ঢাকা | জানুয়ারী ১১, ২০২৫ - ৩:০১ পূর্বাহ্ন

সংবাদ শিরোনামঃ

তানোরে আ’লীগ নেতাকে হত্যার হুমকিতে নিরাপত্তা চেয়ে বিভিন্ন দপ্তরে আবেদন

  • দৈনিক নবোদয় ডট কম
  • আপডেট: Saturday, August 17, 2024 - 4:26 pm
  • News Editor
  • পঠিত হয়েছে: 58 বার

সোহানুল হক পারভেজ রাজশাহী বিভাগীয় প্রধান: রাজশাহীর তানোরে লোমহর্ষক হত্যার স্বীকার হন জিয়ারুল। সেই হত্যার মুল হতো আ’লীগ নেতা মেম্বার আবুল হাসানের বিরুদ্ধে মামলা তুলে নিতে লাগাতর খুনের হুমকি দিয়ে যাচ্ছেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। জিয়ারুলের অনার্স পড়ুয়া ছেলে আতাউর হাসানসহ ১৫ জন এজহার ভুক্ত আসামীর নাম উল্লেখ করে গত ১৫ আগস্ট বৃহস্পতিবার উপজেলা নির্বাহীর দপ্তরে লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন। সেই অভিযোগের অনুলিপি বিভাগীয় কমিশনার, ডিআইজি রেঞ্জ, জেলা প্রশাসক (ডিসি), পুলিশ কমিশনার, র‌্যাব -৫, সি আইডি, ডিবির কার্যালয়, এনএসআই, ডিজিএফআই, রাজশাহী প্রেস ক্লাব, রাজশাহী টেলিভিশন জার্নালিস্ট এ্যাসোসিয়েশন, জাতীয় সাংবাদিক সংস্থা অহিংস ছাত্র আন্দোলন কমিটি, অফিসার ইনচার্জ

তানোরসহ স্থানীয় প্রেস ক্লাবে দেয়া হয়। নিরাপত্তার আবেদনের সাথে হত্যা মামলার এজহার ও হত্যার স্বীকার জিয়ারুলের রক্তাক্ত ছবিও দেয়া হয়। চলতি বছরের ২০ ফেব্রুয়ারী দিবাগত রাত প্রায় ৩ টার দিকে উপজলার তালন্দ ইউনিয়ন ইউপির বিলশহর গ্রামে হত্যার ঘটনাটি ঘটে। এঘটনায় আ’লীগ নেতা মেম্বার আবুল হাসানসহ ১৫ জনকে আসামী করে থানায় মামলা দায়ের করা হয়। বিভিন্ন এলাকা থেকে অভিযান চালিয়ে আসামীদের গ্রেফতার করা হয়। আসামীরা জামিনে আসার পর থেকেই মামলা তুলে নিতে হত্যা গুম অপহরণ সহ নানা হুমকি দিয়ে যাচ্ছেন। এতে করে নিহত জিয়ারুলের পরিবার চরম আতংকে দিন পার করছেন।

আবেদনে উল্লেখ, উপজেলার তালন্দ ইউনিয়ন ইউপির আ”লীগের সাধারণ সম্পাদক ও মেম্বার আবুল হাসানসহ ১৫ জন আসামী জেল থেকে জামিন পাওয়ার পর মামল তুলে নেয়ার জন্য পরিবারের লোকজনকে লাগাতার খুনের হুমি দিচ্ছেন। মামলা তুলে না নিলে একজনের পরিবর্তে ১০ জনকে খুন করা হবে। একজন খুন করে যখন জামিন পেয়েছি ১০ জন বা পরিবারের সকলকে খুন করেও জামিন পাব। একজনকে খুন করলে যে সাজা সকলকে খুন করলেও একই সাজা। সুতরাং বাকি জীবন বেচেঁ থাকতে চাইলে মামলা তুলে নিতে হবে। নইলে জিয়ারুলকে যেভাবে খুন করা হয়েছে তোদেরকে আরো ভয়াবহ নির্যাতন করে খুন করা হবে। আরো উল্লেখ আবেদন কারী আতাউর রাজশাহী সিটি কলেজে প্রথম বর্ষে প্রাণীবিদ্যা বিভাগে পড়ালেখা করে। এছাড়াও তার দুজন নাবালক সহোদর ভাই আছে। বিভিন্ন কাজে প্রায় নিয়মিত তানোর রাজশাহী যাতায়াত করা হয়। মা নাবালক সহোদর ভাই দের নিয়ে চরম আতংকে দিন পার করেন।

হত্যা মামলার প্রধান আসামী আ’লীগ নেতা মেম্বার আবুল হাসানের ০১৭১৩৭৬৭৪৫০ মোবাইল নম্বরে ফোন দিয়ে হুমকির বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি জানান, তারা লালপুর বাজারে মানিক নামের এক ব্যক্তির দোকান পুড়িয়ে দিয়েছে। এঘটনায় অভিযোগ করা হয়েছে, বাঁচতে এসব মিথ্যা অভিযোগ করছে।

হত্যা মামলার বাদী রবিউল ইসলাম বলেন, হাসানসহ আসামীরা জামিনে আসার পর থেকে মামলা তুলে নিতে একের পর এক হুমকি দিচ্ছেন। এমনকি এক খুনের পরিবর্তে ১০ খুন করা হবে। কারন এক খুনের যে সাজা ১০ খুনেরও সেই সাজা। তাদের ভয়ে নিহত ছোট ভাই জিয়ারুলের স্ত্রী সন্তানরা এবং আমি সঠিক ভাবে বাজার ঘাটে চলাফেরা করতে পারিনা। এক অজানা আতঙ্ক সবার মাঝে। দোকান পুড়ানোর বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি জানান হাসান তার গ্রামের

লোকজনকে ব্যাপক অত্যাচার নির্যাতন করেছে একারনে সবাই ক্ষিপ্ত। তার গ্রামের লোকজন এসব করেছে, কারন আমাদের বাড়ি বিলশহর গ্রামে। আমরা তাদের ভয়ে লালপুর বাজারে যেতে পারতাম না। কারন ওই বাজারের রাজত্ব করে হাসান। তার কথাই শেষ কথা ওই বাজারে। আমি ও আমার ভাতিজারা লালপুর বাজার দিয়ে তানোরে যেতে পারিনা। নারায়নপুর, কালনা ও বেলপুকুরিয়া দিয়ে না হয় যোগিশো হয়ে তানোরে আসতে হয়। হাসান বাহিনী লালপুর বাজারে ও রাস্তার ধারে আমাদেরকে মেরে ফেলার জন্য ওতপেতে থাকে। তারা রাজনৈতিক প্রভাব বিস্তার করে জামিন পেয়েছেন বলেও ধারনা।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ইউএনও মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, অভিযোগ হলে তদন্ত সাপেক্ষে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

প্রসঙ্গত, তালন্দ ইউনিয়ন ইউপির নারায়নপুর গ্রামের মোড়ে আলফাজের দোকানের সামনে চলতি বছরের ১৯ ফেব্রুয়ারী তারিখে হাসান মেম্বারসহ তার বাহিনী গভীর নলকূপ ও পূর্ব শক্রতার জের ধরে জিয়ারুলের উপর হামলা করার চেষ্টা করলে স্থানীয় দের বাঁধার মুখে পারেনি। ২০ ফেব্রুয়ারী তারিখে উপজেলা পরিষদ চত্বরের শহীদ মিনারে ফুল দিতে আসেন জিয়ারুল।

সেখানে হাসান মেম্বার ও তার বাহিনী হত্যার হুমকি দিলে তোফাজ্জুলের মাধ্যমে নারায়নপুর মোড়ে আসতে সক্ষম হয় জিয়ারুল। মোড় থেকে তোফাজ্জুল, মইফুল ও রবিউল জিয়ারুলকে বাইক যোগে বিলশহর গ্রামে প্রবেশের মুখ কৃষি গুদামে পৌঁছে দেয়। সেখান থেকে হাসান মেম্বার ও তার বাহিনী জিয়ারুল তুলে নিয়ে গিয়ে লোমহর্ষক নির্যাতন চালিয়ে মেরে ফেলা হয়।