বসুন্ধরা আদ দ্বীন হাসপাতালে ৪ ডাক্তার ও পরিচালকের জামিন মঞ্জুর
কেরানীগঞ্জ (ঢাকা) প্রতিনিধি: দক্ষিন কেরানীগঞ্জের দোলেশ্বর এলাকায় বসুন্ধরা আদ দ্বীন হাসপাতালে ৫ম শ্রেনির এক শিক্ষার্থীর “অবহেলা জনিত মৃত্যুর অভিযোগ” মামলায় গ্রেফতারের কয়েকঘন্টার মধ্যে জামিন পেয়েছেন ৪ ডাক্তার ও হাসপাতালের ব্যবস্থাপক।
বুধবার সকালে গ্রেফতারকৃতদের রিমান্ড চেয়ে আদালতে হাজির করে মামলার তদন্ত কর্মকর্তা দক্ষিণ কেরানীগঞ্জ থানার এসআই নির্মল আগারওয়াল। শুনানির পর দুপুরে জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের বিচারক মাশফিকুর রহমান অভিযুক্ত পাঁচজনের রিমান্ড আবেদন নামঞ্জুর করে জামিন মঞ্জুর করেন। পাশাপাশি ঘটনাটি গুরুত্বের সঙ্গে তদন্ত করতে দায়িত্বপ্রাপ্ত তদন্ত কর্মকর্তাকে নির্দেশনা দেন।
মঙ্গলবার দুপুরে অপারেশন সময় হাসপাতালের ওটিতে মৃত্যু হয় ৫ম শ্রেণির শিক্ষার্থী তাসনিয়ার (১২)। এ ঘটনায় ভুল চিকিৎসার অভিযোগ এনে নিহতদের স্বজন ও স্থানীয়রা হাসপাতাল ঘেরাও করে বিক্ষোভ করে। খবর পেয়ে দক্ষিণ কেরানীগঞ্জ থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য মিটফোর্ড হাসপাতালের মর্গে পাঠায়।
এ ঘটনায় নিহতের পিতা মনিরুজ্জামান মঙ্গলবার রাতে ৩০৪ (ক) ধারায় বসুন্ধরা আদ-দ্বীন মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের সার্জারী বিভাগের সহকারী অধ্যাপক
ডা: শামসুদ্দিন আহম্মেদ (৪৫), একই হাসপাতালের এনেস্থিসিয়া বিভাগের সহকারী অধ্যাপক ডা: তাসফিয়া মাহমুদ (৩৩), এনেস্থিসিয়া বিভাগের সহকারী অধ্যাপক (দায়িত্বপ্রাপ্ত) ডা: আজমেরী আলীম (৩৩), সার্জারী বিভাগের সহকারী রেজিস্টার ডা: নিহাল মোহাম্মদ ফাতিন (২৭) ও হাসপাতালের ব্যবস্থাপক মো: আনোয়ারুল -হোসাইন (৩৩) কে হাসপাতাল থেকে গ্রেফতার করে।
নিহতের পিতা মনিরুজ্জামান জানান, তিনি নারায়নগঞ্জের সোনারগাঁ এলাকায় থাকেন। সেখানকার পানাম লেকসিটি আদর্শ বিদ্যানিকেতনে ৫ম শ্রেণিতে পড়তো তাসনিয়া। মেয়ের পেটে ব্যথা হওয়ায় তারা সোনারগাঁ থেকে চিকিৎসার জন্য কেরানীগঞ্জের বসুন্ধরা আদ-দ্বীন হাসপাতালে আসেন। পরীক্ষা নিরীক্ষার পর ডাক্তার জানান তাসনিয়ার এপেনডিসাইটের অপারেশন করতে হবে। ডাক্তারের পরামর্শে মঙ্গলবার সকাল ১০ টার দিকে ওকে ওটিতে নেয়া হয়।
হেটেই তাসনিয়া ওটিতে যায়। এরপর কয়েকঘন্টা পর তাসনিয়ার মরদেহ আমাদের দেয়া হয়। মৃত্যুর কারন জানতে চাইলে ডাক্তাররা কোন সদুত্তর দেননি। ভুল চিকিৎসায় মেয়ের মৃত্যুর অভিযোগ করেন তিনি।
এদিকে আসামীদের জামিনের ব্যাপারে বিস্ময় প্রকাশ করে মনিরুজ্জামান বলেন,আমি মেয়ের মৃত্যুর ঘটনায় অসুস্থ হয়ে পড়েছি।
আসামীদের আজকে? বুধবার) আদালতে হাজির করা হয়েছে এ ব্যাপারে তদন্ত কর্মকর্তা আমাকে কিছুই জানায়নি। বিষয়টি আমার জানা থাকলে আমি ন্যায় বিচার পেতে আইনজীবী নিয়োগ দিতাম। তদন্ত কর্মকর্তার উচিত ছিল আমাকে জানানো। কেউ কিছুই জানায়নি। আদালত জামিন দিয়েছে এ বিষয়ে আমার কোন কিছু বলার নেই, তবে ন্যায়বিচার পেতে আমি এখন কি করবো সেটা বুঝে উঠতে পারছি না।
মামলার তদন্ত কর্মকর্তা দক্ষিণ কেরানীগঞ্জ থানার এসআই নির্মল আগারওয়াল বলেন, আসামীদের জিজ্ঞাসাবাদের জন্য রিমান্ড চেয়ে আদালতে হাজির করা হয়। আসামীদের আদালতে হাজিরের বিষয়ে বাদীকে ইনফর্ম করতে তদন্ত কর্মকর্তা বাধ্য নয়।