গ্রেপ্তার গোলাপ জেলার গৌরীপুর থানাধীন তাতিপায়া গ্রামের মৃত রুস্তম আলী মাস্টারের ছেলে।
র্যাব জানায়, ২০০৫ সালের ১৭ আগস্ট সারা দেশে একযোগে হাইকোর্ট, সুপ্রিমকোর্ট, জেলা আদালত, বিমানবন্দর, মার্কিন দূতাবাস, জেলা প্রশাসক, জেলা পুলিশ সুপারের কার্যালয়, প্রেস ক্লাব ও সরকারি-আধা সরকারি স্থাপনায় সিরিজ বোমা হামলা চালায় নিষিদ্ধ জঙ্গি সংগঠন জামাআতুল মুজাহিদীন বাংলাদেশ (জেএমবি)। ঘটনার দিন সকাল ১১টা থেকে সাড়ে ১১টার মধ্যে দেশের ৬৩ জেলার প্রেসক্লাব, গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনায় প্রায় ৫০০ বোমা বিস্ফোরণ ঘটায় জঙ্গিরা। এ হামলায় দুইজন নিহত ও দুই শতাধিকের বেশি মানুষ আহত হয়।
ঘটনার দিন সারা দেশের মতো ময়মনসিংহ শহরের চরপাড়া মোড়, গাঙ্গিনার পাড় সিটি প্রেস ক্লাবের নিচে, পাটগুদাম চায়না ব্রিজের মোড়, বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়, কোর্ট ভবন বার কাউন্সিলসহ বিভিন্ন স্থানে বোমা হামলার ঘটনা ঘটে। ময়মনসিংহে এ বোমা হামলার ঘটনায় ময়মনসিংহ নগরীর আকুয়া হাজীবাড়ী এলাকার রফিকুল ইসলাম টুটুল, একই এলাকার হাফিজুর রহমান ও নেত্রকোনার আটপাড়া উপজেলার মঙ্গল সিদ্ধ গ্রামের সদীপ গুরুতর আহত হয়।
এ ঘটনায় পুলিশ বাদী হয়ে কোতোয়ালী মডেল থানায় বিস্ফোরক দ্রব্য আইন ও বিশেষ ক্ষমতা আইনে দুইটি মামলা করেন। মামলার তদন্ত শেষে তদন্তকারী কর্মকর্তা ২০০৬ সালের ১১ সেপ্টেম্বর আজিজুল হক গোলাপসহ আরও ১১ জনের বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করে।
এ বিষয়ে ময়মনসিংহ র্যাব-১৪ সদর দপ্তরের জ্যেষ্ঠ সহকারী পরিচালক মো. আনোয়ার হোসেন বলেন, ময়মনসিংহের গৌরীপুর থানাধীন মাওহা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শায়খ আব্দুর রহমান, সিদ্দিকুল ইসলাম (বাংলা ভাই) ও আজিজুল হক গোলাপসহ অন্যান্যরা সিরিজ বোমা হামলার পূর্ববর্তী সময়ে নিয়মিত গোপন বৈঠক করত। বৈঠকে বিভিন্ন দেশে বিভিন্ন সময় সংঘটিত সন্ত্রাসী হামলার ছবি ও ভিডিও ফুটেজ প্রদর্শন করা হত। এ ছাড়া সন্ত্রাসী হামলার সময়ে বিভিন্ন বিষয়ে করণীয় সম্পর্কে সম্যক জ্ঞান দেয়াসহ সন্ত্রাসী হামলার পরিকল্পনা প্রণয়ন ও প্রশিক্ষণ দিত।
তিনি বলেন, সারা দেশে সিরিজ বোমা হামলার পর থেকে দীর্ঘ ১৮ বছর নিজের পরিচয় গোপন করে দেশের বিভিন্ন স্থানে পালিয়ে ছিল আজিজুল হক গোলাপ। গোপন সংবাদের ভিত্তিতে তার পালিয়ে থাকার অবস্থান জানতে পেরে তাৎক্ষণিক অভিযান চালিয়ে গ্রেপ্তার করা হয়। তাকে আদালতে পাঠানোর প্রক্রিয়া চলছে।