ঢাকা | ডিসেম্বর ২৫, ২০২৪ - ৮:৫৯ অপরাহ্ন

সংবাদ শিরোনামঃ

বালাগঞ্জ প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলন

  • দৈনিক নবোদয় ডট কম
  • আপডেট: Wednesday, September 25, 2024 - 3:50 pm
  • News Editor
  • পঠিত হয়েছে: 15 বার

বালাগঞ্জ (সিলেট) থেকে হেলাল আহমদ : বালাগঞ্জ প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলনে বিগত সরকারের আমলে সীমাহীন হয়রানীর বিষয়ে নানা অভিযোগ জানিয়েছেন বালাগঞ্জের সাবেক শিক্ষক রাধিকা রঞ্জন দাস। ২৫শে সেপ্টেম্বর ২০২৪ইং বুধবার বিকালে প্রেসক্লাবের অস্থায়ী কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, বিগত প্রায় ৩০বছর যাবৎ আমি রাজনৈতিক হয়রানীর শিকার।

আওয়ামী লীগের তথাকথিত নেতারা বছরের পর বছর আমার প্রতি এবং আমার পরিবারের প্রতি সীমাহীন অত্যাচার, নির্যাতন চালিয়ে যাচ্ছেন। দেশের পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে আমি সরকার এবং দেশবাসীর কাছে ন্যায় বিচার চাই।

সংবাদ সম্মেলনে নিজেকে বালাগঞ্জের পূর্ব গৌরীপুর ইউনিয়ন বিএনপির সাবেক দফতর সম্পাদক দাবী করে তিনি বলেন, আমি ১৯৯০ সাল থেকে বিএনপি তথা এম. ইলিয়াস আলীর সমর্থক। একজন হিন্দু ধর্মালম্বী হয়ে বিএনপি সমর্থনের কারণে বছরের পর বছর ধরে হিমাংশু, জগদিস, অজিত, অধীর, নয়ন তালুকদার, অনন্ত দাস, সঞ্জয়, নেপুল দাস, শংকর দাস, সুসেন চন্দ, দয়া বিশ্বাস, দিলিপ বিশ্বাস, প্রভাত দাস, শান্তিব্রত চৌধুরী, রজত দাস ভুলন, পবিত্র বণিক, কাজল বাবুসহ বিভিন্ন ব্যক্তি আমাকে হয়রানী করছেন।

লিখিত বক্তৃতাকালে তিনি উল্লেখ করেন, ‘১৯৯৭ সনে ইউনিয়ন নির্বাচন এলো, আওয়ামী লীগের প্রার্থী শেখ মকলু মিয়া, বিএনপির পক্ষে একজন গুণী ব্যক্তি, পরোপকারী শেখ মোহাম্মদ আলী। আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে কথা আসলো আমরা সবাই মকলুর প্রতি সমর্থন করি তুমিও সমর্থন করতে হবে। আমি বললাম আমি বিএনপির প্রার্থী মোহাম্মদ আলীকে ভোট দেব। ভোটের দিন চেয়ারম্যান নির্বাচিত হলেন শেখ মকলু মিয়া। মিছিল আরম্ভ হলো আমার বাড়ির চর্তুদিকে মোহাম্মদ আলীর দালালরা বিএনপি’র রাজাকাররা হুশিয়ার সাবধান, প্রতিদিনে ২বার সকালে-বিকালে। বাড়িতে প্রাণের নিরাপত্তা নাই, স্কুলে নাই, রাস্তাঘাটে নাই, বালাগঞ্জে নাই।’

১৯৯৭ সালে ২৩আগষ্ট আমার স্বাক্ষর খাতায় লিখেছি নির্বাহী আদেশে তাজপুর..। ২৪আগস্ট বিদ্যালয়ের মাসিক সভা ছিল। বাহিরে বসেছি, হিমাংসু, জগদিস, অজিত গং উপস্থিত হয়ে বলল কালকে কোথায় ছিলে? আমি বললাম নির্বাহী আদেশে তাজপুর ছিলাম।

উত্তর আসলো বিদ্যালয়ে অনুপস্থিত লিখতে হবে, কোন কথা চলবে না। ‘নতুবা জিম্মি অবস্থায় স্কুলে থাকতে হবে, ধৈর্য্য ধরতে পারলাম না, আমি অসহায় হয়ে গেলাম, বললাম আমি আর বিদ্যালয়ে ঢুকব না, চাকুরী আমার ঈশ্বর নয়, রিজিক দাতা নয়’। ২০০১ সালে বিএনপি ক্ষমতায় আসলো আমি বিনোদপুর গ্রামে পূর্ব গৌরীপুর ইউনিয়ন দুর্গাম-প প্রতিষ্ঠা করলাম আরও ৫/৬জন মিলে। ২০০৮ পর্যন্ত চলল, ২০০৮ এসে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসলো, ২০০৯ সনে দুর্গামন্ডপে হিসাব-নিকাশ রেজুলেশন খাতা ছিল বিমল চন্দ্রের কাছে।

বিমল চন্দ্রের কাছ থেকে হিমাংসু গং কয়েকজন জোরে খাতা নিয়ে গেল ২০০৯ সালের পূজার আগে এবং প্রকাশ্যে বলতে লাগলো এই ম-পে বিএনপির রাজাকারদের পূজা করার কোন অধিকার নাই, আমি অসহায় হয়ে চলে গেলাম। আরম্ভ হলো মামলা’। তিনি বলেন, এরপর তার বিরুদ্ধে একাধিক মামলা করা হয়েছে। ‘এদের নির্দেশনায় অজিত রঞ্জন দাস আমার বাড়ির পশ্চিমে যে জায়গার উপরে ঘরের ছাদ ঢালাই দিয়াছে ঐ ঘরের ভিতরে আমার ১শতক জায়গা দখল করে নিয়েছে।

বিগত ২৭/০৭/২০২০ ইং তারিখে আমার বাড়িতে আমার উপর অন্যায়ভাবে নির্যাতন করা হয়, আমার নাকে জখম করে রক্ত বাহির করে। আমি অজ্ঞান অবস্থায় বালাগঞ্জ হাসপাতালে গিয়ে চিকিৎসা করাই। পরে থানায় গিয়া মামলা দায়ের করি’। তিনি বলেন, আমি একজন সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ছিলাম। ওদের কারণে ১৯৯৮ সালে ঐচ্ছিক অবসর নিতে হয়েছে। ‘আমার বাড়ির বাট-বাটোরা বাবা জীবিত অবস্থায় সব করে দিয়েছেন, ঐ বাট-বাটোরা পরিবর্তন করে আমাকে যে নির্যাতন করা হইতেছে, এখনও চলতেছে’।

তিনি বলেন, গত বছর ১৫ সেপ্টেম্বর আমার স্ত্রী মারা যান। পাড়ার ২৬টি হিন্দু পরিবার দাহ দূরের কথা মুখটাও দেখে নাই। বিনোদপুরের প্রভাতের মাধ্যমে নিষেধ করা হয় আমার স্ত্রীর দাহ কাজে না আসার জন্য, আমার দোষ একটাই আমি বিএনপি করি। আমার স্ত্রীর দাহ কার্য সম্পন্ন করি গ্রামের মুসলিম ভাইদের সাহায্য-সহযোগিতায়। তিনি বলেন, ‘বিগত ১৫ বছর যাবৎ আমাকে একঘরি করে রেখে কায়স্থঘাট বিনোদপুর মিলে তাহাদের ইচ্ছেমতো পূজা চালাইয়া

আসতেছে’। ‘প্রকাশ্যে বলে পূজা ম-পে রাধিকা মাষ্টার আসতে পারবে না। আসলে হামলা হবে। অন্যদিকে বালাগঞ্জ উপজেলা পূজা পরিষদ যাদের নাম উল্লেখ আছে, আজ ১৫বছর যাবৎ তাহারা বিনা হিসাব নিকাশ ছাড়া এমনকি উপজেলার প্রতিটি পূজা মন্ডপ থেকে ২ হাজার ৫শ টাকা তাহারা ভিআইপি সেজে ম-প পরিদর্শন বাবৎ নেয়’।

এই বিষয়ে আমি নিজে প্রতিবাদী হয়ে বিগত ১৯সেপ্টেম্বর জেলা প্রশাসক বরাবরে সাক্ষাতসহ অভিযোগ পেশ করি। ওই তারিখে পুলিশ সুপার, সিলেট বরাবরে সাক্ষাত ও অভিযোগ পেশ করি। এছাড়া বালাগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা, বালাগঞ্জ থানার অফিসার ইন-চার্জ এবং পূর্ব গৌরীপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান এম. মুজিবুর রহমানের সাথে সাক্ষাৎ এবং অভিযোগ দাখিল করেছি। আমি সরকার এবং দেশবাসীর কাছে ন্যায় বিচার চাই।