সিরাজগঞ্জের বন্যা দুর্গতদের হাহাকার, নানা দুর্ভোগে বসবাস
সিরাজগঞ্জ প্রতিনিধি : সিরাজগঞ্জ যমুনার পানি বদ্ধি অব্যাহত থাকায় জেলার সার্বিক বন্যা পরিস্থিতির আরো অবনতি হয়েছে। গত ২৪ ঘন্টায় রবিবার সকাল ৬ টায় সিরাজগঞ্জ শহরের হার্ড পয়েন্টে পানি ৩ সেন্টিমিটার বেড়ে তা বিপদসীমার ৬১ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। পানি বৃদ্ধির ফলে জেলার এক দিকে এনায়েতপুর হতে পূর্ব শাহজাদপুর এর পাঁচিল পর্যন্ত পাঁচটি গ্রামে যমুনার প্রচন্ড স্রোতে ভাঙ্গন বৃদ্ধি পেয়েছে। অপরদিকে বন্যা কবলিত জেলার নয়টি উপজেলার মধ্যে কাজিপুর, সদর, বেলকুচি, চৌহালী, শাহজাদপুরের চরাঞ্চল ও নিম্ন অঞ্চলে বন্যাজনিত কারণে বেড়েছে দুর্ভোগ।
এদিকে সদর উপজলার সয়দাবাদ ইউনিয়নের মুলিবাড়ি, চর সয়দাবাদ, দুখিয়াবাড়ি, খাস বড়শিমুল, চর গাছাবাড়ি, পঞ্চসানা গ্রামের অনেক ঘরবাড়িতে বন্যার পানি প্রবেশ করেছে। তারা নানা দুর্ভোগ দুর্দশা নিয়ে করছে বসবাস। এছাড়া দুখিয়াবাড়ি সহ আশপাশের এলাকার মানুষ বন্যার কারণে বাড়িতে থাকতে না পেরে আশ্রয় নিয়েছে সয়দাবাদের মহাসড়কের উত্তর পাশে। সেখানে খোলা আকাশের নিচে কোনরকমে পলিথিন টাঙ্গিয়ে তারা করছে বসবাস। সেখানে দেখা দিয়েছে বিশুদ্ধ খাবার পানি ও খাদ্যের অভাব।
আশ্রয় নেয়া দুখিয়াবাড়ী গ্রামের জোসনা রানী, রেনুকা বালা, খোদা বক্স, পলাশ হোসেন জানান, কিছুদিন ধরে নদীতে পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় আমাদের ঘরবাড়িতেও পানি উঠে গেছে। এ অবস্থায় ঘরে আর থাকার উপায় না থাকায় মহাসড়কের পাশে এসে শতাধিক পরিবার আশ্রয় নিয়েছি। এখানে আমাদের খাবার পানি, খাদ্যের অভাব দেখা দিয়েছে। নেই বাথরুম। আমরা সবাই এখানে কষ্টের দিন কাটাচ্ছি। তারা আরো জানান, চেয়ারম্যান নবীদুল কিছুটা সহযোগিতা করলেও তা পর্যাপ্ত নয়। পলিথিন টাঙিয়ে থাকা খুবই কষ্টকর, বৃষ্টিতে ভিজতে হচ্ছে। কিছু ঢেউটিন হলে আমরা ভালোভাবে এখানে থাকতে পারতাম।
এদিকে স্থানীয় ছয়দাবাদ ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান নবীদুল ইসলাম, ইউপি সদস্য আব্দুল মমিন জানান, বন্যার্ত আশ্রিত মানুষগুলার জন্য আমরা নিজেদের অর্থায়নে একটি টিউবয়েল স্থাপন ও কিছুটা খাদ্য সামগ্রী বিতরণ করেছি। আশা করছি তাদের সাহায্যার্থে জেলা প্রশাসন সদয় হবেন। এছাড়া আমাদের ইউনিয়নের অন্তত ৫ শতাধিক পরিবার বন্যা আক্রান্ত হয়ে পড়েছে। তাদেরও দুর্ভোগ নিয়ে বসবাস করতে হচ্ছে।
এদিকে জেলার বন্যা কবলিত পাঁচটি উপজেলার ৩৪টি ইউনিয়নের ৫ হাজার ৩৬২ পরিবার বন্যা কবলিত হয়ে পড়েছে। তাদের জন্য ৬০ মেট্রিক টন চাল বরাদ্দ দেয়া হয়েছে বলে জেলা ত্রান ও পুর্নবাসন কর্মকর্তা মোহাম্মদ আখতারুজ্জামান জানিয়েছেন।