ঢাকা | জানুয়ারী ৭, ২০২৫ - ১২:৪৯ অপরাহ্ন

সংবাদ শিরোনামঃ

দুর্নীতি অসদাচরণ দুর্ব্যবহার ময়মনসিংহের পাউবো এর প্রকৌশলী জামিল এর অলংকার

  • দৈনিক নবোদয় ডট কম
  • আপডেট: Sunday, January 5, 2025 - 11:37 am
  • News Editor
  • পঠিত হয়েছে: 20 বার

ময়মনসিংহ প্রতিনিধিঃ ময়মনসিংহ পানি উন্নয়ন বোর্ড ( পাউবো) ময়মনসিংহ এর নির্বাহী প্রকৌশলী আখলাক উল জামিলের বিরুদ্ধে বিভিন্ন অনিয়ম দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছে।

কথায় বলে ‘ঢেকি স্বর্গে গেলেও ধান ভানে’। পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) ময়মনসিংহ এর নির্বাহী প্রকৌশলী আখলাক উল জামিলের ক্ষেত্রে এই প্রবচন যেন শতভাগ যথাযথ। দুর্নীতি-অনিয়মের পাশাপাশি সব কর্মস্থলে তার বিরুদ্ধে ওঠা গুরুতর অভিযোগের একটি হলো-অসদাচরণ। বিভিন্ন মহলের আরও অভিযোগ,প্রকৌশলী আখলাক উল জামিল
একজন দুর্বিনীত কর্মকর্তা। ঠিকাদারদের সঙ্গে যেমন উদ্ধত আচরণ করেন, তেমনি অধীনস্থ কর্মকর্তা-কর্মচারীদের সঙ্গেও করেন দুর্ব্যবহার ও অসদাচরণ। আখলাক উল জামিলের বিরুদ্ধে ওঠা এসব অভিযোগ পাউবোর ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের অজানা নয়। পানি উন্নয়ন বোর্ডের ময়মনসিংহের কর্মকর্তা কর্মচারীদের মাঝে তাকে নিয়ে ভিতরে ভিতরে সমালোচনা চললেও তার প্রভাব আর ক্ষমতার কারণে চাকরিচ্যুত হওয়ার আশঙ্কায় কেহ মুখ খুলতে সাহস করেনা টেন্ডার টেম্পারিংসহ অধীনস্থ কর্মকর্তা-কর্মচারীদের সঙ্গে গুরুতর অসদাচরণের অভিযোগ থাকলেও সংশ্লিষ্টদের অভিযোগ রহস্যজনক কারণে তার বিরুদ্ধে কার্যকর ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে না।

সংশ্লিষ্টদের অভিযোগ সূত্রে জানা গেছে, আখলাক উল জামিল ব্রহ্মপুত্র নদ খনন প্রকল্পের ডিপিপি অনুমোদনের আগেই ঘনিষ্ঠ কয়েক ঠিকাদারের কাছে মোটা অঙ্কের টাকা নেন কাজ দেওয়ার কথা বলে। নদীর তীর সংরক্ষণ প্রকল্পের ঠিকাদারের কাছ থেকে নিজে যোগাযোগ করে টাকা নেন এবং দায়িত্বপ্রাপ্ত ঠিকাদারকে চাপ দিয়েও টাকা আদায় করেন তিনি। তার অবহেলা, উদাসীনতা ও দুর্নীতির কারণে ব্রহ্মপুত্র নদের সংরক্ষণ প্রকল্পের বরাদ্দের টাকা ফেরত যাওয়ার উপক্রম হয়েছে।

খোঁজ নিয়ে আরও জানা গেছে, গত ২০২১ সনে ময়মনসিংহ পানি উন্নয়ন বোর্ডে যোগদান করেন আখলাক উল জামিল। তিনি যোগদান করার পর থেকে তার অধীনস্থদের সঙ্গে শুধু দুরাচরণই করেন না, তাদের ওপর মানসিক পীড়ন করেন বলেও অভিযোগ করেছেন কর্মকর্তা-কর্মচারীরা। জানা গেছে, আখলাক উল জামিলের মানসিক পীড়নে বিপর্যস্ত হয়ে একাধিক কর্মচারী অন্যত্র বদলি নিয়ে চলে গেছেন বলেও সুত্র জানিয়েছে । নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক পাউবোর ময়মনসিংহ সার্কেলের অধীন বিভিন্ন বিভাগে কর্মরত একাধিক কর্মকর্তা-কর্মচারী জানান, অধীনস্থদের সঙ্গে দুর্ব্যবহার করে আখলাক উল জামিল যেন আনন্দ উপভোগ করেন। বাবার বয়সি কর্মচারীরাও রেহাই পান না। অধীনদের সঙ্গে সে যেসব আচরণ করেন তাতে তার মানসিক সুস্থতা নিয়েও অনেকে সংশয় প্রকাশ করেছেন।

ময়মনসিংহ পানি উন্নয়ন বোর্ডের সংশ্লিষ্টজনদের কাছ থেকেই অভিযোগে জানা গেছে, নির্বাহী প্রকৌশলী আখলাক উল জামিল ছিলেন পুরো মাত্রায় আওয়ামিলীগের দোসর। অভিযোগে রয়েছে ময়মনসিংহ পাউবোর নির্বাহী প্রকৌশলী আখলাক উল জামিল একাধারে  ছিলেন দূর্ণীতিবাজ সেই সাথে আওয়ামিলীগ সরকারের ছিলেন গুরুতর প্রেজেন্টার। আওয়ামিলীগেের পুরো সময়টাতে তিনি ছিলেন পাউবোর কর্তৃত্ববাদী এক নায়ক।

অভিযোগে জানা গেছে, পাউবোর ২০২৩- ২৪ অর্থ বছরের ময়মনসিংহ জেলার প্রায় সবকটি নদী খনন প্রকল্পে কাজ সেরেছেন শিয়াল ও কুমিরের বাচ্চার কিচ্ছার মতো। যেমনঃ বছরান্তে যে প্রকল্প বরাদ্দের টাকা আসে সেইটা অর্ধেক শেষ হতে না হতেই বছর শেষ হয়ে যায় কিন্তু কাজ আর শেষ হয়না। এর মধ্যে এসে পড়ে আগাম অর্থ বছরের টাকা। অভিযোগে জানা গেছে, আখলাক উল জামিল তখন মহা খুশী। কৌশলে অর্থ আত্নসাৎয়ে আখলাক উল জামিল হাতিয়ে নেন সরকারের কোটি কোটি। কোন ব্যক্তি কিংবা ঠিকাদার এর প্রতিবাদ করলে আখলাক উল জামিলের কিছুই হয়না কারণ কোন জবাবদিহিতাই তো নেই।

ময়মনসিংহের একটি সাংবাদিক টিম অনুসন্ধান করতে গিয়েছিলেন আগের অর্থ বছরে বরাদ্দের কাজের সন্ধানে।  তারা গিয়েছিলেন ফুলবাড়িয়ার রঘুনাথবাজার এবং মুক্তাগাছার বানার নদী পরিদর্শনে কিন্তু সাংবাদিক টিম হতাশ হয়েছেন। আশে পাশের  লোকজন জানান নদীতে কি কাজ হয়েছে ?  তারা জানান কোন কাজই তো হয়নাই। মাঝখান থেকে নির্বাহী প্রকৌশলী আখলাক উল জামিলকে ম্যানেজ করে আগাম টাকাই তুলে নেয়া হয়েছে। আর আখলাক উল জামিল তো ম্যানেজের জন্য প্রস্তুতই ছিলো। সুতরাং কোন কাজ প্রকল্পে হয়নি। জানা গেছে, এভাবেই ময়মনসিংহ পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী আখলাক উল জামিলের মতো সকল সরকারি প্রতিষ্ঠানের শীর্ষ কর্মকর্তাদের একেকজন দেশটাকে ফোকলা বানিয়ে কোটি কোটি টাকা নির্ভিঘ্নে আত্নসাৎ করেছেন।

জানা গেছে, এতোকিছুর পরেও ময়মনসিংহ পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী আখলাক উল জামিলের অনিয়মের হ্যাডাম কমেনি। তিনি নাকি মানুষকে এখনও বলে বেড়ান আওয়ামিলীগ সরকার আবারও ক্ষমতায় আসবে।

এরপরও কি ময়মনসিংহ দূর্ণীতি দমন কমিশন দূদকের হস্তক্ষেপ কাম্য নয় — প্রশ্ন ময়মনসিংহ সচেতন জনতার।
সচেতন জনতা পাউবোর নির্বাহী প্রকৌশলী জামিলুর রহমানের বিভাগীয় তদন্ত কামনা করে তার বিরুদ্ধে আইনানুগ দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করেছেন।