কেরানীগঞ্জে পরীক্ষার হলে শিক্ষক শিক্ষিকার মারামারি
কেরানীগঞ্জ (ঢাকা) প্রতিনিধি:ঢাকার দক্ষিণ কেরানীগঞ্জের বাঘৈর হাইস্কুলে বার্ষিক পরীক্ষা চলাকালীন সময় পরিক্ষার হলে সহকারী শিক্ষক আল-আমীন ও সহকারী শিক্ষিকা আশা রহমানের মধ্যে মারামারি ও হাতাহাতির ঘটনা ঘটেছে। এঘটনায় অভিযুক্ত সহকারী শিক্ষক আল-আমীন বিচারের করেছেন শিক্ষার্থী।
আজ রবিবার দুপুর ১টায় দক্ষিণ কেরানীগঞ্জের তেঘরিয়া ইউনিয়নের বাঘৈর হাইস্কুলে বার্ষিক পরীক্ষা চলাকালীন সময় এই ঘটনাটি ঘটে।
ঘটনার বিষয়ে বাঘৈর হাইস্কুলে সহকারী শিক্ষিকা আশা রহমান জানান, স্কুলে সকল শিক্ষক শিক্ষিকা প্রধান শিক্ষকের মেয়ে এবং মেয়ের জামাই কাছে জিম্মি। তাদের কথা মত না চললেই হুমকি। পূর্ব শত্রুতার জেরে আজকে ষষ্ঠ শ্রেণি ইংরেজি পরীক্ষা চলাকালীন সময় পরিক্ষা রুমে আল-আমীন স্যার আমাকে তুই-তোকারি করে অকথ্য ভাষায় গালাগালি করেন। এবং আমি অন্তঃসত্ত্বা হওয়ার সত্ত্বেও আমার গায়ে হাত তুলেন। নিজের আত্মরক্ষার জন্য আমার স্বামীকে ফোন দিয়ে নিয়ে আসলে প্রধান শিক্ষক বহিরাগত লোকজন স্কুলে এনে আমার স্বামীকে আক্রমণের চেষ্টা করে। এবং স্কুলের সিসি ক্যামেরা বন্ধ করে দেয়। আমি এই বিষয়ে উপজেলা শিক্ষা অফিসার কাছে লিখিত অভিযোগ দিতে এসেছি।
এবিষয়ে বাঘৈর হাইস্কুলে শিক্ষক আল-আমীনকে মুঠোফোন একাধিক যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও যোগাযোগ সম্ভব হয়নি।
শিক্ষার্থী জানান, পরিক্ষার চলাকালীন সময়ে আল-আমীন স্যার আশা মেডামকে অকথ্য ভাষায় গালাগালি করেন এবং তাদের মধ্যে হাতাহাতিও হয়।এতে অন্তঃসত্ত্বা আশা মেডাম শরীর আঘাত পায়। আমরা আল-আমীন স্যারের এই অন্যায়ের বিচারের দাবি জানাচ্ছি। আল-আমীন স্যার ও তার স্ত্রী তাসলিমা মেডাম বিভিন্ন সময় শিক্ষার্থীদের সাথে খারাপ আচরণ ও অকথ্য ভাষায় গালাগালি করেন। আমরা শিক্ষার্থী তাদের দুইজনকে স্কুল থেকে বহিষ্কারের দাবি জানাচ্ছি।
অভিভাবকরা জানান, দীর্ঘদিন ধরে বাঘৈর হাইস্কুল পরিবারতন্ত্রের কাছে জিম্মি হয়ে আছে। প্রধান শিক্ষক আওয়ামিলীগের প্রভাব খাটিয়ে তার মেয়েকে স্কুলের অফিস সহকারী পদে চাকরি ব্যবস্থা করে। অফিস সহকারী পদে থেকেই সকল শিক্ষকদের তার নির্দেশেই চলতে হয়। স্কুলের সকল শিক্ষক শিক্ষিকা প্রধান শিক্ষক ও তার মেয়ের কাছে জিম্মি হয়ে যায়। তাদের কথার বাহিরে গেলেই হুমকি। প্রধান শিক্ষকের অপকর্মের বিষয়ে জেনে যাওয়া স্কুলের সহকারী প্রধান শিক্ষক সুমন বাড়ৈকে স্কুল থেকে পিটিয়ে বের করে দেয়। শশুর, জামাই, বউয়ের নিয়ন্ত্রণে বাঘৈর হাইস্কুল।
স্থানীয়রা জানান, প্রধান শিক্ষক আবুল মনসুর আহমেদ তার মেয়েকে অফিস সহকারী পদে চাকরি দেওয়া পরও আবার মেয়ের জামাই আল-আমীনকে কৌশলে স্কুল শিক্ষক হিসাবে নিয়োগ দেন। এখন মেয়ে আর মেয়ের জামাই নিজের ইচ্ছে মত স্কুল পরিচালনা করেন। তেঘরিয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানের বোন জামাই হওয়ার এলাকার লোকজন স্কুলে গিয়ে কোন কথা বলতে পারে না। ইউপি চেয়ারম্যান প্রভাবখাটি প্রধান শিক্ষক বাঘৈর হাইস্কুলকে পরিবারতন্ত্র করে রেখেছে।
এবিষয়ে বাঘৈর হাইস্কুলে প্রধান শিক্ষক আবুল মনসুর আহমেদ বলেন, এই অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনাটি এলাকার গণ্যমান্য ব্যক্তিরা সমাধান করে দিয়েছে।
কেরানীগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা রিনাত ফৌজিয়া বলেন, শিক্ষকদের এ ধরনের দ্বন্দ্ব অপ্রত্যাশিত। কোমলমতি শিক্ষার্থীদের মাঝে এর প্রভাব পড়বে। বিষয়টি তদন্ত করে জরুরি ভিত্তিতে ব্যবস্থা নেয়া হবে।