ভূমি কর্মকর্তা ইকতিয়ার উদ্দিনের সেবায় সন্তুষ্ট ভুমি মালিকরা
ষ্টাফ রিপোর্টারঃময়মনসিংহ নগরীর পৌর ভূমি অফিসে সেবা নিতে আসা সাধারণ মানুষেরা খুব খুশি। কেনোনা ভূমি সংক্রান্ত কাগজপত্র ও খতিয়ান এখন অনলাইনে সব আপডেট। এখানে সহকারী ভূমি কর্মকর্তা হিসেবে ইকতিয়ার উদ্দিন ভূইয়া যোগদান করার মাত্র ১বছরে হয়েছে ব্যাপক পরিবর্তন। পুরো পৌর খতিয়ান এখন অনলাইন সার্ভারে প্রবেশ করানো হয়েছে। কিউআরকোড যুক্ত নামজারি খতিয়ান পাচ্ছেন কোনো হয়রানি ছাড়াই। বিনামূল্যে মিলছে জমির প্রয়োজনীয় কাগজপত্র ও সহিমুহুরি নকল।
অফিস সূত্রে জানা যায়, বর্তমান সহকারি ভূমি কর্মকর্তা আসার পর থেকেই ভূমি অফিসের অন্যান্য কর্মচারীদের সঙ্গে জনগণের দূরত্ব কমেছে। জনগণের ভোগান্তি লাগবে সেবার সবকিছু এখন অনলাইনে। ভূমি অফিসে কোন আর্থিক লেনদেনের সুযোগ নেই। সব স্পট সিসি ক্যামেরায় ধরা। শুধু তাই নয় বর্তমান সরকারের ভূমি মন্ত্রণালয়ের ভূমি ব্যবস্থা শতভাগ অনলাইন আপডেট বাস্তবায়নের লক্ষ্যে, ভূমি সংক্রান্ত কাগজপত্র অনলাইনে আপলোড, বাদি-বিবাদীর সরাসরি শুনানি আর দ্রুততম সময়ের মধ্যে জমির নামজারিসহ নানামুখী সেবায় পাল্টে গেছে ময়মনসিংহ পৌর ভূমি অফিস।
সেবা নিতে নেই আগের মতো তৃতীয় পক্ষ কিংবা দালালের দৌরাত্ম। কোনো হয়রানি ছাড়াই মিলছে জমির প্রয়োজনীয় কাগজপত্র। ভূমি অফিসের নানামুখী সেবা পেয়ে আর কর্মকর্তা ইকতিয়ার উদ্দিন ভূইয়ার আচার-আচরণে খুশি সেবা নিতে আসা সাধারণ মানুষ। যারা এক সময় তৃতীয়পক্ষের সহায়তা ছাড়া জমির কোনো কাজই করতে পারতেন না, তাঁরাই এখন নিজের সমস্যার কথা নিজেরাই ভূমি অফিসে এসে বলতে পারছেন। বিভিন্ন ধরনের সেবা পাচ্ছেন সেবাগ্রহীতারা।
এতে খতিয়ানের করণিক ভুল সংশোধন থেকে নামজারি ও জমাভাগ/জমা একত্রিকরণের আদেশের রিভিউ, ভূমি উন্নয়ন কর নির্ধারণীর আপত্তি নিষ্পত্তি, দেওয়ানী আদালতের রায়/আদেশ মূলে রেকর্ড সংশোধনসহ বিবিধ কেসের আদেশের নকল/সার্টিফাইড কপি প্রদান করা হচ্ছে। ভূমি অফিস থেকে বের হয়ে মেছুয়া বাজার এলাকার এক ভূমি মালিক জানান, ‘আগে অনেক ভোগান্তি পোহাতে হতো, টাকা দিয়ে দালাল ধরে কাজ করতে হতো। কিন্তু এখন ১১৫০ টাকা খারিজের জন্য লাগে। বাড়তি টাকা নেয়না অফিসের কোন কর্মচারী। টাকার রশিদ দিয়ে দেয়। তাড়াতাড়ি সেবা পাচ্ছি।’
আরেকজন সেবা গ্রহীতা জানান, ‘আপত্তি ছিল, দ্রুত শুনানি করে মিচ মামলায় খতিয়ানের সমাধান দিলেন নাইব সাহেব । আমার জমির বিষয়ে সমস্ত তথ্য জানিয়ে দরখাস্ত দিয়েছিলাম। ভূমি অফিস থেকে আমাকে ফোন দিয়ে তারিখ জানিয়েছে। আজ শুনানি ছিল। তাতে সমাধান হওয়ায় আমি অনেক খুশি।’
ভূমি অফিস সূত্রে আরও জানা গেছে, কর্ণফুলী উপজেলার ৫টি ইউনিয়ন
ময়মনসিংহ সিটি করপোরেশন হওয়ার পর থেকে
পৌর এলাকা এখন সিটি করপোরেশন এলাকা। আগের তুলনায় এড়িয়া ও ওয়ার্ড বেশী। তারপরও নাইব ইকতিয়ার উদ্দিন ভূইয়ার মেধায় ভূমি অফিসেও লেগেছে এই পরিবর্তনের হাওয়া। ভোগান্তি ছাড়া স্বল্পসময়ের মধ্যে সেবা প্রার্থীরা কাক্ষিত সেবা পাচ্ছেন এখন। শুনানিকালে কোনো পক্ষের কাগজপত্রের ঘাটতি থাকলে আবেদন বাতিল না করে সহকারী কমিশনার ভূমি (এসিল্যান্ড) এর পরামর্শ নিয়ে তাকে সময় দেওয়া হচ্ছে। কোনো কাগজের নকল পেতেও কোনো বিড়ম্বনার শিকার হতে হয় না। নানামুখী এসব সেবার পাশাপাশি ভূমি অফিসের পরিবেশগত ও অবকাঠামোগত পরিবর্তনের কাজ শুরু হয়েছে।
ইতোমধ্যে সহকারি ভূমি কর্মকর্তা এই ভূমি অফিসে যোগদান করার পর বিভিন্ন এলাকায় ভূমি অফিসের জন্য খাস জমি বরাদ্দ দিলেন। সরকারের কাছে চাহিদাপত্র দিয়ে অকাঠামোগত উন্নয়নে ফাইল প্রেরণ করেছেন। যা বিগত বছরে কোন নাইবকে এমন পদক্ষেপ নিতে দেখা যায়নি। এতে নতুন সহকারী ভূমি কর্মকর্তার কর্মপদ্ধতির প্রশংসা করছেন নগরীর বিভিন্ন পেশাশ্রেণীর ব্যক্তিবর্গরা।
এব্যাপারে সহকারি ভূমি ইকতিয়ার উদ্দিন ভূইয়া জানান, ‘পৌর ভূমি যোগদান করেছি প্রায় বছর হয়েছে। যোগদানের পর থেকে সহকারী কমিশনার ভূমি (এসিল্যান্ড) স্যারের নির্দেশে ও স্যারের সহায়তায় ভূমি সংক্রান্ত সকল ফাইল ও সেবা অনলাইনের আওতায় আনা হয়েছে। যিনি সেবাপ্রার্থী কেবলমাত্র তাকেই অফিসে আসতে উৎসাহিত করা হচ্ছে। এতে করে ভোগান্তি থেকে তাঁরা রক্ষা পাবে। এছাড়াও যে সেবা অফিস থেকে দেওয়া সম্ভব তাৎক্ষণিক তা দেওয়া হচ্ছে। যেটাতে সময় লাগবে সেক্ষেত্রে আবেদনকারীর মোবাইল নম্বরে এসএমএস অথবা ফোনে নির্ধারিত তারিখ বলে দেওয়া হচ্ছে। আর যে সেবা এখান থেকে দেওয়া সম্ভব নয় সেই সেবা প্রাপ্তির বিষয়ে সঠিক পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে।’
তিনি আরও বলেন, ‘মাননীয় প্রধানমন্ত্রী বলেছেন একজন অফিসার চাইলে একটি এলাকার অনেক উন্নতি ঘটাতে পারেন। বিষয়টি আমাদের নাড়া দিয়েছে। নগরীর সাধারণ মানুষেরা জানান, ‘বর্তমান নাইব এর সৃজনশীল কাজ করার মানসিকতা আছে বলেই জনগণ সেবা পাচ্ছে। মূলত এ কারণেই ভূমি অফিসের সেবার মান পরিবেশ ও অবকাঠামোগত উন্নয়ন সম্ভব হচ্ছে।’
সহকারি ভূমি কর্মকর্তা ইকতিয়ার উদ্দিন ভূইয়া বর্তমান কর্মস্থলে যোগদান করেছিলেন এ বছরের ২৪ মে। এর পূর্বে তিনি সদর উপজেলার ভাবখালী ইউনিয়ন সহ বিভিন্ন ইউনিয়ন ভূমি কার্যালয়ে সহকারী ভূমি কর্মকর্তা হিসেবে কর্মরত ছিলেন। সহকারী ভূমি কর্মকর্তা হিসাবে দক্ষতা ও মেধা সম্পন্ন থাকায় তিনি বাংলাদেশ ভূমি অফিসার্স কল্যাণ সমিতি ময়মনসিংহ জেলা শাখার সভাপতি হিসাবে দায়িত্বে থেকে ভূমি কর্মকর্তাদের বিভিন্ন সুযোগ সুবিধা বাস্তবায়নে কাজ করছেন। তার নিজ বাড়ী ময়মনসিংহ জেলার নান্দাইল উপজেলার বৈতাগীর ইউনিয়নের শিবপুর গ্রামে। বাবার নাম মকবুল হোসেন৷ তিনি ছিলেন একজন সমাজ সেবক ও মেধাবী চিকিৎসক।