সাফ জয়ী জাতীয় দলের কৃতি ফুটবলার মনিকাকে লক্ষ্মীছড়ি উপজেলা প্রশাসনের সংবর্ধনা
আরিফুল ইসলাম মহিন, খাগড়াছড়ি প্রতিনিধি :সাফ জয়ী জাতীয় দলের কৃতি ফুটবলার মনিকা চাকমাকে সংবর্ধনা দিয়েছে লক্ষ্মীছড়ি উপজেলা প্রশাসন। ২৭ নভেম্বর বুধবার উপজেলা পরিষদ সম্মেলন কক্ষে এ সংবর্ধনা দেয়া হয়।
সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন উপজেলা নির্বাহী অফিসার সেটু কুমার বড়ুয়া। বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন খাগড়াছড়ি জেলা পরিষদ সদস্য অনিমেয় চাকমা। উপজেলা একাডেমিক সুপারভাইজার প্রনব কুমার পোদ্দারের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠিত সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে আরো বক্তব্য রাখেন, থানার অফিসার ইনচার্জ মু. খালেদ,প্রেসক্লাব সভাপতি মো. মোবারক হোসেন, লক্ষ্মীছড়ি সরকারি মডেল উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আবু বক্কর সিদ্দিক, ইউপি চেয়ারম্যান প্রবিল কুমার চাকমা, বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক রুপন চাকমা প্রমূখ।
নেপালকে হারিয়ে টানা দ্বিতীয়বারের মতো সাফ নারী চ্যাম্পিয়ন হয় বাংলাদেশ নারী ফুটবল টিম। আর এ টিমের অন্যতম খেলোয়ার পার্বত্য জেলা খাগড়াছড়ির লক্ষ্মীছড়ি উপজেলার দূর্গম জনপদ সুমন্ত পাড়ার বাসিন্দা ম্যাজিকেল চাকমা খ্যাত ‘মনিকা চাকমা’কে নিজ উপজেলা ল²ীছড়িতে সংবর্ধনা পেয়ে খুশি মনিকা চাকমা।
এসময় বক্তারা মনিকা চাকমা ও তার বাবা মাকে অভিনন্দন জানিয়ে বলেন, ‘মনিকা চাকমা শুধু লক্ষীছড়ির গর্ব না, সে সারা দেশের গর্ব। তার ধারাবাহিক অর্জনে আমরা লক্ষীছড়ির সর্বস্তরের মানুষ উচ্ছসিত। কিন্তু মনিকা চাকমার বাড়ি উপজেলার দূর্গম পশ্চাৎপদ জনপদে হওয়ায় তার বাড়িতে যেতে নেই সড়ক, নেই কালভার্ট, নেই কোন ইন্টারনেট সুবিধা। ২০২২ সালে মনিকা চাকমা প্রথম সাফজয় শেষে বাড়িতে আসার পর অনেকেই আশার কথা শুনিয়েছেন। কিন্তু সে আশা আলো দেখেনি’।
বক্তব্যে মনিকা চাকমা বলেন, আমি সত্যিই অভিভূত, আপ্লুত। আমি দেশের জন্য, আপনাদের জন্য লড়াই করছি। আপনারা সবাই আমার জন্য দোয়া-আর্শীবাদ করবেন। আমরাই যাতে আগামীতে আপনাদেরকে আরও বিজয় উপহার দিতে পারি এবং বাংলাদেশকে বিশ্ব মানচিত্রে আরো সুউচ্চ অবস্থানে নিয়ে যেতে পারি।
অনুষ্ঠানের শুরুতে উপজেলা প্রশাসন, উপজেলা ক্রীড়া সংস্থা ও বিভিন্ন ক্লাব, সরকারি-বেসরকারি সংস্থা মনিকা চাকমাকে ফুল ও ক্রেস্ট দিয়ে শুভেচ্ছা জানান। এসময় মনিকা চাকমার বাবা-মাকেও সম্মাননা জানানো হয়।
উল্লেখ্য ২০২২ সালের পর ২০২৪ সালে সাফ চ্যাম্পিয়নশিপ জিতল বাংলাদেশের মেয়েদের দল। নেপালকে ২-১ গোলে পরাস্ত করে তারা দ্বিতীয়বার ট্রফি ঘরে তুলল। ২ বছর আগে তারা নেপালকে হারিয়ে প্রথমবার সাফ চ্যাম্পিয়নশিপ জিতেছিল। ম্যাচে বাংলাদেশ তাদের প্রথম গোল পায় বিরতির পর। মণিকা চাকমা বক্সের ভিতর থেকে প্লেসিংয়ে গোল করে দলকে এগিয়ে দেন। প্রথম ম্যাচে তারা পাকিস্তানের সঙ্গে ড্র করে। এরপর ভারতকে ৩-১ গোলে হারায় তারা। সেমিফাইনালে ভুটানকে ৭-১ গোলে হারায় তারা।
এর আগে এএফসি অনূর্ধ্ব-১৬ নারী চ্যাম্পিয়নশীপের বছাই পর্বে মিয়ানমারকে ১-০গোলে হারিয়ে এএফসি‘র চূড়ান্ত পর্বে উত্তীর্ণ হয় বাংলাদেশের মেয়েরা। কঠিন প্রতিপক্ষ মিয়ানমারকে একমাত্র মনিকা গোলেই হারানো সম্ভব হয়। দুর্দান্ত গোল করে মনিকা ফের আলোচনায় চলে আসেন।