যুক্তরাষ্ট্র বংগবন্ধু পরিষদের ঐতিহাসিক ১০ জানুয়ারী পালন
যুক্তরাষ্ট্র বংগবন্ধু পরিষদের ঐতিহাসিক ১০ জানুয়ারা পালন হাকিকুল ইসলাম খোকন সিনিয়র সংবাদদাতা :যথাযথ মর্যাদা ও গুরুত্বের সাথে যুক্তরাষ্ট্র বঙ্গবন্ধু পরিষদের উদ্যোগে পালিত হল সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালী, স্বাধীন বাংলাদেশের স্থপতি, জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্বদেশ প্রত্যাবর্তন দিবস।
সংগঠনের সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা ড.নুরান নবীর সভাপতিত্বে ১০ই জানুয়ারি রবিবারে অনলাইন জুম কনফারেন্সের মাধ্যমে আয়োজতি আলোচনা সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে অংশগ্রহণ করেন যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী লীগের সভাপতি ডঃ সিদ্দিকুর রহমান এবং বিশেষ অতিথি হিসেবে অংশগ্রহণ করেন সংগঠনের উপদেষ্টা ও বাংলাদেশ লিভারেশন ওয়ার ভেটারেন্স ১৯৭১ ইউএসএ -এর সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা গোলাম মোস্তফা খান মিরাজ। আলোচনা সভায় যুক্তরাষ্ট্রের বিভিন্ন অঙ্গরাজ্য থেকে নেতৃবৃন্দরা অংশগ্রহণ করেন।
যুক্তরাষ্ট্র বঙ্গবন্ধু পরিষদের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক স্বীকৃতি বড়ুয়ার পরিচালনায় আলোচনা সভার শুরুতেই জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান, মহান মুক্তিযুদ্ধে সকল শহীদ, ১৯৭৫ সালের ১৫ই আগষ্ট ও ৩রা নভেম্বরে নিহত সকলের আত্মার প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে এক মিনিট নীরবতা পালন করা হয়।
সভাপতির বক্তব্যে বীর মুক্তিযোদ্ধা ড. নুরুান নবী স্মৃতিচারণ করে বলেন বঙ্গবন্ধুর ১০ই জানুয়ারির ভাষণ মঞ্চের খুব কাছে থেকেই শুনার সুযোগ আমার হয়েছিল, যেটা আমার জীবনে একটি স্মরণীয় দিন। তিনি আরও বলেন, বঙ্গবন্ধু দেশে এসেই রাষ্ট্রপতির পদ ছেড়ে প্রধামন্ত্রীর দায়িত্ব গ্রহণ করে দেশ গড়ার লক্ষ্যে বিভিন্ন পদক্ষেপ তিনি নিলেন, কিন্তু জাতির মধ্যে যে ঐক্য তিনি গড়েছিলেন, ভিবিন্ন ষড়যন্ত্রের মাধ্যমে সেই ঐক্যে ফাটলের সৃষ্টি হয় এবং পরবর্তীতে বৃহত্তর ষড়যন্ত্রের মাধ্যমে মেজর রশিদ ও মেজর ফারুক বঙ্গবন্ধুকে স্বপরিবারে হত্যা করে। কিন্তু এদের পিছনে যে দেশী বিদেশী ষড়যন্ত্রকারী ছিল, আজও তা আমাদের অজানা রয়ে গেলো। আমি দাবি জানাই একটি জাতীয় কমিশন গঠন করে সেই দেশী বিদেশী ষড়যন্ত্রকারীদের নাম পরিচয় উদ্ঘাটন করে জাতীর কাছে তা প্রকাশ করার।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে ড.সিদ্দিকুর রহমান বলেন বঙ্গবন্ধু বিশাল একটি বিষয়, যেটা অনেক গবেষণার দাবি রাখে। আমারা যারা সেই বঙ্গবন্ধুর আদর্শের রাজনীতি করি, আমরা গৌরবান্বিত। সেই বঙ্গবন্ধুর কন্যা মাননীয় প্রধামন্ত্রি জননেত্রি শেখ হাসিনা বাংলাদেশকে ২০২১ সালে মধ্যম আয়ের দেশ এবং ২০৪১ সালে উন্নত-সমৃদ্ধ দেশে পরিণত করতে অক্লান্ত পরিশ্রম করে যাচ্ছেন, আসুন আমরা সবাই সকল ভেদাবেদ ভুলে জননেত্রীর নির্দেশে জাতির জনকের স্বপ্ন সোনার বাংলা গড়ায় কাজ করি।
বিশেষ অতিথির বক্তব্যে বীর মুক্তিযোদ্ধা গোলাম মোস্তফা খান মিরাজ বলেন স্বাধীনতার পরে আমরা অনিশ্চয়তায় ছিলাম বঙ্গবন্ধু ফিরবেন কিনা। বঙ্গবন্ধু যদি ফিরে না আসেন তাহলে আমাদের কি হবে, বঙ্গবন্ধু ছাড়া এই সদ্য স্বাধীন বাংলাদেশের কি হবে- এমন শঙ্কায় যখন আমরা ভুগছিলাম, মহান মুক্তিযুদ্ধের পরে তখনও আমাদের পাশে ছিলেন যিনি, যার কাছে বাংলার মাটি ও মানুষ সবচেয়ে ঋণী তিনি হচ্ছেন শ্রীমতি ইন্দিরা গান্ধী। বঙ্গবন্ধু নিজেই তার ভাষণে বলেছিলেন ইন্দিরা গান্ধী এবং ভারতের জনগণের ঋণ আমরা শোধ করতে পারব না। কিন্তু স্বাধীনতার এতো বছর পরেও যারা আজ ভারতের বদনাম করে, ভারত সয্য করতে পারে না, জননেত্রী শেখ হাসিনাকে ভারতের সাথে আপোষকারী বলে বদনাম ছড়ায়, তারা হচ্ছে পাকিস্তানপন্থি, তারা বাংলাদেশের উন্নয়ন চায় না। তাদের বিরুদ্ধে সোচ্চার হতে হবে আমাদের সকলের। বঙ্গবন্ধুর কন্যা জননেত্রী শেখ হাসিনা যখন বাংলাদেশকে উন্নয়নের শিখরে নিয়ে যাচ্ছে, সেই স্বাধীনতা বিরোধীরাই নানা ষড়যন্ত্র করে যাচ্ছে।
সভায় অন্যান্য বক্তারা বলেন জাতির জনক একটি স্বপ্নময় বাংলাদেশের স্বপ্ন দেখে ছিলেন। তিনি বাঙালি জাতিকে মাতা উঁচু করে বীরের বেশে বেঁচে থাকার জন্য শিক্ষা দিয়ে গেছেন। আমাদেরকে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের অনুপ্রেরণাকে কাজে লাগিয়ে অর্থনৈতিক মুক্তি লক্ষ্যে স্বপ্নময় বাংলাদেশ রূপান্তরিত করতে জননেত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে কাজ করে যেতে হবে।
সভায় অন্যান্যদের মাঝে বক্তব্য রাখেন যুক্তরাষ্ট্র বঙ্গবন্ধু পরিষদের উপদেষ্টা যতাক্রমে এম এ সালাম (নিউজার্সি) ও সিনিয়র সাংবাদিক হাঁকিকুল ইসলাম খোকন, সহসভাপতি আব্দুর রহমান বাদশা, সদস্য শেখ আতিকুল ইসলাম ও সাবেক সাধারণ সম্পাদক কলামিস্ট শীতাংশু গুহ, বীর মুক্তিযোদ্ধা ইঞ্জিনিয়ার আব্দুর রহমান, বঙ্গবন্ধু পরিষদ ক্যালিফোর্নিয়া শাখার সাধারণ সম্পাদক রানা মাহমুদ, আটলান্টা শাখার সাধারণ সম্পাদক মাহবুবুর রহমান ভুঁইয়া, পেনসিলভেনিয়া শাখার সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা আবু তাহের বীর প্রতীক ও সাধারণ সম্পাদক কাজী শামিম, গ্রেটার ওয়াশিংটন শাখার নেত্রবৃন্দ যত্রাক্রমে সভাপতি দস্তগির জাহাঙ্গীর, সাধারণ সম্পাদক নাসরিনা আহাম্মদ, যুগ্ম সাংগঠনিক সম্পাদক মামুনুর রশিদ, শিক্ষা ও গবেষণা বিষয়ক সম্পাদক মোহাম্মদ নাজমুল রতন, দপ্তর ও প্রচার সম্পাদক মোহাম্মদ আল আমিন হোসেন, ডঃ দেলোয়ার হোসেন (আলাবামা), মেগি হালিম (টেক্সাস), প্রমুখ। যুক্তরাষ্ট্র বঙ্গবন্ধু পরিষদের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক রাফায়েত চৌধুরী আলোচনা সভায় অংশগ্রহনের জন্য সবার প্রতি কৃতজ্ঞতা ও ধন্যবাদ জ্ঞ্যাপন করেন।