ময়মনসিংহ সদরে মাথা গোঁজার ঠাঁই পেলো ১৭৬ গৃহহীন পরিবার
ষ্টাফ রিপোর্টারঃময়মনসিংহ সদরে মুজিববর্ষ উপলক্ষে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পক্ষ থেকে ভূমিহীন ও গৃহহীন পরিবারের মাঝে ৪র্থ পর্যায়ের ২য় ধাপে ১৭৬টি দৃষ্টিনন্দন ঘরের দলিল, খতিয়ান হস্তান্তর করা হয়েছে। প্রতিটি ঘরে রয়েছে ২টি কক্ষ, ১টি রান্নাঘর ও ১টি টয়লেট এবং সামনের দিকে টানা বারান্দা।
সরকারি নির্দেশনা অনুযায়ী টাস্কফোর্স কমিটির মাধ্যমে উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোহাম্মদ শফিকুল ইসলামের নেতৃত্বে সেমিপাকা ঘরগুলোর নির্মাণ করা হয়।
বুধবার (৯আগষ্ট) সকালে ৪র্থ পর্যায়ে ২য় ধাপে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ভিডিও কনফারেন্সিং এর মাধ্যমে ৬৪টি জেলায় ২২১০১ টি সেমি-পাকাঘর ও ২ শতক জমিসহ ভূমিহীন ও গৃহহীন পরিবারের মধ্যে বিতরণ কার্যক্রমের শুভ উদ্বোধন করেন। একই সাথে তিনি ময়মনসিংহ সদর উপজেলা, ঈশ্বরগঞ্জ, হালুয়াঘাট, ধোবাউড়া, গফরগাঁও ও মুক্তাগাছা উপজেলাকে ভূমিহীন ঘোষণা করেন। এর পরপরই সারাদেশের ন্যায় ময়মনসিংহের সদর উপজেলার ১৭৬ ভূমিহীন ও গৃহহীন পরিবার নিকট ঘরের দলিল, খতিয়ান হস্তান্তর করেন অতিরিক্ত বিভাগীয় কমিশনার (রাজস্ব) তাহমিনা আক্তার।
উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোহাম্মদ শফিকুল ইসলাম এর সভাপতিত্বে উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার মোস্তাফিজুর রহমান ভূইয়ার সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট তাসলিমা মোস্তারী, উপজেলা চেয়ারম্যান আশরাফ হোসাইন, সহকারী কমিশনার ভূমি এইচ এম ইবনে মিজান, জাতীয় সংসদ সদস্য বেগম রওশন এরশাদ এমপির প্রতিনিধি আব্দুল আউয়াল সেলিম,জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি এহতেশামুল আলম,সাবেক সহ সভাপতি মমতাজ উদ্দীন,উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আব্দুস সালাম সরকার,প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা মনিরুল হক ফারুক,উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান মোস্তাফিজুর রহমান শাহিন,মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান আফরোজা হক কলি,উপজেলা প্রকৌশলী আব্দুল্লাহ আল মামুন,মৎস কর্মকর্তা ফারজানা হোসেন,যুব উন্নয়ন কর্মকর্তা আবু আহসান মেঃ রেজাউল হক,শিক্ষা অফিসার মনিকা পারভীন,ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান আলহাজ্ব আবু সাঈদ,আলহাজ্ব সাইদুর রহমান,শামসুল হক কালু,হানিফ সরকারসহ সকল ইউপি চেয়ারম্যান, উপজেলা প্রশাসনের সকল কর্মকর্তাগণ উপস্থিত ছিলেন।
ঘর পাওয়ার সুবিধাভোগীর তালিকায় থাকা ভাবখালী ইউনিয়নের বেলতলী গ্রামের রুবেল বলী বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কল্যাণে মাথা গোজার ঠাঁই হতে যাচ্ছে। বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনার জন্য ভূমিহীন-গৃহহীন পরিবারের পক্ষ থেকে প্রাণভরে দোয়া করি, মহান আল্লাহ তায়ালা যেন তাকে সুস্থ রাখেন এবং ভালো রাখেন।
উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা মনিরুল হক ফারুক জানান, ইউএনও স্যারের নেতৃত্বে স্বচ্ছতা এবং সততার সঙ্গে শতভাগ মান বজায় রেখে গৃহনির্মাণ করা হয়েছে।
সহকারী কমিশনার ভূমি এইচ এম ইবনে মিজান জানান, দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের অর্থায়নে আশ্রয়ন প্রকল্প-২ এর আওতায় ৪র্থ পর্যায়ের ২য় ধাপে গৃহহীন ও ভূমিহীন পরিবার পূনর্বাসন কার্যক্রমের অংশ হিসেবে উপজেলায় ১৭৬পরিবার ঘর পেয়েছে। প্রধানমন্ত্রী তাদেরকে ঘরের চাবি হস্তান্তর করেছেন।
উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোহাম্মদ শফিকুল ইসলাম জানান, উপজেলায় ৪র্থ ধাপে ২য় পর্যায়ে নির্মিত হয়েছে ১৭৬টি সেমিপাকা ঘর। মুজিববর্ষ উপলক্ষে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ভূমিহীন ও গৃহহীন পরিবারকে ২ শতাংশ জমি এবং গৃহ প্রদান করেন। এর আগেও
১ম পর্যায়ে ২৫০টি,২য় পর্যায়ে ৭৫টি,৩য় পর্যায়ে (১ম ধাপ) ৬৫টি,এবং ৩য় পর্যায়ের (২য় ধাপ) ৫৫টি, সর্বশেষ গত ২২শে মার্চ চতুর্থ পর্যায়ে প্রথম ধাপে আরো ১১৪ টি পরিবারের নিকট গৃহ হস্তান্তর করা হয়েছে। এই পর্যন্ত ৫৫৯টি ক’ শ্রেণির ভূমিহীণ ও গৃহহীন পরিবারকে গৃহ প্রদান করা হয়েছে। এর মধ্য দিয়ে ভূমিহীন ও গৃহহীন মুক্ত ঘোষণা হয়েছে সদর উপজেলা।
উপজেলা চেয়ারম্যান আশরাফ হোসাইন জানান, ক্ষুধামুক্ত দারিদ্র্য সোনার বাংলা বিনির্নাণে মুজিববর্ষে বাংলাদেশের একজন মানুষও গৃহহীন থাকবেনা। এ উদ্যোগটি বঙ্গবন্ধু কন্যার নেতৃত্বে বিশ্বের ইতিহাসে নতুন সংযোজন। জাতির পিতার জন্মশতবর্ষে এরচেয়ে বড় এচিভমেন্ট আর নেই।