কেরানীগঞ্জ (ঢাকা) প্রতিনিধিঃ ঢাকার কেরানীগঞ্জে আমেরিকান নাগরিক পিন্টু খান নামে এক ব্যক্তির পৌনে ২২ শতাংশ জমি দখল করে সেখানে ছাপা কারখানা ভাড়া দিয়েছেন এক আওয়ামী লীগ নেতা। ওই আওয়ামী লীগ নেতার নাম মোহাম্মদ আলী হোসেন। সে কালিন্দী ইউনিয়ন পরিষদের ৬ নং ওয়ার্ডের মেম্বার। কয়েক মাস পূর্বে আমেরিকা থেকে দেশে ফিরে বিষয়টি জানতে পারেন ভুক্তভোগী পিন্টু খান ।

ভুক্তভোগী পিন্টু খান জানান, আলী হোসেনের ভাগ্নে ইমাম হাসান কেরানীগঞ্জ মডেল থানা ছাত্রলীগের সভাপতি। মামা ও ভাগ্নে একত্রে মিলে ক্ষমতার জোর খাটিয়ে আতাশুর মৌজার ১৩১ খতিয়ানের ৪ ও ৩ দাগের পৌনে ২২ শতাংশ জমি দখল করে সেখানে বাংলাদেশ প্রিন্টার্স লি: নামে একটি ছাপা কারখানা ভাড়া দেন।

পরে জাল খতিয়ান দিয়ে আলী হোসেন নিজের নামে মিটার নিয়ে ওই কারখানায় বিদ্যুৎ সংযোগ দেন। দেশে ফিরে ঘটনাটি জানার পর মেম্বার আলী হোসেনের সঙ্গে যোগাযোগ করলে তিনি ও ছাত্রলীগ সভাপতি ইমাম হাসান তাকে এবিষয়ে বাড়াবাড়ি করলে প্রানে মেরে ফেলার হুমকি দেয়। পরে তিনি বিদ্যুৎ অফিসে যোগাযোগ করেন। সেখানে মিটার সরিয়ে নেয়ার জন্য চিঠি দেন।

তারা এখনো কোন সুরাহা করছে না। একপর্যায়ে বিদ্যুৎ সংযোগ নেয়ার জন্য কাগজপত্র জমা দেয়া হয়েছিল সেগুলো সংগ্রহ করা হয়। দেখা যায়, যে খতিয়ান জমা দিয়ে আলী হোসেন মেম্বার মিটার নিয়েছে সেটা জাল। তাছাড়া ওই খতিয়ানের নম্বর ২৭ আর দাগ ২৫৫, যা তার খতিয়ান ও দাগের সঙ্গে মিল নেই।

তিনি আরও জানান, এতোদিন ওদের ভয়ে কিছু বলতে পারেননি। এখন তিনি তার জমি দখল ফিরে পেতে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী সহ মাননীয় প্রধান উপদেষ্টার সুদৃষ্টি কামনা করেছেন।

কারখানার ব্যবস্থাপক রাকিব হোসেনের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি মুঠোফোনে জানান, ৭/৮ মাস আগে এই জমি তারা আলী হোসেনের কাছ থেকে ভাড়া নিয়ে কারখানা তুলেছেন।
ঢাকা পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি ৪ জিনজিরা অফিসের জিএম জুলফিকার আলী বলেন, আমি দুই মাস পূর্বে এখানে যোগদান করেছি। পিন্টু খান নামে একজন ব্যক্তি এবিষয়ে অভিযোগ করেছেন। আমরা তার অভিযোগ ও কাগজপত্র আইনী পরমর্শের জন্য পাঠিয়েছি। মতামত পেলে সেই অনুযায়ী ব্যবস্থা নেয়া হবে।

জাল খতিয়ানে কিভাবে বিদ্যুৎ সংযোগ দেয়া হলো এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, আসলে বিদ্যুৎ সংযোগের জন্য যে কাগজপত্র জমা নেয়া হয় সেগুলোতো আমাদের চেক করার সময় ও সুযোগ নেই। একারনে হয়তো এমনটা হতে পারে।

এদিকে সরকার পরিবর্তনের পর আ’লীগ নেতা ও ইউপি মেম্বার আলী হোসেন ও তার ভাগ্নে ছাত্রলীগ সভাপতি ইমাম হাসান আত্মগোপনে থাকায় তাদের বক্তব্য পাওয়া যায়নি।

এবিষয়ে জানতে চাইলে কেরানীগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোঃ আবু রিয়াদ বলেন, ভুক্তভোগী আমাদের কাছে অভিযোগ দিলে তদন্ত সাপেক্ষে ব্যবস্থা নেয়া হবে।