ঢাকা | জানুয়ারী ১৬, ২০২৫ - ৬:১৭ অপরাহ্ন

সংবাদ শিরোনামঃ

চিরিরবন্দরে লোকলজ্জার ভয়ে গৃহবধুর আত্মহত্যা

  • দৈনিক নবোদয় ডট কম
  • আপডেট: Monday, August 21, 2023 - 4:07 pm
  • News Editor
  • পঠিত হয়েছে: 23 বার

পি কে রায়,স্টাফ রিপোর্টারঃ দিনাজপুরের চিরিরবন্দর উপজেলায় ইউপি চেয়ারম্যান কার্যলয়ে এক লক্ষ টাকার বিনিময়ে দু-পক্ষের শালিশ শেষে বাড়িতে ফিরে গভীর রাতে গ্যাস ট্যাবল্যাট খেয়ে আত্মহত্যা করেছে লাভলী বেগম (৩১) নামে এক গৃহবূধূ।

উপজেলার ১নং নশরতপুর ইউনিয়নের কালিতলা গ্রামে মহির মেম্বার পাড়ায় এ ঘটনা ঘটে।

এলাকাবাসী সুত্রে জানা গেছে, দুই সন্তানের জননী লাভলী বেগম (৩১) এর স্বামী মোঃ জামিনুল ইসলাম সংসারে অভাব থাকার কারনে দীর্ঘদিন ধরে ঢাকায় অবস্থান করে আসছে।

এই সুযোগে স্ত্রী লাভলী বেগম (৩১) একই উপজেলার পাশ্ববর্তী ১১নং তেঁতুলিয়া ইউনিয়নের সিঙ্গানগর গ্রামে তার বাবার বাড়ি এলাকার নিরঞ্জন রায় নামে এক ছেলের সাথে পরকিয়ার সম্পর্ক গড়ে তোলে।

গত রবিবার (২০ আগষ্ট) রাতে নিরঞ্জন রায় দেখা করতে লাভলী বেগম (৩১) এর বাসায় ঢুকলে এলাকাবাসী দু’জনকে আটক করে।

এদিকে স্থানীয়রা অভিযোগ করে বলেন, “গ্রাম পুলিশ কার্তিক চন্দ্র রায়ের সহযোগিতায় ৯নং ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য খিতিষ চন্দ্র রায় ও ৫নং ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য আব্দুল সামাদ সেখানে উপস্থিত হয়ে নিরঞ্জন রায়ের পরিবারের কাছ থেকে ৪০ হাজার টাকা দাবী করে তা আদায় করে নেয়।

পরে দুজনকে ১নং নশরতপুর ইউপি চেয়ারম্যান কার্যালয়ে হস্তান্তর করেন। তাদেরকে ইউনিয়ন কার্যালয়ে নিয়ে আসলে চেয়ারম্যান আব্দুল ওহাব এ ঘটনায় ছেলে পক্ষের কাছ থেকে মেয়ে পক্ষকে ক্ষতিপূরণ বাবদ ১ লক্ষ টাকা দিয়ে তাদের দুজনকে নিজ নিজ পরিবারের কাছে হস্তান্তর করেন।

পরে রাত অনুমানিক ২ঘটিকার দিকে বাড়িতে ফিরে লাভলী বেগম (৩১) লোকলজ্জার ভয়ে বিষপানে আত্নহত্যার চেষ্টা করলে পরিবারের লোকজন টেরপেয়ে চিরিরবন্দর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স-এ নিয়ে যায়।

পরে চিকিৎসাধীন অবস্থায় সোমবার সকালে লাভলী বেগম (৩১) এর মৃত্যু হয়।

এ বিষয়ে পরিবারের পক্ষ থেকে আত্মহত্যার ব্যাপারে জানাতে চাইলে তারা জানায় “চেয়ারম্যানের কাছে গিয়ে শালিশের কারনে মানসম্মানের ক্ষতি হওয়ায় মানসিকভাবে সেটি সহ্য করতে না পেরে লাভলী বেগম আত্মহত্যা করে”।

নশরতপুর ইউপি চেয়ারম্যান আব্দুল ওহাব বলেন, “আমি শালিশের মাধ্যমে দুই পক্ষকে বসিয়ে উভয় পক্ষের সমর্থনে ছেলে পক্ষের কাছ থেকে ১ লক্ষ টাকা নিয়ে মেয়ে পক্ষকে দিয়েছি। তবে মেম্বার ও গ্রাম পুলিশের বিরুদ্ধে যে টাকা নেয়ার অভিযোগ উঠেছে সে সম্পর্কে আমি কিছু জানিনা”।

চিরিরবন্দর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মোঃ বজলুর রশিদ আত্মহত্যার বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, “এ বিষয়ে একটি ইউডি মামলা হয়েছে। আমি ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছি। লাশ ময়না তদন্তের পর পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। এ বিষয়ে পরবর্তীতে কোন অভিযোগ পেলে আইননুগ ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে”।