ময়মনসিংহ প্রেসক্লাব ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানকে ব্যর্থ করার পাঁয়তারা করছে; সংস্কার চায় আন্দোলনকারীরা
স্টাফ রিপোর্টারঃ আগস্ট ছাত্র জনতার অভ্যুত্থানকে ব্যর্থ করার জন্য ফ্যাসিস্ট সরকারের কর্মকাণ্ড বহাল রেখে বর্তমান অন্তবর্তীকালীন সরকারকে ব্যর্থ করার চেষ্টা করছে ময়মনসিংহ প্রেসক্লাবের কতিপয় ফ্যাসিস্ট সাংবাদিকরা। গত ১৭টি বছর স্বৈরাচারী সরকারের মন্ত্রী-এমপি-মেয়র ও অন্যান্য নেতাকর্মীদের তোষামোদি করে অবৈধভাবে হাতিয়ে নিয়েছেন কোটি কোটি টাকা। তবে তারাই ৫ই আগস্টে পর হঠাৎ ভোল পাল্টিয়ে ফেললেন। আওয়ামী লীগ থেকে হয়ে গেলেন বিএনপি-জামায়াত।
ময়মনসিংহ প্রেসক্লাবে অনির্বাচিত কর্মকর্তা অবৈধভাবে দায়িত্বভার গ্রহণ করা প্রেসক্লাব কর্মকর্তারা হচ্ছেন- সহ সভাপতি অধ্যাপক আবুল কাশেম ও নওয়াব আলী, সাধারণ সম্পাদক সাইফুল ইসলাম, কোষাধ্যক্ষ জাহাঙ্গীর কবির জুয়েল, যুগ্ম সম্পাদক মো. শাহজাহান, ক্রীড়া সম্পাদক আবু সালেহ মো. মুসা, সাহিত্য ও সংস্কৃতি সম্পাদক শরীফুজ্জামান টিটু, প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক এএসএম হোসাইন শাহিদ, নাট্য ও প্রমোদ সম্পাদক আদিলুজ্জামান আদিল, নির্বাহী সদস্য পদে অমিত রায়, ড. ইয়াহিয়া মাহমুদ কামাল, মীর গোলাম মোস্তফা, ড. মোহাম্মদ নূরুল্লাহ, নিয়ামুল কবীর সজল, মোশাররফ হোসেন ও আব্দুল মতিন। পদাধিকারবলে এই কমিটির সভাপতি ময়মনসিংহের জেলা প্রশাসক মুফিদুল আলম।
ময়মনসিংহ জেলা আওয়ামী লীগের সিনিয়র সহ সভাপতি এডভোকেট আব্দুর রাজ্জাক, তার সঙ্গে ঘাতক দালাল নির্মল কমিটির সভাপতি মোঃ শাহজাহান, মহানগর জাপা(রওশন) মহানগর সাধারণ ও কথিত মুক্তিযোদ্ধা সম্পাদক মোশারফ হোসেন, বাকৃবিতে সাবেক কর্মকর্তা নওয়াব আলী, ন্যাপ নেতা ও প্রিন্সিপাল মতিউর রহমানের বড় ভাই মোঃ জিয়া, বর্তমান সেক্রেটারি ফ্যাসিস্ট নেতা অমিত রায়সহ অনেকেই। অপরদিকে নবাগত দায়িত্ব গ্রহণকারী গফরগাঁওয়ের সাবেক ছাত্রলীগ নেতা সাংবাদিক ইউনিয়নের সাইফুল ইসলাম কখনো সাইফুল মাহমুদ নির্বাচন ও ভোট ছাড়াই কমিটির দায়িত্বভার গ্রহণ করেছেন। একপক্ষের বর্জন ও অনুপস্থিতিতে সাধারণ সম্পাদক অমিত রায় অনির্বাচিত কমিটির কাছে এই দায়িত্বভার হস্তান্তর করে জুলাই আগস্টের ছাত্র-জনতার বিপ্লবের আকাঙ্ক্ষা শুরুতেই প্রশ্নবিদ্ধ করে ফ্যাসিস্ট সাবেক আওয়ামী সরকারের পদাঙ্ক অনুসরণ করেছে।
ময়মনসিংহ প্রেসক্লাব সংস্কার আন্দোলনকারীরা ২ জানুয়ারি ২০২৪ তারিখে প্রেসক্লাবে অবস্থান কর্মসূচিতে মূখ্য সংগঠক, সাংবাদিক নেতা শিবলী সাদিক খান দাবী করে বলেন অপেশাদার সাংবাদিক সদস্যদের বাতিল করে “প্রেসক্লাব ফর প্রেসম্যান” গঠনের প্রয়োজনে সকল পেশাদার সাংবাদিক সদস্যদের নামের তালিকা প্রণয়ন, এডহক কমিটি গঠন, সম্মিলিত সাধারণ সভায় খসড়া প্রস্তাবিত গঠনতন্ত্র, সংযোজন বিয়োজন, পরিমার্জন করে সর্বসম্মতিক্রমে অনুমোদনের ব্যবস্থা গ্রহণ, ভোটার তালিকা করে নির্বাচন। এসকল দাবিতে সাংবাদিকরা ইতিমধ্যে জেলা প্রশাসনে সাংবাদিকদের তালিকা এবং প্রস্তাবিত গঠনতন্ত্র দাখিল করেছেন। জেলা প্রশাসন এর পক্ষ থেকে অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট পুনরায় সমঝোতা বৈঠক আহ্বান করা হবে বলে আশ্বাস প্রদান করা হয়।
পরিবর্তিত পরিস্থিতিতেও একই প্যানেলভুক্ত নেতৃবৃন্দ নির্বাচন ছাড়া বিনা ভোটে ময়মনসিংহ প্রেস ক্লাবের দায়িত্বভার নিয়েছেন। দায়িত্বভার গ্রহণকালে অপর প্যানেলের সদস্যরা যোগ দেননি। ময়মনসিংহ প্রেস ক্লাব নির্বাচনে সিডিউল অনুযায়ী গত ১৫ ডিসেম্বর মনোনয়ন দাখিল, ১৮ ডিসেম্বর বাছাই শেষে বৈধ প্রার্থীদের তালিকা প্রকাশ ও ২৭ ডিসেম্বর নির্বাহী পরিষদ নির্বাচন অনুষ্ঠানের কথা ছিল। কিন্তু মনোনয়ন জমাদানের দিন একপক্ষকে বাধাবিঘ্ন ও মনোনয়ন জমাদান কক্ষে তালা লাগানো ও রিটার্নিং অফিসারকে হুমকি প্রদানসহ ৩ নির্বাচন কর্মকর্তার একযোগে পদত্যাগের ঘটনায় গত ২৬ ডিসেম্বরের অনুষ্ঠিতব্য বার্ষিক সভা পিছিয়ে ২ জানুয়ারি করা হয়। ঐ দিনই কমিটি ঘোষণা করা হয়।
এ কমিটি ঘোষণার দিন শান্তিপূর্ন আন্দোলনকে ভিন্ন খাতে প্রভাবিত করতে কয়েকটি পত্রিকায় মিথ্যা ভীত্তিহীন বানোয়াট সংবাদ প্রকাশ করায় তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছেন আন্দোলনকারী নেতৃবৃন্দ।