পটুয়াখালীতে নির্মানাধীন বসতঘরে হামলায় নারী আহত,
মু,হেলাল আহম্মেদ(রিপন)পটুয়াখালী জেলা প্রতিনিধিঃপটুয়াখালী সদর উপজেলার বদরপুর ইউনিয়নের টেংরাখালী গ্রামে সন্ত্রাসী হামলা চালিয়ে নির্মানাধীন বসতঘর ভাংচুর ও সীমানা পিলার উঠিয়ে ফেলার অভিযোগ পাওয়া গেছে। একই সাথে ৫০ হাজার টাকা চাঁদা দাবির অভিযোগ করেন মোসাঃ রওশনারা বেগম (৪০), স্বামী খলিলুর রহমান।
অভিযুক্তরা হলেন, (১). আলতাফ মৃধা (৫০), পিতাঃ কাঞ্চন মৃধা, (২). শাহজাহান মৃধা (৭০), পিতাঃ মৃত কাছেম মৃধা, (৩).কাওছার (৩০). পিতাঃ ছত্তার কসাই, (৪).নেয়াম (২৫). (৫).মিলন মৃধা (৩০).উভয় পিতাঃ শাহজাহান মৃধা, (৬) মিরাজ (১৮), পিতাঃ রশিদ মৃধা, (৭). সুমন (২২), পিতাঃ খলেক মৃধা, (৮)বাদল মৃধা (২০), পিতাঃ জালাল মৃধা, (৯). আল-আমিন (২৫), পিতাঃ ওহাব মৃধা, (১০). আবুল বাসার (১৮), পিতাঃ হানিফ মৃধা সহ অজ্ঞাত ১০-১৫ জন এ হামলা ও ভাংচুর চালায়।
এ ব্যপারে ভুক্তভোগী রওশনারা বলেন, এলাকার সাবেক মেম্বার রওশনারার কাছ থেকে জমি ক্রয় করেছি। গত ২০ বছর পর্যন্ত ঐ জমিতে বসবাস করতেছি মেম্বার রওশনারা তার রোপনকৃত গাছপালা কেটে নিয়ে বিক্রি করেন। পরে ক্রয়কৃত জমি বুজে নিয়ে নতুন বসতঘর নির্মান কাজ করেন। এ সময় একই এলাকার আলতাফ মৃধা ও শাহজাহান মৃধা জমিতে বাঁধা প্রদান করে ৫০ হাজার টাকা চাঁদা দাবি করেন। চাঁদার টাকা না দেয়ায় ঘটনার দিন গত ১০’জুলাই সোমবার আনুমানিক বিকেল সাড়ে পাঁচটার সময় আলতাফ মৃধার নেতৃত্বে ২০-২৫ জন সঙ্ঘবদ্ধ হয়ে দেশীয় অস্ত্র রামদা, লোহার রড ও লাঠিসোঁটা নিয়ে নির্মানাধীন বসতঘর ভাংচুর করে এবং জমির সীমানা পিলার উঠিয়ে ফেলা দেয়। তিনি আরও বলেন, খবর পেয়ে আমি ও আমার মেয়ে ছুটে আসলে অস্ত্রের ভয় দেখিয়ে মারধর করে এবং গলার চেইন ছিনিয়ে নিয়ে যায়। আমাদের ডাকচিৎকারে আশে পাশের লোকজন ছুটে আসলে সবাইকে অস্ত্র হাতে মহরা দিয়ে ভয়ভীতি দেখানো হয়। এছাড়াও আমার রক্ত দিয়ে গোসল করবে বলে হুমকি দিয়েছে আলতাফ মৃধা। বিষয়টি সদর থানায় অবগত করলে এস,আই ফয়সাল ঘটনাস্থলে যান।তবে এবিষয়ে ভুক্তভোগী কোন প্রকার প্রতিকার পায়নী বলে জানান।
উক্ত ঘটনার বিষয় আরো জানা যায়, অদ্য ৩১ জুলাই জমিজমাকে কেন্দ্র করে উভয়পক্ষে মারামারি হয় এতে ভুক্তভোগী রওশনআরা বেগম গুরুতর আহত হয়ে সদর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় আছে।
ঘটনার সময় উপস্থিত একাধিক প্রতিবেশীরা বলেন, এই জমিতে সাবেক মেম্বারের ঘরবাড়ি ছিলো ২০ বছরেরও বেশি। তিনিও আরেক জনের কাছ থেকে জমি কিনে বাড়িঘর করে থাকতেন। পরে রওশনারার কাছে জমি বিক্রি করেন। এছাড়াও হামলায় ভাংচুর করার ঘটনা সবাই দেখেছে তারা আহত হওয়ার ভয়ে দুরে দাড়িয়ে থেকে প্রতিবাদ করেন। এসময় হামলাকারীরা সবাইকে ভয় দেখিয়ে বলেন কেউ সাক্ষী দিলে তাদেরও কাউকেই ছাড় দেয়া হবে না। প্রতিবেশীদের দাবি রওশনারা গরীব তার স্বামী বাদাম বিক্রি করে খায়। বহু কষ্টে এই তিনকাঠা জমি কিনেছেন সেটাও প্রভাবশালীরা দখল করতে চায়। এমন ঘটনায় আতংকিত আশেপাশের বসবাসকারী নারী, পুরুষ ও শিশুরা। এলাকায় অস্ত্রের মহরা দিয়ে সন্ত্রাসী কার্যকলাপে যারা লিপ্ত তাদের আইনের আওতায় আনার দাবি জানান এলাকাবাসী।
এবিষয়ে জমির দাতা সাবেক মেম্বার রওশনারা বলেন, আমি জমি কিনে বাড়িঘর করে ২০ বছর সেখানে থেকেছি গাছপালা রোপন করেছি। সেই জমি বর্তমানে খলিলের স্ত্রী রওশনারার কাছে বিক্রি করে তাকে বুজিয়ে দিয়েছি। এরপর তার উপরে এরকম হামলা হয়েছে। এটা সত্যিই দুঃখজনক ও অপরাধ। আইনের মাধ্যমে এর সঠিক বিচার হওয়া উচিত বলে জানান তিনি।
অভিযুক্ত আলতাফ মৃধা অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, ঐ জমিতে আমার ও শাহজাহান মৃধাদের অংশীদারি আছে তাই আমরা জমি দাবি করি চাঁদা দাবি করিনি। সেখানে কোন ভাংচুর মারামারি হয়নি। কার চেইন কে নিয়েছে সেটা আমি বলতে পারিনা। এসময় তার স্ত্রী ও মেয়ে বলেন, কোর্টে মামলা দিয়েছে আমরা মামলায় আদালতে জবাব দিবো।অন্য অভিযুক্ত শাহজাহান মৃধাকে ঘটনাস্থলে পাওয়া যায়নি তার মুঠোফোনে একাধিকবার কল দিলেও কল রিসিভ না করায় কোন বক্তব্য পাওয়া যায়নি।
এ বিষয় বদরপুর ইউনিয়নের ভারপ্রাপ্ত প্যানেল চেয়ারম্যান শিহাব আহম্মেদ বলেন,আমি শুনেছি দুপক্ষে মারামারি হয়েছে হাসপাতালে ভর্তি আছে। একপক্ষ ঘড় উত্তোলন করেছে তা অপর পক্ষ ভেঙে দিয়েছে। ইউনিয়ন পরিষদে কেউ না আসলে কোন ভাবেই মিমাংসা করা সম্ভব না বলে জানান।
উক্ত ঘটনার ব্যপারে পটুয়াখালী সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা অফিসার ইনচার্জ ওসি জসিম উদ্দিন জানান,অভিযোগ পেয়েছি ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠানো হয়েছে তদন্ত সাপেক্ষে আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হবে বলে জানান তিনি।