তাহিরপুরে ৫টি দোকান আগুনে পুড়ে চাঁই
মুরাদ মিয়া, সুনামগঞ্জ : সুনামগঞ্জের তাহিরপুরে আকস্মিক আগুন লেগে ৫টি দোকানে থাকা কম্পিউটার, সৌর বিদ্যুতের ব্যাটারী, মোবাইল, হিটার মেশিন, নগর অর্থসহ আনুষাঙ্গিক জিনিস পত্র সব পুড়ে চাঁই । এতে নিঃস্ব আংগুল আলম, রতনসহ দোকানীরা। এছাড়াও মুদির দোকানী নাসির ও সরকারি সবজি -মাছের ঘর ক্ষতি গ্রস্ত হয়েছে।
সুনামগঞ্জের তাহিরপুর উপজেলার উত্তর ইউনিয়নে শ্রীপুর বাজারে এ ঘটনাটি ঘটেছে। ভুক্তভোগীদের ধারণা মতে ২০ লক্ষ্য টাকার মালামালসহ দোকান ঘর পুড়ে ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে।
আংগুর আলমের মোবাইল মেরামতের দোকানে আগুনের সূত্র পাত শুরু হয়। ক্ষতি গ্রস্ত দোকানীরা, আংগুর আলম, মোবাইল মেরামতসহ লেফটপ ফটো কপি’র দোকানদার, ডাঃ সুরেন্দ্র দাস হোমিওপ্যাথিক ফার্মেসি, রতন মিয়ার ইলেকট্রনিক দোকান, মাহির বিকাশ ও মোবাইল এর দোকান, মতি পাল এর মুদি দোকানে মালামাল।
ক্ষতি গ্রস্ত আংগুর আলমের বাবা জয়নাল আবেদীন জানান, আমার সব শেষ হয়ে গেছে। দোকানে থাকা নগর টাকাসহ মালামাল সব চাইঁ। প্রায় ৪লক্ষ টাকার মালামালসহ নগদ ৫০হাজার টাকা পুড়ে গেছে। আমি এখন নিঃস্ব।
আমি একজন মসজিদের ইমাম, আমার তেমন টাকা পয়সা নাই। এ দোকানে যা আয় হয়, তা দিয়ে চলি। এখন আমার কিছু রহিম না।
ইলেকট্রনিক দোকানের মালিক রতন মিয়া বলেন, আমি খুব কষ্ট করে এ-ই দোকান দিয়েছি, নিজের বসত বিটা ও নেই, থাকি
সরকারের দেওয়া গুচ্ছ গ্রামে। ট্যাকেরঘাট গুচ্ছ গ্রাম থেকে প্রতিদিন আসি,দোকানদারি করতে। আগুনে পুড়ে এক লাখ, নব্বই হাজার টাকার মালামাল শেষ। আমার সম্বলটুকু সম্বল হাড়িয়ে আমি নিঃস্ব।
শ্রীপুর বাজার কমিটির সাধারণ সম্পাদক শামনূর আখঞ্জী বলেন, আগুন কি ভাবে লেগেছে জানি না। লোকজনের আওয়াজে শোনে ঘর থেকে বেড়িয়ে এসে দেখি আংগুর মিয়া কম্পিউটারের দোকানে আগুন। দেখতে দেখতে ৫টি দোকান পুড়ে চাঁই হয়ে গেছে। এতে ২৫ লক্ষ টাকার মালামালসহ নগদ অর্থ পুড়ে ভস্মীভূত হয়।
স্থানীয় ও প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, বুধবার রাত সাড়ে ১১টার সময় বাজারের দোকানীরা দোকান পাট বন্ধ করে নিজ নিজ বাড়িতে চলে যান।কিছু দোকানী বাড়ি যাওয়ার জন্য
নৌকা অপেক্ষায় নদীর ঘাটে ছিলেন। হটাৎ দেখেন বাজারের বাজারের নৈশ্য প্রহরী আজম খান,আগুন লেগেছে বলে আওয়াজ দিচ্ছেন, এ সংবাদ শোনেই, , দ্রুত গতিতে এগিয়ে আসেন পার্শ্ববর্তী দোকানদারসহ গ্রামের লোকজন ও তাহিরপুর উপজেলা পরিষদের সাবেক ভাইস চেয়ারম্যান ফেরদৌস আলম আখঞ্জী, উত্তর শ্রীপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আলী হায়দার, ইউ/পি সদস্য আবুল কালাম, দিলোয়ার হোসেন তালুকদারসহ স্থানীয় যুবকরা এসে আগুন নিভাতে জল আর বালু ছুটতে থাকে, এভাবে ঘন্টা খানিক চেষ্টা চালিয়ে নিয়ন্ত্রণে আনতে সক্ষম হয়েছে। এরপর ও এক দুইটি দোকানে ধোঁয়া দেখাচ্ছিল। তারপর তাহিরপুর উপজেলার ফায়ার সার্ভিসের ডিফেন্স টিম এসে দমকল দিয়ে পানি ঢেলে সম্পূর্ণ আগুন নিভে গেছে বলে নিশ্চিত করেন।
আগুন নিভাতে গিয়ে রিপন আখঞ্জী, সুজন মিয়া , নীরব নামের তিন জন আহত হয়ে ছেন। তাদের মধ্যে দুই জন প্রাথমিক চিকিৎসা সেবা গ্রহণ করার পর সুস্থ হয়ে উঠেছেন। নীরব নামের কিশোর গুরুতর আহত হয়ে সুনামগঞ্জ সদর হাসপাতালে ভর্তি রয়েছেন।
এ ব্যাপারে তাহিরপুর উপজেলা ফায়ার সার্ভিসের ডিফেন্স টিম এর সাব অফিসার চান মিয়া বলেন,আমার ধারণা মতে বৈদ্যুতিক তারের সর্ট খেয়ে এ আগুনের সূত্র পাত সৃষ্টি হয়েছে ।
তাহিরপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ওসি সৈয়দ ইফতেখার হোসেন,আগুনে পুড়ে যাওয়া দোকান গুলো পরিদর্শন করে তিনি বলেন তাদের ক্ষতিতে আমি খুবই মর্মাহত।
তাহিরপুর উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা সুপ্রভাত চাকমা খবর পেয়ে সাথে সাথে ঘটনা স্থলে এসে পরিদর্শন করেন।ফায়ার সার্ভিসের ডিফেন্স টিমকে দ্রুত ঘটনার স্থলে আসতে নির্দেশ দেন।
সুনামগঞ্জ -সিলেট সংরক্ষিত মহিলা আসনের সাংসদ শামীম শাহরিয়া ও তাহিরপুর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান করুণ সিন্ধু চৌধুরী বাবুল,ও শ্রীপুর উত্তর ইউনিয়ন কৃষক লীগের সভাপতি শেখ মোস্তফা,আগুনে পুড়ে যাওয়া ক্ষতি গ্রস্ত দোকানীদের খোঁজ খবর নিয়ে মর্মাহত,সেই সমস্ত দোকানীদের প্রতি সমবেদনা জানিয়েছেন তাঁরা।