থার্টিফার্স্ট নাইট ঘিরে ডিএমপির ১৩ নির্দেশনা
নিজস্ব প্রতিবেদক : আসন্ন ইংরেজি নববর্ষ বা থার্টিফার্স্ট নাইট উদযাপনে উন্মুক্ত স্থানে কোনো অনুষ্ঠানের আয়োজন করা যাবে না বলে জানিয়েছে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ (ডিএমপি)।
আজ মঙ্গলবার এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে ডিএমপি জানায়, ইংরেজি নববর্ষ উদযাপনে আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি অবনতির যে কোনো ধরনের আশঙ্কা রোধে তারা বদ্ধপরিকর।
সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, করোনাভাইরাস মহামারির কারণে বিভিন্ন দেশে সীমিত আকারে অনুষ্ঠান পালন করা হচ্ছে। ইংরেজি নববর্ষের প্রাক্কালে ৩১ ডিসেম্বর রাতে ঢাকা মহানগরীর বিভিন্ন এলাকায়ও স্বাস্থ্যবিধি মেনে সীমিত আকারে নির্ধারিত অনুষ্ঠান পালিত হবে।
তবে সরকারের নির্দেশনা অনুসারে উন্মুক্ত স্থানে কোনো অনুষ্ঠানের আয়োজন করা যাবে না।
ডিএমপির মতে, উৎসবের নামে কিছু উচ্ছৃঙ্খল ব্যক্তি নিজস্ব সংস্কৃতি, মূল্যবোধ ও ঐতিহ্যবিরোধী কর্মকাণ্ডে লিপ্ত হয়। কেউ কেউ আনন্দের আতিশয্যে পটকাবাজি, আতশবাজি, অশোভন আচরণ, বেপরোয়া গাড়ি ও মোটর সাইকেল চালানোর মাধ্যমে রাস্তায় প্রতিবন্ধকতা ও দুর্ঘটনা ঘটিয়ে অনাকাঙ্ক্ষিত পরিস্থিতির উদ্ভব ঘটায়।
এসব কর্মকাণ্ডে সাধারণ মানুষের স্বাভাবিক জীবনযাত্রা ব্যাহত হওয়ার পাশাপাশি আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি অবনতির আশঙ্কা থাকে।
তাই এ বছর ৩১ ডিসেম্বর রাতে পট্কাবাজি, আতশবাজি, বেপরোয়া গাড়ি, মোটরসাইকেল চালানোসহ যে কোনো ধরনের অশোভন আচরণ এবং বেআইনি কার্যকলাপ থেকে বিরত থাকার জন্য সংশ্লিষ্ট সবাইকে অনুরোধ জানানো হয়েছে।
পাশাপাশি কিছু নির্দেশনা মেনে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষায় সহযোগিতা করার জন্য ডিএমপির পক্ষ থেকে সংশ্লিষ্ট সবাইকে অনুরোধ করা হয়। সেগুলো হলো-
১. ঢাকা মহানগরের সার্বিক নিরাপত্তা ও আইন-শৃঙ্খলার স্বার্থে রাস্তার মোড়, ফ্লাইওভার, রাস্তায়, ভবনের ছাদে এবং প্রকাশ্যে জায়গায় কোনো ধরনের জমায়েত, সমাবেশ কিংবা উৎসব করা যাবে না।
২. উন্মুক্ত স্থানে নববর্ষ উদযাপন উপলক্ষে কোনো ধরনের অনুষ্ঠান বা সমবেত হওয়া যাবে না। করা যাবে না নাচ, গান কিংবা সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান।
৩. কোথাও কোনো ধরনের আতশবাজি বা পটকা ফোটানো যাবে না।
৪. ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এলাকায় সন্ধ্যা ৬টার পরে বহিরাগত কোনো ব্যক্তি বা যানবাহন প্রবেশ করতে পারবে না।
৫. ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় আবাসিক এলাকায় বসবাসরত শিক্ষক, কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের গাড়ি নির্ধারিত সময়ের পর পরিচয় প্রদান সাপেক্ষে শাহবাগ ক্রসিং দিয়ে প্রবেশ করতে পারবে। পরিচয় প্রদান সাপেক্ষে নীলক্ষেত ক্রসিং দিয়ে পায়ে হেঁটে প্রবেশ করা যাবে।
৬. গুলশান ও বনানী এলাকায় রাত ৮ টার পর বহিরাগতরা প্রবেশ করতে পারবে না। তবে ওই এলাকায় বসবাসরত নাগরিকরা নির্ধারিত সময়ের পর কামাল আতার্তুক এভিনিউ (কাকলী ক্রসিং) এবং মহাখালী আমতলী ক্রসিং দিয়ে পরিচয় দিয়ে প্রবেশ করতে পারবেন।
৭. একইভাবে উল্লেখিত সময়ে সার্বিক নিরাপত্তার স্বার্থে গুলশান, বনানী, বারিধারা ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় আবাসিক এলাকায় যেসব নাগরিক বসবাস করেন না তাদেরকে বর্ণিত এলাকায় যাওয়ার জন্য নিরুৎসাহিত করা হয়।
৮. রাত ৮টার পর হাতিরঝিল এলাকায় কাউকে অবস্থান করতে দেয়া হবে না।
৯. গুলশান, বনানী ও বারিধারা এলাকায় বসবাসরত নাগরিকদেরকে ৩১ ডিসেম্বর রাত ৮ টার মধ্যে স্ব-স্ব এলাকায় প্রত্যাবর্তনের জন্য অনুরোধ করা হয়।
১০. ৩১ ডিসেম্বর সন্ধ্যা ৬টার পর ঢাকা মহানগরীর কোনো বার খোলা রাখা যাবে না।
১১. রাত ১০টার পর সব ফাস্টফুড দোকান বন্ধ থাকবে।
১২. সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে সীমিত আকারে আবাসিক হোটেলগুলোতে নিজস্ব ব্যবস্থাপনায় অনুষ্ঠান করা যাবে। তবে কোনোভাবেই ডিজে পার্টি করতে দেয়া যাবে না।
১৩. ইংরেজি নববর্ষের প্রাক্কালে ৩১ ডিসেম্বর সন্ধ্যা ৬টা থেকে ১ জানুয়ারি ভোর ৬টা পর্যন্ত ঢাকা মহানগরীর বিভিন্ন আবাসিক হোটেল, রেস্টুরেন্ট, জনসমাবেশ ও উৎসবস্থলে সকল প্রকার লাইসেন্সকৃত আগ্নেয়াস্ত্র বহন না করার জন্য সংশ্লিষ্ট নগরবাসীর প্রতি অনুরোধ জানানো হয়।
এসব নির্দেশনা পালনে ব্যর্থ হলে আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হবে বলেও জানিয়েছে ডিএমপি।