শীতে মানবতার সেবায় অনন্য দৃষ্টান্ত যুক্তরাষ্ট্র ভিত্তিক সংগঠন সাবা’র
লিয়াকত হোসেন রাজশাহী ব্যুরোঃ রাজধানীসহ সারাদেশে শীত জেঁকে বসেছে। হিম হিম ঠাণ্ডা আর কুয়াশায় নাকাল সকলশ্রেণীর মানুষের জনজীবন।শীতের এই তীব্রতা বেশি কাবু করে দিয়েছে নিম্নশ্রেণীর আয়ের মানুষদের। শীতার্ত অসহায় ও দুস্থ মানুষের উষ্ণতা দিতে সামাজিক দায়বদ্ধতা থেকে পাশে দাঁড়িয়েছে যুক্তরাষ্ট্র ভিত্তিক সংগঠন সোশ্যাল এসোসিয়েশন ফর বাংলাদেশ এ্যাডভান্সমেন্ট-সাবা। বিগত কয়েকদিনে অসহায়-দুস্থ মানুষের মাঝে প্রায় ৫ শতাধিক কম্বলসহ শীতের নানা উপকরণ বিতরণ করেছে।
বিশেষ করে উত্তারঞ্চলে শীতের প্রকোপ বেশি থাকায়, এই অঞ্চলের মানুষের পাশে দাঁড়িয়েছে তারা।
রাজশাহীর খোলা আকাশের নিচে বাস করা হাজারো ছিন্নমূল মানুষ শীতে কাতরাচ্ছে।
তাদের নেই কোন শীত নিবারণের জন্য মোটা পোশাক বা কম্বল, তাদের শীত নিবারণের জন্য পাশে দাড়িয়েছে যুক্তরাষ্ট্র ভিত্তিক সংগঠন সোশ্যাল এসোসিয়েশন ফর বাংলাদেশ এ্যাডভান্সমেন্ট-সাবা নামে এক সংগঠন। গত ২৮ ডিসেস্বর থেকে সাবা’ সংগঠনের পক্ষ থেকে রাজশাহীর রেল স্টেশন থেকে তলাইমারী, কোর্ট, সিএনবি দরগা সহ বিভিন্ন এলাকায় সড়কে থাকা দুই শতাধিক মানুষের মাঝে কম্বল বিতরণ করে।
একইভাবে এতিম শিশু,যারা কোরআনের হাফেজ হতে মাদ্রাসায় পড়াশুনা করে,অনাথ এই সব ছেলেদের প্রতি সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দিয়েছে সংগঠনটি।সাবা গত ৩১ ডিসেম্বর রাজশাহীর কয়েরদারা ও ১ জানুুয়ারী বিনোদপুরে মাদ্রাসায় শতাধিক ছাত্রদের মসঝে কম্বল বিতরণ করা হয়। একই সাথে করোনা সচেতনতায় সাধারণ মানুষকে উদ্বুদ্ধ করার লক্ষে মাস্ক বিতরণ করা হয়।
এসময় উপস্থিত ছিলেন রাবির শিক্ষক ড.নাজরুল ইসলাম, প্রফেসর এম.এ.রাশেদ(লিখন),সাংবাদিক রফিকুল ইসলাম,সাংবাদিক তানভির (অপু),এডভোকেট সোহাগ,সাবা’র বাংলাদেশের পরিচালক এস এম এমদাদুর রহমান এবং এস এম সোহানর রহমান।
এর আগে গত ২৫ ডিসেম্বর প্রায় দুই শতাধিক প্রতিবন্ধী, পথশিশু ও সুবিধাবঞ্চিত মানুষকে শীত থেকে পরিত্রাণ পেতে কম্বল দেয়। কনকনে ঠান্ডায় পদ্মা পাড়ের হতদরিদ্র মানুষ শীতের কম্বল পেয়ে মহাখুুশি। দোয়া করেন সাবার সকলের জন্য।
সাবা’র প্রতিষ্ঠাতা ও নিউজবিডিইউএস’র সম্পাদক এস এম জাহিদুর রহমান জানান, শীতে সারা দেশের অসহায় মানুষ খুবই কষ্টে দিনতিপাত করছে। শীতের কষ্ট লাঘবে কম্বলসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় উপকরণ বিতরণ করেছি। এই ধারা অব্যাহত থাকবে বলেও জানান তিনি। এসময় সমাজের বিত্তবানদের অসহায় ও দুস্থদের পাশে দাঁড়ানোর কথা বলেন তিনি।
চলতি বছরের মার্চে যুক্তরাষ্ট্র প্রবাসী সাংবাদিক জাহিদুর রহমানের উদ্যোগে বেশ কয়েকজন প্রবাসী বাংলাদেশী মিলে দুস্থ-অসহায় ও দেশ-জাতির কল্যাণের নিঃস্বর্থে কাজ করতে সাবা’র কার্যক্রম শুরু করে। বিশেষ করে সারা বিশ্বে করোনা মহামারীতে অসহায় মানুষের কথা ভেবে পথচলা শুরু করে তারা।
খুব দ্রুততম সময়ের মধ্যে দেশের মানুষের সহযোগিতা করে বেশ সাড়া ফেলে। বিশেষ করে উত্তারঞ্চলে সাবা’র কার্যক্রম দেখে অত্যন্ত খুশি সাধারণ মানুষ।
ইতোমধ্যে কয়েক হাজার দুস্থ মানুষের মাঝে খাবার বিতরণ করেছে। গত আগষ্টে উত্তারঞ্চলে বন্যা কবলিত হাজারখানিক ক্ষতিগ্রস্ত মানুষকে চাল, ডাল, আলুসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় খাদ্যসমগ্রী দিয়ে সহযোগিতা করে সাবা।
এছাড়া কর্মসংস্থানের জন্য মহিলাদেরকে সেলাই মেশিন কিনে দিয়েছে সেবামূলক সংগঠনটি। করোনা দুর্যোগে কয়েক শতাধিক শিক্ষার্থীদের মাঝে শিক্ষা ও খাদ্য সামগ্রী দিয়েছে। এমনকি বেশ কয়েকজন শিক্ষার্থীদের লেখাপড়ার ব্যয়ভর গ্রহণের দায়িত্ব নিয়েছে তারা। আর করোনা সংকটকালে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকদের মাধ্যমে দেশব্যাপী সাধারণ মানুষকে দিচ্ছে ফ্রি টেলিহেলথ সেবা।