ঢাকা | ডিসেম্বর ২৫, ২০২৪ - ৯:০৬ পূর্বাহ্ন

সংবাদ শিরোনামঃ

জন্ম হতেনা হতেই ট্রাকের ধাক্কা, অলৌকিক ভাবে শিশু বেচে গেলেও দাইমা নিহত

  • দৈনিক নবোদয় ডট কম
  • আপডেট: Wednesday, January 13, 2021 - 10:24 pm
  • News Editor
  • পঠিত হয়েছে: 102 বার

মোঃ হেলাল উদ্দিন সরকার, ধুনট বগুড়া, প্রতিনিধিঃ প্রসব বেদনা ওঠার পর হাসপাতালে যাওয়ার পথে রাস্তায় এক কন্যা শিশুর জন্ম, দাইমার কোলে পৃথিবী দেখতে না দেখতে পেছন থেকে ধেয়ে আসা ট্রাকের ধাক্কায় দশ পনের হাত দুরে ছিটকে পরে যেয়ে অলৌকিক ভাবে শিশুটি বেচে গেলেও, দাইমাকে ছেড়ে যেতে হলো পৃথিবী ছেড়ে।

ঘটনাটি ঘটলো ১২ জানুয়ারী দিন গত রাতে আনুমানিক ৫.৩৫ মিঃ, বগুড়া জেলার শেরপুর উপজেলাধীন শালফা এলাকায়। ঘটনার সরজমিন তদন্ত করে ভুক্তভোগীর সাথে যোগাযোগ করে জানাযায়, ধুনট উপজেলাধীন গোসাইবাড়ী ইউনিয়নের জোড়খালী গ্রামের সুমন ইসলামের স্ত্রী ছুমাইয়া খাতুনের ঐ দিন রাত আনুমানিক আড়াইটার সময় প্রসব বেদনা ওঠে। স্বামী সুমন ইসলাম সাথে সাথে গ্রামের সিএনজি চালক কে খবর দিয়ে নিয়ে আসে ও গর্ভবতী ছুমাইয়াকে সিএনজিতে ওঠানো হয়। পথে অজানা ভয়ে দাইমার প্রয়োজন বোধ করায়, গ্রামের দাইমা আঃ হাকিম বুলুর স্ত্রী কাজুলী খাতুনকে খবর পাঠায় আসার জন্য। কিন্তু জানা যায় দাইমা পাশের গ্রাম চুনিয়াপাড়া অন্য একটি ডেলিভারি করাতে গিয়েছে। অজ্ঞতা গর্ভবতীকে সিএনজিতে উঠিয়ে জোড়খালীর আবুহোরায়রা মিল মোড়ে দাইমার জন্য অপেক্ষা করতে থাকে।

রাত ৩.৫০ মিঃ দাইমা আসার পর তাকে নিয়ে শেরপুর এর উদ্দেশ্য রওনা দেন এবং বাকসাপাড়া পৌছার পর সিএনজি ড্রাইভার সামনের একই রাস্তা চোখে চারটি দেখতে পায়, সঠিক রাস্তা যেটা, সেটা মনে করে গাড়ি চালাতেই দেখে গাড়ি ধান ক্ষেতে। অল্পের জন্য কেহই আহত বা নিহত হয় না।

এমতাবস্থায় ড্রাইভার সামনে আর আগাতে সাহস পায়না, বাধ্য হয়ে সুমন ইসলাম জোড়খালী গ্রামের আরেক ড্রাইভার ইসরাফিল কে ফোন করেন। রাত ৪.৩০ মিঃ এ ইসরাফিল পৌছার পর পুনরায় সেখান থেকে রওনা দেয়। রওনা হওয়ার পর রাত ৫.৩৫ মিঃ এর দিকে শালফা পৌছায় এবং ছুমাইয়া খাতুনের প্রসব বেদনা ওঠে। কি আর করা সিএনজি থামিয়ে দাইমা কাজুলী খাতুন গাড়ির ভিতরেই ছুমাইয়া খাতুনের গর্ভপাত করান ও একটি ফুটফুটে কন্যা সন্তানের জন্ম হয়। ভুক্তভোগীরা বলেন একটু গরম পানি, নারি কাটার ব্লেড স্থানীয়দের নিকট চেয়েও ব্যার্থ হন এবং বাড়িতে এসে নারি কাটা হয়।

চারিদিকে প্রচন্ড কুয়াশা, একটু কাছের কিছুই দেখা যাচ্ছে না। গাড়ির ভিতর বেকায়দায় ডেলিভারি করাতে দাইমার ইতিমধ্যে হাত পা কোমড় লেগে আসে, তাই নবজাতক শিশু কন্যাকে কিছু কাপড় দিয়ে পেচিয়ে গাড়ির বাইরে এসে দাঁড়ায়। হাত পা কোমড় একটু ঠিক হতেই গাড়িতে উঠার জন্য ডান পা গাড়িতে রাখতেই পেছন থেকে ধেয়ে আসা বালু বোঝাই অজ্ঞাত একটি ট্রাক তাকে প্রচন্ড বেগে ধাক্কা দেয়। ধাক্কায় দাইমা পাঁচ সাত হাত দুরে পরলেও কোলের নবজাতক পরে আট দশ হাত দুরে বালির ঢিবির উপর।

দাড়ানো সিএনজিটি কাত হয়ে পরে যাওয়ায় ভেতরে থাকা নবজাতকের মা সহ অন্যান্য সবাই কিছু না কিছু আহত হন ও বসত বাড়িতে চলে আসেন, আর দাইমা মুখথুবড়ে পড়ায় অন্য একটি গাড়িতে তাকে নেয়া হয় শেরপুর সদর হাসপাতালে। হাসপাতালে পৌছার পর কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত্যু ঘোষনা করেন। খবর পেয়ে অলৌকিক ভাবে বেচে যাওয়া শিশুটিকে দেখার জন্য নারী পুরুষ একদিকে যেমনি ভিড় করছে, অন্যদিকে দাইমার বাড়িতে চলছে কান্নার মাতম।