ঢাকা | ডিসেম্বর ২৪, ২০২৪ - ৫:৫৯ পূর্বাহ্ন

সংবাদ শিরোনামঃ

দাবি পূরণ না হলেই মামলা: প্রেমের সম্পর্কের পর বিয়ে অতঃপর প্রতারণা

  • দৈনিক নবোদয় ডট কম
  • আপডেট: Sunday, September 24, 2023 - 3:30 pm
  • News Editor
  • পঠিত হয়েছে: 64 বার

নিজস্ব প্রতিবেদক:বেসরকারি সংস্থার কর্মকর্তার সঙ্গে গত বছর প্রেমের সম্পর্কের পর বিয়ে হয় বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত ফিনল্যান্ডের নাগরিক কুলসুম আসাদী মহল সাধনার। বিয়ের মাসখানেক পরই স্বামীর কাছে মোটা অঙ্কের অর্থ দাবি করতে থাকেন। চাপ দেন ব্যক্তিগত ব্যাংক অ্যাকাউন্টে ৩০ লাখ টাকা দেওয়ার। সংসার টেকাতে বিয়ের দুই মাস পর যৌথ অ্যাকাউন্টে ১৫ লাখ টাকা রাখেন স্বামী। এরপর দুই দফায় দেন আরও ১০ লাখ। এখন আবার মামলার জালেও ফাঁসছেন তিনি। শুধু একটি নয়, এমন ঘটনা অনেক। প্রত্যেকের কাছ থেকেই মামলা ও প্রতারণার মাধ্যমে হাতিয়ে নিয়েছেন টাকা। সাধনার দাবি, তিনিই প্রতারণার শিকার। তার বিরুদ্ধে উদ্দেশ্যমূলক অপপ্রচার চালানো হচ্ছে।

ভুক্তভোগী এক ব্যক্তি কালবেলাকে বলেন, বিয়ের কিছুদিন পরই স্ত্রী সাধনার বেআইনি, প্রতারণামূলক, বিয়েবহির্ভূত সম্পর্ক ও আদম ব্যবসা সম্পর্কে জানতে পারি। আগে একটি বিয়ে হয়েছিল এবং তার দুটি সন্তান আছে বলে বিয়ের আগে সেই বিষয়টিও জানানো হয়নি। বিয়ের পরে জানতে পারি আমি তার চতুর্থ স্বামী। এর আগে সে কাগজে-কলমে কমপক্ষে তিনটি বিয়ে এবং তিন-চারটি অনানুষ্ঠানিক বিয়ে করেছে। এ ধরনের বিভিন্ন সম্পর্ক থেকে সে ভয়ভীতি ও ব্ল্যাকমেইল করে অর্থ আদায় করেছে। মিথ্যা মামলা ও ভয়ভীতি দেখিয়ে টাকা উপার্জন করা তার ব্যবসা। সেই টাকা নিয়েছেন বিদেশে।

জানা যায়, এসএসসি পাস করার পর সাধনার প্রথম বিয়ে হয় সদ্য অবসরে যাওয়া সাবেক এক আমলার সঙ্গে। সেই বিয়ে এক মাসও টেকেনি। দ্বিতীয় বিয়ে করেন ১৯৯৬ সালে এক সহপাঠীকে। সেই সংসারে দুই সন্তান রয়েছে। ৯ বছর টিকেছিল সেই সংসার। তারপর সাধনা শুরু করে প্রেম, বিয়ের প্রতারণা। ২০০৬ সালে দ্বিতীয় ডির্ভোসের পরে কয়েকটি অনানুষ্ঠানিক বিয়ে করে। ২০১০ সালে বিয়ে করেন সাবেক এক সেনা কর্মকর্তাকে। আড়াই বছর ওই সংসারে ছিলেন। তৃতীয় স্বামীর কাছে টাকা দাবি করে তার বিরুদ্ধে নারী ও শিশু নির্যাতন আইনে মামলা করেছে। ওই স্বামীকে কারাগারে পাঠানোর পর মোটা অঙ্কের টাকার বিনিময়ে মামলা প্রত্যাহার করে।

ভুক্তভোগী সর্বশেষ স্বামীর অভিযোগ, এখন পর্যন্ত তার বিরুদ্ধে চারটি মামলা করেছে সাধনা। নারী ও শিশু ট্রাইব্যুনাল আদালতে নির্যাতনের অভিযোগ, যৌতুক আইনে, বিয়ে গোপন করে বিয়ে এবং খোরপোশ দাবিতে এসব মামলা হয়েছে। ২৬ জুন ঢাকার নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালে দায়ের করা মামলায় সে ভুয়া ও জাল মেডিকেল সার্টিফিকেট ব্যবহার করেছে। ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ তার জালিয়াতির বিষয় আদালতে জানিয়েছেন। তিনি বলেন, ১৮৭২ সালের বিশেষ বিবাহ আইনে বিয়ে হওয়ায় খোরপোশের কোনো বিধান নেই। তার সঙ্গে ১১ মাসের সংসারে একসঙ্গে ছিলাম ১৩ মে পর্যন্ত। এই সাত মাসের মধ্যে তিন মাসেরও বেশি সময় বিদেশে ছিলেন সাধনা। তিনি আরও বলেন, খেলা দেখা, বিভিন্ন ক্লাবে মদ্যপান এবং বন্ধুদের সঙ্গে আড্ডা দেওয়ার নাম করে সাধনা প্রায়ই নিরুদ্দেশ হয়ে যেতেন। এমনকি বন্ধুদের ডেকে গভীর রাত পর্যন্ত বাসায় মদ্যপানের আসর বসাতেন। প্রতিবাদ করলেই হুমকি-ধমকি দেওয়া হতো।

তার স্বামীর দাবি, ৫ জুন সাধনা আমার অনুপস্থিতিতে নিকেতনের বাসায় তালা ভেঙে প্রবেশ করে। মিথ্যা মামলায় ফাঁসানো ও ভাড়াটে গুন্ডা দিয়ে মারধরের হুমকি দিয়ে যাচ্ছে। জানুয়ারির শেষের দিকে ফিনল্যান্ডে চলে যান সাধনা। এক মাস পর হোয়াটসঅ্যাপে মেসেজের মাধ্যমে জানান তার যৌন রোগ গনরিয়া ধরা পড়েছে। ফিনল্যান্ডের হাসপাতালে করা এ-সংক্রান্ত মেডিকেল রিপোর্টও পাঠান। এই রোগ কীভাবে হলো জানতে চাইলে সদুত্তর দিতে পারেনি। অকথ্য ভাষায় গালাগাল করতে থাকে এবং মামলার হুমকি দেয়।

কুলসুম আসাদী মহল সাধনা বলেন, আমি চতুরতা, অভিনয়, মিথ্যাচার, প্রতারণার শিকার হয়েছি। শারীরিক নির্যাতনের সঙ্গে নতুন করে যুক্ত হয় অর্থ দাবি। আমার নিজস্ব আয় থেকে প্রতি মাসে সংসার খরচ হিসেবে নির্দিষ্ট পরিমাণ টাকা তার হাতে দিতে হবে দাবি করে। চরিত্র নিয়ে কুৎসা রটানো শুরু করে।

আমাকে বিয়ে ব্যবসায়ী, দেহ ব্যবসায়ী বলার সঙ্গে অশ্লীল ভিডিওর ব্ল্যাকমেইলিংয়ের কথা বলে। ‘বাসা ভাড়ার কন্ট্রাক্ট স্বামীর নামে’—এই অজুহাতে গুলশান থানা পুলিশ দিয়ে স্ত্রী হওয়া সত্ত্বেও আমাকে বাসা থেকে উচ্ছেদের ব্যবস্থা করে। গুলশান থানায় আমার বিরুদ্ধে চুরির মামলা করা হয়। প্রভাব খাটিয়ে সরকারি এজেন্সিগুলো ব্যবহার করে মামলার প্রমাণ ম্যানুপুলেট করছে। সত্যকে মিথ্যা বানানোর অপচেষ্টায় লিপ্ত আছে। প্রথম স্ত্রীর মামলা থেকে বাঁচতে এসব মিথ্যা তথ্যে ছড়াচ্ছে বলেও দাবি করেন তিনি।