুর্গাপুর উপজেলার পালশা আংগার বিলের বিভিন্ন মাঠে ফসলি জমিতে চলছে পুকুর খনন। এরপর পুকুর থেকে উত্তোলনকৃত মাটি মাটি বিক্রি করা হচ্ছে বিভিন্ন ইটভাটায়। মাটি দিয়ে উঁচু করা হচ্ছে পানের বরজ।
ভূমি আইন উপেক্ষা করে অবাধে পুকুর খননের ধুম পড়েছে সেখানে। স্থানীয় প্রশাসনের কঠোর পদক্ষেপ এবং নজরদারী না থাকায় এক শ্রেণির মানুষ প্রশাসনের নজর এড়িয়ে কিংবা প্রশাসনকে ম্যানেজ করে সরকারী নিষেধাজ্ঞা অম্যান্য করে পুকুর খনন করেই চলছে। ফলে দিনদিন কমে যাচ্ছে ফসলি জমির পরিমাণ। সেইসাথে বর্ষা মৌসুমে সামান্য পানিতে জলাবদ্ধতা লেগে অনেক জমিতে কৃষকরা চাষ করতে পারছেনা বলে অভিযোগ পা্ওয়া গেছে।
অন্যদিকে ইটভাটার চাহিদা মেটাতে জমির মালিকগণ টাকার বিনিময়ে দেদারচ্ছে বিক্রি করছে ফসলি জমির উপরীভাগের মাটি। জমির টপ সয়েল উত্তোলন করায় এর উর্বরতা শক্তি কমে আসছে। শুধু তাই নয় মাটি বহনকারী ট্রাক্টরের অবাধ চলাচলে নষ্ট হচ্ছে প্রামীণ কঁাচা-পাকা রাস্তা। নষ্ট হচ্ছে পরিবেশ। পুকুর খননকারী নুর ইসলাম, নুর সালাম, ইসলাম নামে ও ওসি পরিচয় দানকারী রিপন নামে এক ব্যক্তি কাদেরের সহোযোগিতায় পুকুর খনন করছে। এছাড়াও ভুমি খেকো শফিকুল ও মোখলেসুর রহমানগণরা এই অপকর্মর্ করে যাচ্ছেন।
দুর্গাপুর উপজেলার পালশা আংগারবিল সম্পূর্ণ পুকুর খনন সিন্ডিকেট দ্বারা পরিচালিত হচ্ছে বলে স্থানীয়রা জানান। কাদের ও শফিকুল নামে পুকুর খননকারীরা, পুঠিয়া দূর্গাপুরের সংসদ সদস্য মনসুর রহমানের নাম ভাঙ্গিয়ে এই পুকুর খনন করছেন। তিনি তঁার নিকট থেকে অনুমোদন নিয়েছেন বলে দাবী করেন। শুধু তিনিই নয় পুকুর খননকারী সবাই সংসদ সদস্যের নিকট থেকে অনুমতি নিয়েই পুকুর খনন করছেন বলে দাবী করেন। এ বিষয়ে সংসদ সদস্য মনসুর রহমানের নিকট মুঠোফোনে জানতে চাইলে তিনি বলেন, পুকুর খনন বিষয়ে তিনি কিছু জানেন না। যদি কেউ তঁার নাম ভাঙ্গিয়ে পুকুর খনন করেন, তাহলে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে জানান তিনি। কাদের আরো দাবী করেন, ওসি রিপন সকল প্রশাসনকে ম্যানেজ করে এ পুকুর খনন করছেন।
পুকুরের পাশেই জমিতে সেচ দেয়ার জন্য প্রকল্পের ডিপ টিউবওয়েল বসানো আছে। জমি না থাকায় তা এখন সম্পূর্ণ অকেজো হয়ে পরে থাকবে বলে এলাকাবাসী অভিযোগ করেন। তারা আরো বলেন, তাদের নিকট হতে জমি জোরপূর্বক নেওয়া হচ্ছে। অন্যান্য জমির মালিক এবং স্থানীয়রা বলেন, এই মাঠের জমিতে বিঘাপতি ২৪ থেকে ২৫ মন করে ধান হয়। এছাড়াও অন্যান্য ফসলও হয়ে থাকে এই জমিগুলোতে।
অপরদিকে পুকুর খননকারীর কর্মচারী শফিকুল ইসলাম বলেন, তারা স্থানীয় এমপি ও প্রশাসনের নিকট থেকে অনুমোদন নিয়ে এবং প্রশাসনকে ম্যানেজ করে পুকুর খনন করছেন। সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায় প্রত্যেকটি পুকুরে চার থেকে পঁাচটি করে ভেকু মেশিন দিয়ে দিনরাত মাটি কাটছে। আর এই মাটি ১০ থেকে ১২ টি ট্রাক্টর দিয়ে গ্রামের রাস্তা দিয়ে নিয়ে যাওয়ায় চলাচলের বিঘ্ন ঘটছে বলে জানান তারা।
এ বিষয়ে দূর্গাপুর থানার অফিসার ইনচার্জ হাসমত আলীর নিকট জানতে চাইলে তিনি বলেন, এ বিষয়টি তার নয়। আইনশৃংখলা দেখা তার কাজ। তার পরেও পুকুর খনন বিষয়ে যদি কোন অভিযোগ আসে তাহলে তিনি তদন্ত সাপেক্ষে ব্যবস্থা নেবেন বলে জানান এই পুলিশ কর্মকর্তা।