ওসি তদন্ত, এসআই ও দুই ইউপি সদস্যের বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলায় ফাঁসানোর অভিযোগ
মল্লিক জামাল:-বরগুনার তালতলী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শহিদুল ইসলাম খানের বিরুদ্ধে ১০ হাজার টাকা ঘুষ নিয়ে মিথ্যা মামলা নেওয়া ও ইউপি চেয়ারম্যান মো.বাচ্চু মিয়ার নির্বাচন না করায় মিথ্যা মামলায় ফাঁসিয়ে দেওয়ার অভিযোগে সংবাদ সম্মেলন ও মানববন্ধন করেছে ভুক্তভোগি পরিবারসহ এলাকাবাসী। এছাড়াও ওসি তদন্ত, এসআই ও দুই ইউপি সদস্যের বিরুদ্ধে টাকা ও স্বর্ণালঙ্কার লুটের অভিযোগের বিচারের দাবি জানিয়েছে এলাকাবাসী।
বুধবার (১১ অক্টোবর) বেলা ১১ টার দিকে উপজেলার নিশানবাড়িয়া ইউনিয়নের মেনিপাড়া এলাকায় ভুক্তভোগি পনু ঘরামীর স্ত্রী সাহেরা বেগম সংবাদ সম্মেলন করেন। একই ঘটনায় এলাকাবাসি সংবাদ সম্মেলনের পরে মানববন্ধন কর্মসূচী পালন করেন।
সংবাদ সম্মেলন সূত্রে জানা যায়, মসজিদ-মাদ্রাসার কমিটি ও নিশানবাড়িয়া ইউনিয়নের বর্তমান চেয়ারম্যান মো. বাচ্চু মিয়া ও ইউপি সদস্য জসিমের নির্বাচনে সর্মথন না করার কারণে মুদি দোকানদার পনু ঘরামীর সাথে দীর্ঘদিন যাবৎ বিরোধ চলে আসছিলো। এরই জের ধরে গত ৭ অক্টোবর পার্শবর্তী মরা নিদ্রা এলাকার ৭ম শ্রেনীর এক স্কুল ছাত্রী পনু ঘরামীর মুদি দোকানে ঝালমুড়ি ক্রয় করতে আসেন। এসময় ঐ স্কুল ছাত্রী পিছলে পড়ে যাওয়াকে কেন্দ্র করে পনু ঘরামীর বিরুদ্ধে যৌন নিপীড়নের অভিযোগ এনে এলাকায় শালিস ডাকেন ইউপি সদস্য জসিম ও চেয়ারম্যান বাচ্চু মিয়া। সেখানে যৌন নিপীড়নের মামলা থেকে রেহাই পেতে ৫ লাখ টাকা দাবি করা হয়। এই টাকা না দেওয়ার কারণে ইউপি সদস্য জসিম ও জামাল খানের যোগসাযোসে গত ৮ অক্টোবর রাত আনুমানিক ১টার দিকে বিনা অভিযোগে ওসি তদন্ত রনজিত কুমার সরকার ও এসআই আবু জাফর যৌন নিপীড়নের অভিযুক্ত করা পনু ঘরামীকে ধরতে তার বাড়ি যায়। সেখানে পনু ঘরামীকে না পেয়ে তার বাড়িতে তল্লাসি করে ঘরের বিভিন্ন মালামাল ভাংচুর করে ২ লাখ ৫০ হাজার টাকা ও গলার চেইন, হাতের আংটি নিয়ে আসেন দুই ইউপি সদস্য, ওসি তদন্ত ও এসআই। পরে তারা এই ঘটনা কোথাও বলাবলি করলে তোর স্বামীকে মিথ্যা মামলা দিয়ে ফঁাসিয়ে দেয়া হবে বলে সাহেরা বেগমকে হুমকি দিয়ে চলে আসেন। এই ঘটনা জানাজানি হলে গত ৯ অক্টোবর সন্ধ্যার দিকে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শহিদুল ইসলাম খান, ওসি তদন্ত রনজিত কুমার সরকার ও এসআই আবু জাফরসহ পুলিশের একটি টিম পনু ঘরামীর বাড়িতে গিয়ে বিষয়টি মিমাংশা করার কথা বলেন। আর এই বিষয়ে কোনো মামলা হবে না বলে ১০ হাজার টাকা ঘুষ নিয়ে আসেন। পরে ১০ অক্টোবর বর্তমান চেয়ারম্যান মো. বাচ্চু মিয়া ঐ স্কুল ছাত্রীর বাবাকে দিয়ে পনু ঘরামীর বিরুদ্ধে যৌন নিপীড়নের অভিযোগ এনে একটি মিথ্যা মামলা দায়ের করেন। প্রধানমন্ত্রীর কাছে এই বিষয়গুলো তদন্ত করে সঠিক বিচারের দাবি জানিয়েছে ভুক্তভোগি পরিবার ও এলাকাবাসি।
এ বিষয়ে ইউপি চেয়ারম্যান মো.বাচ্চু মিয়া বলেন, যৌন নিপীড়নের ঘটনাটি মিমাংসা করার জন্য কয়েকবার আসতে বলায় তারা আসেনি। এ ঘটনাটি ধামাচাপা দেয়ার জন্য তারা সংবাদ সম্মেলন করেছে।
তালতলী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শহিদুল ইসলাম খান বলেন, এই মামলা থেকে বাঁচতে তারা পুলিশের বিরুদ্ধে সংবাদ সম্মেলন ও মানববন্ধন করেছেন। অভিযোগ ছাড়া রাত ১ টায় পনু ঘরামীর বাসায় কোনো পুলিশ যায়নি।
বরগুনা পুলিশ সুপার আবদুস সালাম বলেন,এই বিষয়টি আমি জানি না। আমাকে কেউ জানায়নি। এজন্য আমি না জেনে কোনো মন্তব্য করতে পারবো না। ####### তারিখ-১১-১০-২০২৩ইং