আন্দোলনে লক্ষ্মীপুরের নিহত ১৬ জন
বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সময় লক্ষ্মীপুরের ১৬ জন সন্তান গুলিবিদ্ধ হয়ে মারা গেছেন। এরমধ্যে লক্ষ্মীপুরে আন্দোলন করে ৪ জন ও বাকি ১২ জন রাজধানী ঢাকাসহ বিভিন্ন এলাকায় মারা গেছেন।
সোমবার (২৩ সেপ্টেম্বর) সন্ধ্যায় লক্ষ্মীপুর পুলিশ অফিসার্স মেসের নতুন ভবনের অস্থায়ী সেনা ক্যাম্পে সংবাদ সম্মেলনে বৈষম্য বিরোধী আন্দোলনের সমন্বয়করা এ তথ্য জানিয়েছেন। তবে তারা ঢাকায় নিহত ১২ জনের পূর্ণাঙ্গ তথ্য নিশ্চিত করেননি গণমাধ্যমকে।
সংবাদ সম্মেলনে বক্তব্য রাখেন বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের লক্ষ্মীপুরে দায়িত্বপ্রাপ্ত সমন্বয়ক মাফরাজ হোসেন, সারোয়ার হোসেন, এনামুল হক, মাহেদুর রহমান রাফি ও বায়েজিদ হোসেন প্রমুখ।
জানা গেছে, ৪ আগস্ট লক্ষ্মীপুরে আওয়ামী লীগ, যুবলীগ ও ছাত্রলীগের নেতাকর্মীদের গুলিতে বৈষম্য বিরোধী আন্দোলনের ৪ শিক্ষার্থী মারা গেছেন। তারা হলেন আল আসাদ আফনান, সাব্বির হোসেন রাসেল, কাউসার হোসেন, ওসমান গণি।
এরমধ্যে আফনান শহরের মাদাম ব্রিজ ও অন্যরা তমিজ মার্কেট এলাকায় গুলিবিদ্ধ হয়ে মারা যায়। এছাড়া রাজধানী ঢাকায় ২১ জুলাই যাত্রাবাড়ি এলাকায় স্যানিটারি মিস্ত্রি মো. ফয়েজ, ২০ জুলাই শনির আখড়ায় কসমেটিকস দোকানের কর্মচারী ইউনুস আলী শাওন, ১৮ জুলাই উত্তরা ডিএনসিসির সামনে ঢাকার মানারত ইউনিভার্সিটির ছাত্র শাকিল পারভেজ, ৫ আগস্ট ঢাকায় ইসলামী আন্দোলনের নেতা আলী আজগর মাসরুর গুলিবিদ্ধ হয়ে মারা যান। ৪ আগস্ট মিরপুর ১০ নাম্বারে মাথায় গুলিবিদ্ধ হয়ে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ১২ সেপ্টেম্বর থাই গ্লাসের মিস্ত্রি পারভেজ হোসেন গুলিবিদ্ধ হয়ে মারা যায়। নিহতের স্বজনরা বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তবে নিহত বাকি ৭ জনের নাম জানা যায়নি।
সমন্বয়ক মাফরাজ হোসেন বলেন, লক্ষ্মীপুরের ১৬ জন সন্তান বৈষম্য বিরোধী আন্দোলনে শহিদ হয়েছেন। এছাড়া গুলিবিদ্ধসহ বিভিন্নভাবে প্রায় ১৩০ জন আহত হয়েছেন। তাদের অধিকাংশের চিকিৎসা চলমান রয়েছে। আমরা মন্ত্রণালয়ের নির্দেশ তা তদন্ত করে সঠিক তালিকা তৈরি করেছি। পরবর্তীতে তা লক্ষ্মীপুর জেলা প্রশাসকের মাধ্যমে মন্ত্রণালয়ে প্রেরণ করা হয়েছে। আহতদের আরও উন্নত চিকিৎসা দেওয়ার জন্য সরকারের সহযোগিতা চেয়েছেন তারা।
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়করা সংবাদ সম্মেলনে বলেন, ৫ আগস্ট গণ অভ্যুত্থানের পর থেকে তারা প্রশাসনের সঙ্গে যৌথভাবে কাজ করে যাচ্ছেন। এরমধ্যে লক্ষ্মীপুরে বন্যা পরিস্থিতিতে প্রত্যন্ত অঞ্চলে গিয়ে প্রশাসনের সঙ্গে পানিবন্দিদের মাঝে খাদ্য সহায়তা বিতরণ করা হয়েছে। এখনো মানুষ পানিবন্দী রয়েছে। এটি কৃত্রিম বা মানবসৃষ্ট বন্যা। খালবিল দখল ও অবৈধ বাঁধের কারণে এখনো পানিবন্দি হয়ে রয়েছে বিভিন্ন এলাকার মানুষ। আমরা প্রশাসনকে সহযোগীতা করে ১৮ টি বাঁধ অপসারণ করেছি। এছাড়া ২৭৩টি বাঁধ চিহ্নিত করা হয়েছে। খুব শিগগিরই আমরা রহমতখালী খাল, ওয়াপদা খাল ও ভুলুয়া নদীতে থাকা অবৈধ বাঁধ অপসারণে প্রশাসনের সঙ্গে যৌথভাবে কাজ করবো। পানিবন্দি সাড়ে ৪ লাখ পরিবারকে খাদ্য সহায়তা দেওয়া হয়েছে। এছাড়া ২৫ হাজার শিশুর জন্য শিশুখাদ্য বিতরণ করা হয়েছে।
তারা আরও বলেন, সামনে দূর্গা পূজা। এসময় হিন্দু সম্প্রদায়ের পূজার জন্য নির্মিত মূর্তিগুলো পাহারা দিতে আমরা কাজ করছি। পূজার সময়ও নিরাপত্তা দিতে প্রশাসনের সঙ্গে আমরা কাজ করবো। এছাড়া পুলিশ যেন সততার সঙ্গে সক্রিয়ভাবে কাজ করতে পারে, সেজন্য বিভিন্ন সময় আমরা তাদেরকে সহযোগিতা করে যাচ্ছি।