ত্রিশালে এসিল্যান্ডের মেধায় ভোগান্তি কমেছে ভূমি উন্নয়ন সেবা
ষ্টাফ রিপোর্টারঃময়মনসিংহ জেলার ত্রিশাল উপজেলার সহকারি কমিশনার ভূমি কার্যালয় ও ইউনিয়ন ভূমি অফিস গুলোতে সকল ধরণের জনভোগান্তি কমেছে। বর্তমানে এ উপজেলায় অতীতের চেয়ে সকল ধরণের ভূমি সেবার মান বৃদ্ধি পেয়েছে।
ভূমি অফিসে সেবার মান বৃদ্ধির লক্ষে জনহশরানীসহ বিভিন্ন অনিয়ম, দুনীতি রোধের পাশাপাশি ভূমি সংক্রান্ত সেবা সহজ করতে নিয়মিতই উন্মুক্ত স্থানে অফিস কার্যক্রম শুরু করেন ত্রিশাল সহকারী কমিশনার ভূমি (এসিল্যান্ড) হাসান আব্দুল্লাহ আল মাহমুদ।
যেখানে অফিসে এসে প্রথমেই সেবা গ্রহীতারা সরাসরি কথা বলতে পারেন ভূমি সহকারী কমিশনারদের সঙ্গে। আর অল্প সময়ের মধ্যে কোনোরকম হয়রানি ছাড়া দ্রুত সেবা পাওয়ায় খুশি হন সেবা গ্রহীতারা।
হঠাৎ ত্রিশাল উপজেলা ভূমি অফিসে গিয়ে দেখা যায়- সহকারী ভূমি কমিশনার হাসান আব্দুল্লাহ আল মাহমুদ চেয়ার-টেবিল নিয়ে কার্যালয়ের নিচে বসে আছেন। এসময় সেখানে সেবা নিতে আসা বিভিন্ন জনের কথা শুনেছেন এবং তাৎক্ষণিক করছেন কাজগুলোর তদারকিও।
অপ্রয়োজনীয় জনগণের ভিড় লক্ষ্য করা যায়নি। পাশাপাশি অফিসের টেবিলে নেই কোন বস্তাবন্দী ফাইল। স্বচ্ছতা ফিরিয়ে আনতে কঠোর পরিশ্রম করেছেন সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা।
ডিজিটাল যুগে নামজারিসহ অন্যান্য সেবা এখন জনসাধারণ খুব সহজেই সন্তোষ প্রকাশ করছেন। এক সময় ভূমির নামজারি করতে সময় লাগতো দুই থেকে তিন মাস। বর্তমানে নামজারি ২৮ দিনের মধ্যে নিষ্পত্তি হচ্ছে। মোবাইল ল্যাপটপ কম্পিউটারের মাধ্যমে জনগণ ঘরে বসে নামজারির আবেদন করতে পারছেন। যা বর্তমান সরকারের যুগান্তকারী পদক্ষেপ।
বর্তমানে ইউনিয়ন ভূমি অফিস গুলোতে জনসাধারণ সহজে তাদের কাজগুলো করতে দেখাগেছে। ত্রিশাল উপজেলার সহকারি কমিশনার ভূমি কার্যালয়ে গিয়ে দেখা যায় অফিসের সামনেই টাঙানো হয়েছে সিটিজেন চার্টার। এর মাধ্যমে ভূমি অফিসের যেকোন নিয়ম-কানুন, খাজনা-খারিজ, পর্চা, রেকর্ড সংশোধন, জমি সম্পর্কিত যাবতীয় তথ্য দেওয়া রয়েছে। ফলে সেবা গ্রহিতাদের ভোগান্তি নেই বললেই চলে। পাশাপাশি আগতদের বসার জন্য তৈরি করা হয়েছে দৃষ্টিনন্দন গোল ঘর।
অফিসের সামগ্রিক নিরাপত্তার জন্য সিসিটিভি স্থাপনও তথ্য উপাত্ত যাচাই বাছাই করতে অফিসে একটি ফ্রন্টডেস্ক স্থাপন করা হয়েছে। ত্রিশাল উপজেলার সহকারি কমিশনার ভূমি হাসান আব্দুল্লাহ আল মাহমুদ বলেন, ত্রিশাল উপজেলা ভূমি উন্নয়ন কর শতভাগ অনলাইনে আদায় করা হচ্ছে। যেটি জনভোগান্তি অনেকাংশে কমেছে।
ত্রিশাল উপজেলায় শতভাগ ভূমি উন্নয়ন কর অনলাইনে আদায় করছি। অফলাইনে কোন ভূমি উন্নয়ন কর আদায় করা হয়নি। ইতিমধ্যে ব্যাপক প্রচারণা চালিয়েছি বর্তমানে ভূমির মালিকরা অনলাইনে কর আদায় করছেন।
আগে নামজারি গড় নিষ্পত্তির সময়সীমা ৫০ দিনের মত লাগতো। এখন ২৮ দিনের মধ্যে নিষ্পত্তি নামজারি কাজ শেষ করছি। জনসাধারণের ভোগান্তি অনেকাংশে কমিয়ে আনতে সক্ষম হয়েছেন বলে তিনি জানান।
তিনি আরো বলেন, সরকার ভূমি অফিসকে ডিজিটালাইজড ও আধুনিক করার নানা উদ্যোগ গ্রহণ করেছে। এখন ভূমি অফিসগুলো দালাল মুক্ত করতে উন্মুক্ত স্থানে অফিস ধারনা নিয়ে এসেছে। এতে সেবা গ্রহীতারা ভূমি অফিসে এসেই একজন এসিল্যান্ডের সঙ্গে সরাসরি কথা বলতে পারবেন।
ভূমি সহকারী কমিশনার হাসান আব্দুল্লাহ আল মাহমুদ বলেন, ভূমি অফিসগুলোতে স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা আনার লক্ষ্যে উপজেলার সব ইউনিয়ন কার্যালয়ে উম্মুক্ত ভাবে কাজ করার নির্দেশনা দিয়েছে উপজেলা ভূমি অফিস। এতে করে দালালদের দৌরাত্ম্য যেমন কমে আসবে, তেমনি অল্প সময়ের মধ্যে সেবা পাবে ভূমি অফিসে আসা সাধারণ মানুষজন।