সখীপুর-সাগরদিঘী আঞ্চলিক মহাসড়কে যান চলাচলে চরম দুর্ভোগ,খানা-খন্দকের কারণে হয় লম্বা জানজট
শরিফুল ইসলাম বাবুল, সখীপুর(টাঙ্গাইল)প্রতিনিধি:
টাঙ্গাইলের সখীপুর-সাগরদিঘী আঞ্চলিক মহাসড়কের কচুয়া বাজার অংশে পিচ ঢালাই, ইট-সুরকি উঠে গিয়ে সৃষ্টি হয়েছে বড় বড় খানাখন্দক। বর্ষার এই ভরা মৌসুমে বৃষ্টি হওয়ায় ওইসব খানাখন্দে পানি জমে ব্যাপক পরিমাণে কাঁদার সৃষ্টি হয়েছে। বিকল্প রাস্তা না থাকায় প্রতিদিনই ওই খানাখন্দে আটকে যাচ্ছে মালবাহী ট্রাকসহ বিভিন্ন যানবাহন। এতে প্রতিদিনই জনগুরুত্বপূর্ণ এ সড়কে চরম দুর্ভোগ পোহাচ্ছে চলাচলকারীরা।
ওই সড়কটি “সড়ক ও জনপথ বিভাগের আওতায়” উন্নয়নের কাজ প্রক্রিয়াধীন হলেও বিকল্প রাস্তা না থাকায় আশপাশের আবাসিক এলাকার সব কাঁচা ও আধা পাকা রাস্তায় ভারী যানবাহন চলাচল করে ওই সব রাস্তায়ও বড় বড় গর্ত হয়ে চলাচলের অনুপযোগী হয়ে পড়েছে।
টাঙ্গাইলের পূর্বাঞ্চল সখীপুর ছাড়াও ঘাটাইল,মধুপুর ও ভালুকা উপজেলার কাঁচামাল এবং এ অঞ্চলের মানুষের রাজধানী শহর ঢাকা এবং জেলা শহর টাঙ্গাইল যাওয়ার একমাত্র সড়ক সাগরদিঘী টু গোড়াই সড়ক। এজন্য প্রতিদিন শত শত ট্রাক কলা, কাঁঠাল, আনারস, বিভিন্ন সবজি ও বাঁশসহ নানা ধরনের কাচামালের গাড়ী রাজধানী শহর হয়ে বিভিন্ন জায়গায় চলে যায়।
রাস্তার একপাশে কাজ চললেও অপর অংশ পুরোপুরি চলাচলের অনুপযোগী রয়েছে। ফলে অবর্ণনীয় দুর্ভোগের স্বীকার হচ্ছে সড়কে চলাচলকারী অসংখ্য যানবাহনসহ সাধারণ মানুষ।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, সখীপুর-সাগরদিঘী ২০ কিলোমিটার সড়কটি দুই বছর আগেও এলজিইডির রাস্তা হিসেবে অধিভুক্ত ছিল। টাঙ্গাইলের মধুপুর থেকে সখীপুর হয়ে ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়কের গোড়াই নামক স্থানে সংযোগ হওয়ায় সড়কটির গুরুত্ব বেড়েছে। এরপর থেকে সড়কটি সড়ক ও জনপদ (সওজ) বিভাগের অন্তর্ভুক্ত হয়।
সওজ সূত্র জানায়, ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়কে যানজট সৃষ্টি হলে এ সড়ক দিয়ে দেশের উত্তরাঞ্চল, ময়মনসিংহ, জামালপুর, শেরপুরসহ কয়েকটি জেলার যানবাহন বিকল্প সড়ক হিসেবে চলাচল করে থাকে। চলতি বর্ষা মৌসুমে সড়কের কচুয়া বাজার, ঘোনারচালা ও বড়চওনা বাজার অংশে বড় ধরনের খানাখন্দকের সৃষ্টি হয়েছে।
সরে জমিনে, কচুয়া বাজারের উত্তর পাশে গিয়ে দেখা যায়, সড়কের ১০০ গজের মধ্যে ৬-৭ টি বড় বড় গর্ত।ওইসব গর্তে বৃষ্টির পানি জমে কাঁদার সৃষ্টি হয়েছে। ওই গর্ত এবং পানির উপর দিয়ে যানবাহন চলাচলের কারণে সৃষ্টি হয়েছে বড় খাদ। যেখানে মালবাহী ট্রাক আটকে গিয়ে সড়কের দুই পাশে যানজটের সৃষ্টি হয়েছে।
এ বিষয়ে কচুয়া বাজারের ব্যবসায়ী ইয়ারুল মিয়া জানান, বেশ কয়েক মাস যাবত এই সড়কটির বেহাল দশা।এই স্থানে কিছুক্ষণ পরপরই একটি করে ট্রাক আটকে যাচ্ছে। এ সময় চলাচলকারীদের দুর্ভোগের কোন সীমা থাকে না।
আব্দুল কাদের নামের একজন ট্রাকচালক জানান, আমি প্রায়ই এ সড়ক দিয়ে যাতায়াত করি। একটু বৃষ্টি হলেই এ সড়ক দিয়ে চলাচল করা খুবই কষ্ট হয়ে যায়।
জানতে চাইলে এ বিষয়ে কালিয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান জামাল হোসেন বলেন, পুরো সড়ক জুড়েই খানাখন্দ। তবে কচুয়াবাজারের অবস্থা বেশি ভয়াবহ। বিকল্প সড়ক না থাকায় যাতায়াতকারীদের দুর্ভোগ দিন দিন বাড়ছেই। চেয়ারম্যান দাবি করেন, এ সড়কের দুরবস্থার কথা সড়ক ও জনপথ বিভাগের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের অবগত করা হয়েছে।
সড়ক সংস্কার বিষয়ে ঠিকাদার সোহেল রানা বলেন, ৭৯ লাখ টাকার ১৪৪ মিটার কচুয়া অংশের রাস্তার কাজ পেলেও ওয়ার্ক অর্ডার পেয়েছি ঈদের আগে। তবু গুরুত্ব বিবেচনা করে সর্বোচ্চ ২০ দিনের মধ্যেই আমি কাজ শেষ করে দিব বলে আশা করছি।
এ বিষয়ে সড়ক ও জনপথ বিভাগের মির্জাপুর অঞ্চল উপবিভাগের উপসহকারী প্রকৌশলী মো. আনিছুর রহমান জানান, মানুষের দুর্ভোগ কমাতে খানাখন্দক অংশে জরুরি মেরামত কার্যক্রম শুরু করে দেওয়া হয়েছে। তিনি আরও বলেন, ঠিকাদারের গাফিলতির কারণে কাজটি পিছিয়ে গেছে। তবে বৃষ্টি না হলে খুব শিগগিরই কাজ শেষ হয়ে যাবে।