তানোরে সরকারি নির্দেশনা মানছেন না পল্লী বিদ্যুৎ!
সোহানুল হক পারভেজ, রাজশাহী -ঃ- রাজশাহী পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি তানোর জোনের কর্মকর্তা (ডিজিএম) জহুরুল ইসলাম এবং (এজিএম) কামাল হোসেনের বিরুদ্ধে সরকারি নির্দেশনা পালনে গড়িমসি ও দায়িত্ব অবহেলার অভিযোগ উঠেছে দুই কর্মকর্তা সরকারি প্রজ্ঞাপন বাস্তবায়নে রিতিমতো ইঁদুর-বেড়াল খেলা শুরু করেছে।
জানা গেছে, প্রচন্ড খরা এবং ভুমিকম্প প্রবণ বরেন্দ্র অঞ্চলের অন্তর্ভুক্ত তানোর। কিন্ত এখানে নীতিমালা লঙ্ঘন করে যত্রতত্র অবৈধ মটর স্থাপন ও পল্লী বিদ্যুতের সংযোগ নিয়ে সেচ বাণিজ্যে করা হচ্ছে। এসব মটর থেকে যে পানি উত্তোলন হয় তার মাত্র ২০ ভাগ কাজে লাগে এবং ৮০ ভাগ অপচয় হয়। ফলে ভূগর্ভস্থ পানির যথেচ্ছ ব্যবহার ও অপচয়ের কারণে সংকটে পড়ে বিএমডিএ সেচ প্রকল্প। একই সঙ্গে হাজার নলকুপ অকেজো হয়ে পড়ে। বিশুদ্ধ খাবার পানির তীব্র সংকট, হুমকির মুখে পড়ে জীববৈচিত্র্য, আশঙ্কা দেখা দেয় ভুকম্পন।
এদিকে বিষয়টি নীতিনির্ধারণী মহলের দৃষ্টি আকর্ষণ হয়। তারা ভূগর্ভস্থ পানি ধরে রাখতে এসব অবৈধ মটরের বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন করণে কঠোর নির্দেশনা দেন।এমনকি গত ২৬ জুন উপজেলার মাসিক সাধারন সভায় স্থানীয় সাংসদ ওমর ফারুক চৌধুরী এসব অবৈধ মটরের সংযোগ বিচ্ছিন্ন করতে কঠোর নির্দেশ দিয়েছেন । কিন্ত্ত দীর্ঘদিন অতিবাহিত হলেও অজ্ঞাত কারণে ডিজিএম ও এজিএম একটি সংযোগও বিচ্ছিন্ন করতে পারেনি। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক লাইনম্যান বলেন, ডিজিএম ও এজিএম অর্থের বিনিময়ে এসব অবৈধ সংযোগ দিয়েছেন। ফলে কর্তৃপক্ষ যাই বলুক তারা চাইলেও তো এসব সংযোগ বিচ্ছিন্ন করতে পারবে না।তাই দায় এড়াতে এরা বদলির চেষ্টা করছে।
সংশ্লিষ্ট সুত্র জানায়, উপজেলায় সরকারি গভীর নলকূপ রয়েছে ৫৩৬টি, ব্যক্তিমালিকানাধীন ১৬টি, অগভীর বিদ্যুৎ চালিত ৪১১টি, ডিজেল চালিত ৫০টি এলএলপি (বিদ্যুৎ) ৩টি, এলএলপি (ডিজেল চালিত) ৩৫০টি তানোরে সরকারি-ব্যক্তি মালিকানাধীন মিলে মোট ২ হাজার ১৯৫ টি সেচযন্ত্র রয়েছে।উপজেলায় আবাদ যোগ্য জমি আছে ২৩ হাজার ৯৯৩ হেক্টর, সেচের আওতায় ২২ হাজার ৩৩২ হেক্টর। এবিষয়ে পল্লী বিদ্যুৎ রাজশাহীর জেনারেল ম্যানেজার রমেন্দ্র চন্দ্র রায় বলেন, তানোর অফিসকে বলে দ্রুত সংযোগ বিচ্ছিন্নের কাজ শুরু করা হবে।এবিষয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও সেচ কমিটির সভাপতি (ইউএনও) বিল্লাল হোসেন বলেন বিষয়টি আগামী মিটিংয়ে দেখা হবে, আর অফিস সময়ে আসেন বিস্তারিত আলচনা করা হবে। এবিষয়ে পল্লী বিদ্যুতের ডিজিএম জহুরুল ইসলাম বলেন, করোনার মধ্যে প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনা মোতাবেক কোন জমি যাতে পতিত না থাকে এই জন্য মটর দেওয়া হয়েছিল। ওই সময় মটর না দিলে এত চাষাবাদ হত না। এখন হেড অফিস থেকে নওহাটা অফিসকে নির্দেশ দেন বিচ্ছিন্নের জন্য। তারা আমাদেরকে নির্দেশ দিয়েছেন বিচ্ছিন্ন করার জন্য। করোনার অনেক আগে মটর স্থাপন হয়েছে এবং এখন পর্যন্ত কি পদক্ষেপ নিয়েছেন জানতে চাইলে তিনি জানান, মাইকিং করা হবে এবং দ্রুত সকল সংযোগ বিচ্ছিন্ন করা হবে। বাড়ির মটর থেকে সেচ দিলেও সেটাও বিচ্ছিন্ন করা হবে।