রায়পুরার মির্জাপুরে নীলকুঠিতে বীর মুক্তিযোদ্ধা মজিবর রহমান তোরণের উদ্বোধন
হারুনুর রশিদ বিশেষ প্রতিনিধিঃ নরসিংদীর রায়পুরা উপজেলার মির্জাপুর ইউনিয়নের নীলকুঠিতে বীর মুক্তিযোদ্ধা শহীদ মজিবর রহমান তোরণ উদ্বোধন করা হয়েছে।
বুধবার (২৩ ডিসেম্বর) ফিতা কেটে তোরণ উদ্বোধন ও আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। উক্ত আলোচনা সভায় প্রধান অতিথি হিসাবে উপস্থিত ছিলেন রায়পুরা উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুস ছাদেক। তোরণ উদ্বোধন উপলক্ষে দোয়া ও মিলাদের আয়োজন করেন মুক্তিযোদ্ধা পরিবারের সদস্যবৃন্দ।
মির্জাপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো. আসাদুল্লাহ ভুইয়ার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন রায়পুরা উপজেলা মুক্তিযুদ্ধা কমান্ডার যুদ্ধাহত বীর মুক্তিযোদ্ধা নজরুল ইসলাম, বীর মুক্তিযোদ্ধা মো.আলাউদ্দিন মাষ্টার, শহীদ মুক্তিযোদ্ধা মজিবর রহমানের ভাই মির্জাপুর ইউনিয়ন আওয়ামিলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক মির্জা আমীর হোসেন প্রমুখ। অনুষ্ঠান সঞ্চালনায় ছিলেন ডা. মো. আসাদ।
তোরণ উদ্বোধন অনুষ্ঠানে শহীদ মুক্তিযোদ্ধা মজিবর রহমানের ভাই মির্জা আমীর হোসেন নীলকুঠি হতে মির্জাপুর হয়ে ঠাকুরবাড়ির মোড় পর্যন্ত সড়কটি শহীদ মজিবর রহমান সড়ক নামে নামকরণের অনুরোধ করেন। পরে প্রধান অতিথির বক্তব্যে উপজেলা চেয়ারম্যান আব্দুস ছাদেক তা বাস্তবায়নের প্রতিশ্রুতি দেন এবং মির্জাপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো আসাদুল্লাহ্ ভূইয়াকে ইউনিয়ন পরিষদ থেকে প্রয়োজনীয় কাগজপত্র তৈরি করে উপজেলা পরিষদে জমা দেওয়ার কথা বলেন। এসময় রায়পুরা উপজেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মো. শাহ আলম তোরণের সামনে হতে হাজী বাড়ির ভিতর দিয়ে ৩০০ মিটার কাঁচা রাস্তা পাকা করে ঢাকা সিলেট মহাসড়কে যুক্ত করার অনুরোধ করলে তিনি তাও বাস্তবায়নের আশ্বাস দেন।
শহীদ মুক্তিযোদ্ধা মজিবর রহমান উপজেলার মির্জাপুর ইউনিয়নের আনিস মুন্সির বাড়ির মৃত আব্বাস আলীর ছেলে। তিন ভাই ও তিন বোনের মধ্যে তিনি ছিলেন দ্বিতীয়। ফুটবল খেলায় খুব পারদর্শী ছিলেন ছিলেন তিনি। ১৯৭১ সালে দেশে যখন যুদ্ধ লেগে যায় তখন তিনি ভৈরব হাজী আসমত কলেজের ছাত্র ছিলেন। যুদ্ধ চলাকালে মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণের জন্য বাড়ি থেকে বের হয়ে আর ফিরে আসেনি।
দীর্ঘ ৪৯ বছর পর নরসিংদী-৫ রায়পুরার সংসদ সদস্য রাজিউদ্দিন আহমেদ রাজু এর নির্দেশে এবং উপজেলা চেয়ারম্যান আব্দুস ছাদেক এর তদারকিতে তোরণ নির্মাণের মাধ্যমে শহীদ মজিবর রহমান আবারও যেন জীবন্ত হয়ে উঠলেন। লোকমুখের আড়ালে ঢেকে পরা শহীদ মজিবর রহমানের দেশের জন্য আত্মত্যাগ আজ স্বীকৃতি পাওয়ায় এলাকার লোকজন ও মুক্তিযোদ্ধারা আনন্দ প্রকাশ করেছেন।
এসময় আরও উপস্থিত ছিলেন সাবেক এনজিও কর্মকর্তা ( পাপড়ি) মো. শহীদ উল্লাহ্ শহীদ, নারায়ণপুর কলেজের অধ্যাপক মো.আলমগীর কবির,মো. তাজুল ইসলাম, মির্জাপুর ইউনিয়নের সাবেক কমান্ডার বীর মুক্তিযোদ্ধা মো. ফজলুর রহমান। মির্জাপুর ইউনিয়ন আওয়ামিলীগের সভাপতি মো. আন্দুর রাজ্জাক ভূইয়া, মাহমুদাবাদ রাজিউদ্দিন আহমেদ রাজু উচ্চ বিদ্যালয়ের সহকারী প্রধান শিক্ষক মো. সাজ্জাদ হোসেন ভূইয়া, সহকারী শিক্ষক বাবু কৃষ্ণ সরকার, মির্জাপুর ইউনিয়ন যুবলীগের সভাপতি মো. সাখাওয়াত হোসেন সবুজ, যুবলীগ নেতা মো. ফারুক মিয়া , শহীদ মুক্তিযোদ্ধা মজিবর রহমানের ভাতিজা মো. শাহজাহান মাষ্টার, রায়পুরা উপজেলা যুব লীগের সহ সম্পাদক মো. রাজিবুল্লাহ্ খান রাজু, মো. আলী আকবর ভেন্ডার, মোশাররফ হোসেন মুন্সি ও স্থানীয় মুক্তিযোদ্ধাগণ ও গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ প্রমুখ।