বড়পুকুরিয়া কয়লা দুর্নীতি মামলা : সাবেক ৬ এমডিসহ ২২ কর্মকর্তা জামিনে মুক্ত
ফুলবাড়ী (দিনাজপুর) প্রতিনিধি: দিনাজপুর বড়পুকুরিয়া কয়লা খনি থেকে ২৪৩ কোটি ২৮ লাখ ৮২ হাজার ৫০১ টাকার কয়লা চুরির ঘটনায় জামিন নামঞ্জুর করে জেল হাজতে প্রেরণের পরদিন গতকাল বৃহস্পতিবার জামিনে মুক্ত হলেন বড়পুকুরিয়া কোল মাইনিং কোং লিঃ এর সাবেক ৬ এমডিসহ ২২ কর্মকর্তা। সকালে দিনাজপুর জেলা কারাগার থেকে তাদের মুক্ত করে দেয়া হয়।
বুধবার দুপুরে দিনাজপুরের স্পেশাল জজ আদালতের বিচারক মাহমুদুল করিম বড়পুকুরিয়া কয়লা খনির সাবেক ৬ এমডিসহ ২২ কর্মকর্তার জামিন নামঞ্জুর করে জেল হাজতে প্রেরণের আদেশ দেন এবং বিকেলেই তাদের জেল হাজতে প্রেরণ করা হয়। সন্ধ্যায় আসামী পক্ষের আবেদনের প্রেক্ষিতে একই বিচারক আবারও তাদের জামিন মঞ্জুর করেন। পরে সেই জামিন আদেশের কপি জেলা কারাগারে প্রেরন করা হয়। তবে নির্দিষ্ট সময়ের পরে সেই আদেশের কপি কারাগারে পৌছানোর কারনে বুধবার তাদেরকে জামিনে মুক্তি দেয়নি কারাগার কর্তৃপক্ষ।
আসামীপক্ষের আইনজীবী এ্যাড. নুরুজ্জামান জাহানী বলেন, সম্প্রতি জামিনের নিষেধাজ্ঞা এনে রাষ্ট্রপক্ষ উচ্চ আদালতে একটি রিট করেছে। সেই রিটের বিষয়টি উচ্চ আদালতে বিচারাধিন রয়েছে। সেই অবস্থাতে বুধবার ২২ জনের জামিন না মঞ্জুর করে দিনাজপুর স্পেশাল জজ আদালত। পরে উচ্চ আদালতের বিচারাধিন রিটের কাগজপত্র স্পেশাল জজ আদালতে উপস্থাপন করা হলে তাদের জামিন মঞ্জুর করে একই আদালত।
মামলার আসামীরা হলেন সাবেক ৬ এমডি মোঃ আব্দুল আজিজ খান, প্রকৌশলী খুরশিদ আলম, প্রকৌশলী কামরুজ্জামান, মোঃ আনিসুজ্জামান, প্রকৌশলী এসএম নুরুল আওরঙ্গজেব ও প্রকৌশলী হাবিব উদ্দীন আহমেদ। এছাড়া সাবেক মহাব্যবস্থাপক (জিএম) শরিফুল আলম, মোঃ আবুল কাশেম প্রধানিয়া, আবু তাহের মোঃ নুরুজ্জামান চৌধুরী, ব্যবস্থাপক মাসুদুর রহমান হাওলাদা, মোঃ আরিফুর রহমান ও সৈয়দ ইমাম হাসান, উপ-ব্যবস্থাপক মোঃ খলিলুর রহমান, মোঃ মোর্শেদুজ্জামান, মোঃ হাবিবুর রহমান, মোঃ জাহিদুর রহমান, সহকারী ব্যবস্থাপক সতেন্ত্র নাথ বর্মন, মোঃ মনিরুজ্জামান, কোল হ্যান্ডেলিং ম্যানেজমেন্টের ব্যবস্থাপক মোঃ সোহেবুর রহমান, উপ-মহাব্যবস্থাপক একেএম খাদেমুল ইসলাম, ব্যবস্থাপক অশোক কুমার হাওলাদার ও উপ-মহাব্যবস্থাপক মোঃ জোবায়ের আলী।
মামলা সূত্রে জানা গেছে, গত ২০০৬ সালের জানুয়ারী মাস থেকে ২০১৮ সালের ১৯ জুলাই পর্যন্ত ১ লাখ ৪৩ হাজার ৭২৭ দশমিক ৯২ মেট্রিক টন কয়লা চুরি হয় বড়পুকুরিয়া কয়লা খনি থেকে। যার আনুমানিক মূল্য ২৪৩ কোটি ২৮ লাখ ৮২ হাজার ৫০১ টাকা ৮৪ পয়সা। এই ঘটনায় বড়পুকুরিয়া কোল মাইনিং কোম্পানীর ব্যবস্থাপক (প্রশাসন) মোঃ আনিসুর রহমান বাদী হয়ে ২০১৮ সালের ২৪ জুলাই ১৯ জনের নাম উল্লেখ করে পার্বতীপুর থানায় মামলা করেন। মামলাটি দুদকের তফশীলভুক্ত হওয়ায় দুদক কার্যালয়ে হস্তান্তর করা হয়। পরে দুদকের তদন্তকারী কর্মকর্তা তদন্ত করে ২৩ জনের বিরুদ্ধে আদালতে চার্জশীট জমা করেন। চার্জশীট দাখিলের পর সাবেক এমডি মোঃ মাহবুবুর রহমান মারা যান।