পঞ্চগড় হানাদার মুক্ত দিবস উদযাপিত
স্নিগ্ধা খন্দকার পঞ্চগড় জেলা প্রতিনিধিঃ ২৯ নভেম্বর, পঞ্চগড় হানাদার মুক্ত দিবস। ১৯৭১ সালের এই দিনে মুক্তিকামী বাঙালির সাহসী লড়াইয়ের মাধ্যমে পঞ্চগড় শহর পাক হানাদারমুক্ত হয়েছিল। এ উপলক্ষে পঞ্চগড় জেলা প্রশাসনের উদ্যোগে দিনব্যাপী নানা কর্মসূচি পালিত হয়েছে।
শুক্রবার (২৯ নভেম্বর) সকালে মুক্তিযোদ্ধা চত্বরে জেলা প্রশাসক সাবেত আলী শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধাঞ্জলি অর্পণ করেন। জেলা মুক্তিযোদ্ধা কমান্ড এবং প্রশাসনের বিভিন্ন দপ্তরের কর্মকর্তারাও এতে অংশগ্রহণ করেন। পরে শহীদদের স্মরণে মুনাজাত করা হয়।
শ্রদ্ধাঞ্জলি অর্পণের পর একটি র্যালি বের হয়ে জেলা পরিষদের সামনে অবস্থিত বধ্যভূমিতে গিয়ে আরও শ্রদ্ধাঞ্জলি অর্পণ করে। এরপর কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে মুক্তিযুদ্ধের গৌরবগাথা নিয়ে একটি আলোচনা সভার আয়োজন করা হয়। সভায় রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ, মুক্তিযোদ্ধা, ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়কসহ বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ অংশগ্রহণ করেন।
১৯৭১ সালের নভেম্বর মাসজুড়ে মুক্তিবাহিনীর দুঃসাহসী অভিযান ও মিত্রবাহিনীর সহযোগিতায় পাকবাহিনীর প্রতিরোধ ভেঙে যায়। মুক্তিযোদ্ধারা পহেলা নভেম্বর থেকে পাকবাহিনীর ডিফেন্সে একের পর এক আক্রমণ শুরু করে।
পঞ্চগড়ের বিভিন্ন এলাকা একে একে মুক্ত হয়
২০ নভেম্বর: অমরখানা, ২৫ নভেম্বর: জগদলহাট, ২৬ নভেম্বর: শিংপাড়া,২৭ নভেম্বর: পূর্ব তালমা, আটোয়ারী, মির্জাপুর ও ধামোর এলাকা
২৮ নভেম্বর মুক্তিযোদ্ধারা চারদিক থেকে পাকবাহিনীর ওপর তীব্র আক্রমণ চালান। ট্যাংক ও পদাতিক বাহিনীর সম্মিলিত আক্রমণে পাক সেনারা শহরের পূর্বদিকের ডিফেন্স ভেঙে পিছু হটে। রাতের মধ্যেই পাক হানাদার বাহিনী টুনিরহাট হয়ে সৈয়দপুরের দিকে পালিয়ে যায়। পরদিন ভোরের আলো ফোটার আগেই পঞ্চগড় হানাদারমুক্ত হয়।
পঞ্চগড় হানাদার মুক্ত দিবসের কর্মসূচিগুলো শহীদদের প্রতি গভীর শ্রদ্ধা জ্ঞাপন এবং মুক্তিযুদ্ধের চেতনাকে পরবর্তী প্রজন্মের মধ্যে ছড়িয়ে দেওয়ার উজ্জ্বল উদাহরণ। দিবসটি মুক্তিযোদ্ধাদের ত্যাগ ও সাহসিকতার প্রতি জাতির অঙ্গীকার পুনর্ব্যক্ত করার সুযোগ এনে দেয়।