ক্ষতিপুরণ ও চাকুরির দাবীতে বড়পুকুরিয়া খনি এলাকার ক্ষতিগ্রস্থদের বিক্ষোভ
মেহেদী হাসান,ফুলবাড়ী (দিনাজপুর) প্রতিনিধি:বড়পুকুরিয়া খনির ভূগর্ভে কয়লা উত্তোলনের সময় মাইনিং বিস্ফরনের কারনে সৃষ্ট কৃত্রিম ভুমিকম্পের ফলে খনি এলাকার বেশ কিছু গ্রামের বাড়ী-ঘরে ফাটল দেখা দিয়েছে। ক্ষতিগ্রস্ত এসব ঘর-বাড়ীর ফাটল সংস্কার,রাস্তা সংস্কার,পানির সমস্যা সমাধান সহ খনিতে স্থানীয়দের চাকুরির দাবীতে বিক্ষোভ মিছিল ও মানববন্ধন করেছেন দিনাজপুরের বড়পুকুরিয়া কয়লা খনির কারনে ক্ষতিগ্রস্থ গ্রামবাসীরা।
তারা দাবী পুরনের জন্য দুই মাসের আল্টিমেটাম ঘোষনা করেছেন,অন্যথায় কঠোর আন্দোলন করার ঘোষনা দিয়েছেন। আল্টিমেটাম ঘোষনা করেন বসতবাড়ী রক্ষা কমিটির সভাপতি আবুল কালাম আজাদ।
রোববার সকাল সাড়ে ১০টায় গ্রামবাসীদের সংগঠন বসতবাড়ী রক্ষা কমিটির উদ্যোগে,বড়পুকুরিয়া কয়লা খনি এলাকার পাতরাপাড়া মোড়ে ঘন্টাব্যাপী এ মানববন্ধন ও বিক্ষোভ মিছিল করেন তারা।
এর আগে সেখানে এলাকার শতশত নারী-পুরুষ, শিশু-কিশোর, শিক্ষক-ছাত্র-ছাত্রীরা একটি বিক্ষোভ মিছিল বের করে।
মানববন্ধনে বক্তব্য রাখেন,বসতবাড়ী রক্ষা কমিটির সাধারন সম্পাদক মামুনুর রশিদ,সাবেক ইউপি সদস্য সাইদুর রহমান, হাফিজুর রহমান হাপাসহ গ্রামবাসীদের প্রতিনিধিগণ।
গ্রামবাসীরা জানায়,খনির ভূ-গর্ভে বিস্ফরনের কারনে খনি এলাকার পাতরাপাড়া গ্রামের বৈধ্যনাথপুর, মথুরাপুর,বাঁশপুকুর,শিবকৃষ্ণপুরসহ চার মৌজার ঘরবাড়ীতে কম্পন সৃষ্টি হয়,এতে তাদের ঘরবাড়ীতে ফাটল ধরে এখন ঝুঁকিপুর্ন হয়ে পড়েছে। খনির কারনে খয়েরপুকুর থেকে ফুলবাড়ী রাস্তাটি পানির নিচে তলিয়ে গেছে,চলাচলের অযগ্য হয়ে পড়েছে,ফলে তাদের যাতায়াতের চরম দুর্ভোগ সৃষ্টি হয়েছে। গ্রামবাসীরা আরও বলেন,খনির ভূ-গর্ভ থেকে সবসময় পানি তোলার কারনে, ভূ-গর্ভের পানির স্তর দিন দিন নিচে নেমে যাচ্ছে,ফলে হস্তচালিত টিবওয়েল দিয়ে আর পানি উঠছেনা,এতে করে তাদের খাবার পানির সঙ্কট দেখা দিয়েছে। একারনে তারা অনতি বিলম্বে ফাটল ধরা ঘরবাড়ীর ক্ষতিপুরন,সড়ক মেরামত,খাবার পানির ব্যবস্থা ও বেকার যুবকদের চাকুরি দেয়ার দাবীতে এই আন্দোলনে নেমেছেন। মানববন্ধনে ক্ষতিগ্রস্থ এলাকার শতশত নারী-পুরুষ অংশ নেয়।
বসতবাড়ী রক্ষা কমিটির সভাপতি আবুল কালাম আজাদ তার বক্তব্যে বলেন,খনির কারণে সৃষ্ট কৃত্রিম ভ‚মিকম্পের আতংকে প্রায় ছয় বছরের অধিক সময় ধরে গ্রাম গুলির বাড়ী-ঘর ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে। গ্রামের এমন কোন বাড়ী-ঘর নেই যে ফাটল ধরেনি। তাছাড়া অনেক বাড়ী-ঘর বসবাসের অযোগ্য পড়েছে। এছাড়া স্থানীয় ক্ষতিগ্রস্থদের চাকুরি না দিয়ে বাহির থেকে লোক নিয়োগ দেয়া হচ্ছে। বিষয়গুলো নিয়ে একাধিকবার খনি কর্তৃপক্ষকে চিঠির মাধ্যমে জানানো হলে; খনি কর্তৃপক্ষ বলেছেন তারা টিম গঠন করেছেন তদন্তে যাবে, কিন্তু এপর্যন্ত কোন টিম আসেনি ক্ষতিগ্রস্থ এলাকায়। আগামী দুই মাসের মধ্যে তাদের দাবী পুরন না হলে তারা কঠোর আন্দোলন করতে বাধ্য হবেন।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে বড়পুকুরিয়া কয়লাখনির ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) মো. সাইফুল ইসলাম সরকার জনান, বিষয়গুলো নিয়ে আমাদের একটি টিম মাঠ পর্যায়ে কাজ করছে। একই সাথে বিষয়টি নিয়ে আমরা বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়কে (বুয়েট) চিঠি দিয়ে জানিয়েছি,তাদের একটি টিম মাঠে কাজ করেছে। আশা করছি কিছু দিনের মধ্যেই বিষয়টির সুষ্ঠ সমাধান করা সম্ভব হবে।