বিশ্বনাথে ‘দখল-দূষণে অস্তিত্ব সংকটে বাসিয়া’ নদী
বিশ্বনাথ প্রতিনিধি : সিলেটের বিশ্বনাথে দখল আর দূষণে অস্তিত্বই হারাতে বসেছে এক সময়ের খরস্রোতা বাসিয়া নদী। দখল আর দূষণের কবলে পড়ে নদীটি আজ মরা খালে পরিণত হয়েছে।
শীত মৌসুমে নদীটি শুকিয়ে মাছের আবাস্থল হয়েছে বিলীন। উপজেলা সদরের প্রাণকেন্দ্র বাসিয়া সেতুর নিচে তাকালে মনে হয় নদীটি ব্যবসায়ীদের ময়লা-আবর্জনার ডাস্টবিন।
এতে মশা-মাছির উপদ্রব আর দুর্গন্ধে পরিবেশ মারাত্মকভাবে বিপর্যয়ের মুখে গিয়ে দাঁড়িয়েছে। কিন্তু রহস্যজনক কারণে সংশ্লিষ্ট প্রশাসনের ভূমিকা রয়েছে নীরব। ফলে দখলদারদের বিরুদ্ধে উচ্ছেদ মামলা।
দীর্ঘ কয়েক বছরে দখল আর দূষণের কবলে পড়ে বাসিয়া নদীটি আজ মরা খালে পরিণত হয়েছে। বিশেষ করে উপজেলা সদরে নদীর দুই তীরের অংশটুকু দখল করে প্রভাবশালীরা গড়ে তুলেছেন স্থায়ী ও অস্থায়ী স্থাপনা।
এখন আর আগের মতো হাতের চাপে নলকূপে খাবার পানি আসেনা! তাই উপজেলার সর্বত্র দেখা দিয়েছে তীব্র খাবার পানি সংকট।আগেকার যুগে স্থাপন করা ৩০০/৩৫০ফুট গভীরের নলকূপে দেখা দিয়েছে এমন সংকট।এসব নলকুপে এখন আর হাতের চাপে পানি আসেনা। তাই বাড়িতে এমন নলকুপ থাকাসত্যেও গভীর নলকুপ স্থাপিত বাড়িতে গিয়ে খাবার পানি সংগ্রহ করছেন নারীরা।
যে নলকুপ স্থাপনে গরীব অসহায় লোকজনের পক্ষে সম্বব নয়। প্রায় ১০বছর ধরে ৩০০/৩৫০ ফুট নলকূপে পানি সংকট দেখা দিয়েছে। এখন সংসদ সদস্য ও উপজেলা পরিষদের বিতরণকৃত মোটরসহ গভীর নলকুপই হয়েছে ভুক্তভোগীদের একমাত্র ভরসা। যার বাড়িতে এমন নলকুপ আছে তার বাড়ি থেকে খাবার পানি সংগ্রহ করতে হচ্ছেন ভুক্তভোগীরা।
নদী নালা খাল বিল দখল, দূষণ আর ভরাটের কারণে পানির স্থর নেমে যাচ্ছে। ফলে বোরো ধান চাষাবাদে কৃষকদের হাহাকার আর পানি নিষ্কাশনে বাঁধা হচ্ছে। বর্ষা মৌসুমে পানি নিষ্কাশন না হওয়ায় জলাবদ্ধতায় নষ্ট হয়।
কৃষকের কষ্টের ফসল বোরো ধান আর হয়ে থাকে অকাল বন্যায়। এভাবে দখল আর নদী নালা খাল বিল ভরাট হলে এক সময় বিলীন হয়ে যাবে পানির আবাসস্থল। তাই ভবিষ্যতে গভীর নলকুপেও পানির সংকট দেখা দেবে বলে মনে করছেন সচেতন মহলের লোকজন।
জানতে চাইলে বিশ্বনাথ সদর ইউপি চেয়ারম্যান ছয়ফুল হক বলেন, নদী নালা খাল বিল দখল আর ভরাটের কারণে ভরা মৌসুমে পানির সংকট দেখা দেয়। এছাড়াও নরমাল নলকুপে দেখা দিয়েছে তীব্র পানি খাবার সংকট। এখন আর ওই নলকূপে হাতের চাপে পানি আসেনা। নদী নালা খাল বিল বিলীন হলে ভবিষ্যতে গভীর নলকুপেও পানি সংকট দেখা দেবে বলে তার ধারনা।