ছত্রাকের কারনে সীম চাষীরা বিপাকে, চিন্তিত কৃষক
সংবাদদাতা হারুনুর রশিদ : সবজির জন্য খ্যাত নরসিংদীর রায়পুরায় উপজেলায় অন্য সবজির পাশাপাশি সীম চাষে ঝুকছে কৃষকরা। অল্প পুজিতে অধিক লাভ হওয়ায় সীম চাষের প্রতি অধিক ঝুকছেন কৃৃষকরা। গত বছরের তুলনায় চলতি বছর এলাকায় সীম চাষ বৃদ্ধি পেয়েছে। তবে অধিক কুয়াশার কারনে ছত্রাক জনিত পঁচা রোগের কারণে বিপাকে পরেছেন সীম চাষীরা। বর্তমানে ঠান্ডার কুয়াশার কারনে সীম গাছে ছত্রাকজনিত রোগে আক্রান্ত হওয়ায় শন্কিত অনেক চাষীরা। উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা যায়, বিভিন্ন এলাকায় এ বছর ৯৭০ হেক্টর জমিতে সীম চাষের চাষের লক্ষ মাত্রা ধরা হয়েছে । সারে ৯ হাজার মেট্রিক টন সীম অর্জিত হয়। রায়পুরা উপজেলায় আশ্বীনি, টংগীয়া, নলডুক, হাতিরকান চাষ হয়ে থাকে। গত বছর সীম চাষের পরিমাণ ছিল ৯৬৬ হেক্টর জমি।
শুরুতে প্রতি কেজি সীম ১০০/১২০ টাকায় বিক্রি করলেও বর্তমানে প্রতি কেজি সীম কৃষকরা পাইকারি ৩০/৩৫ টাকা দরে বিক্রি করছেন। ঢাকা সিলেট মহাসড়কের বারৈচা এলাকা দিয়ে গেলে দেখা যায় সারি সারি সীমের জমি। অন্য ফসলের তুলনায় সীম চাষ লাভজনক হওয়ায় এ অঞ্চলের কৃষকেরা সীম চাষের প্রতি বেশি ঝুকে পড়ছেন। উপজেলার শেরপুর, আদিয়াবাদ, উত্তর বাখরনগর, বাঙ্গালীনগর, নয়াচরর প্রভৃতি এলাকায় ব্যাপকহারে সীম চাষ করা হয়। এ সকল এলাকার সীম স্হানীয় চাহিদা মিটিয়ে রাজধানীসহ বিভিন্ন জেলায় সরবরাহ করা হয়। উপজেলার শেরপুর গ্রামের সীম চাষী গোলাম কিবরিয়া বলেন, তিনি এবার ৪০ শতক জমিতে সীম চাষ করেছেন। এখন পর্যন্ত এতে তার খরচ হয়েছে ২৫/৩০ হাজার টাকা। ফলন ভালো হলে বিক্রি করতে পারবেন প্রায় ১ লাখ টাকা। কিন্তু বর্তমানে সীমের মধ্যে ব্যাপকভাবে ছত্রাকজনিত রোগ দেখা দিয়েছে। প্রতিদিন অনেক সীম নষ্ট হয়ে ঝরে যাচ্ছে। এতে করে আমরা ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছি। তিনি বলেন, এখন পর্যন্ত আমরা কোনো সহযোগিতা কিংবা পরামর্শ পাইনি।
উত্তর বাখর নগর গ্রামের শিম চাষি স্বপন বলেন, পচা রোগের কারণে সিম অনেক নষ্ট হচ্ছে। লোকসানে জর্জরিত। একই গ্রামের চাষী মো সহিদুল ইসলাম বলেন, কীটনাশক দিয়েও সুফল পাচ্ছি না, এখন চিন্তিত কি করে যে খরচ হয়েছে তা পুষিয়ে নেব ছত্রাকের কারণে সিম জরে যাচ্ছে কোন প্রতিকার পাচ্ছিনা। একেতো দাম কম কীটনাশক এর দাম বেশি হওয়ায় আমাদের খরচের পরিমাণ বেড়ে গেছে যার ফলে আমরা লোকসান গুনতে হতেপারে।
কৃষানী মারুফা বেগম বলেন, তিনি ৭০ শতক জমিতে সীম চাষ করেছেন। এতে তার খরচ হয়েছে প্রায় ৩৫/৪০ হাজার টাকা। তিনি বলেন পচনের হাত থেকে রক্ষা করতে পারলে বিক্রি করতে পারবেন প্রায় দেড় লক্ষাধিক টাকা। সীম গাছের ছত্রাক রোধের জন্য তিনি কৃষি কর্মকর্তাদের সহযোগিতা কামনা করছেন। উপজেলার আরেক সীম চাষী শহীদুল ইসলাম বলেন সীমের মধ্যে ছত্রাকের আক্রমনের কারনে আমরা মারাত্মক ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছি। সীমের এই ছত্রাক দৃর করার জন্য কোনো প্রতিকার পাচ্ছিনা। আগামীতে সীম চাষ করার প্রতি আগ্রহ হারিয়ে ফেলছি।
এ বিষয়ে রায়পুরা উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ বনি আমিন বলেন, বর্তমানে কুয়াশার কারনে ছত্রাকজনিত রোগ দেখা দিয়েছে। এ ক্ষেত্রে রেডিও মিল গোল্ড নামক ছত্রাকনাশক ব্যবহার করলে উপকার পাবে। তিনি আরো বলেন আমরা সার্বক্ষণিক কৃষকদের সহযোগিতা ও পরামর্শ দিচ্ছি। এ ক্ষেত্রে কোনো কর্মকর্তার গাফিলতি থাকলে তাদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্হা গ্রহণ করা হবে। আর কৃষকরা যাতে পুরাতন বীজ দিয়ে সীম চাষ না করে নতুন বীজ এবং উচ্চফলনশীল জাত ব্যবহার করে সে বিষয়ে পরামর্শ দিচ্ছি। আগামী বছর বিদেশের মার্কেট ধরার জন্য হাতির কান চাষ করার জন্য চাষীদের পরামর্শ দাম বেশ ভালো। ”(সম্পাদকের বার্তা: এই প্রতিবেদনটি করেছেন প্রতিবেদক হারুনুর রশিদ ।এই অঞ্চলের অন্যায়,অনিয়ম অথবা সামাজিক কাজের তথ্য দিতে এই নম্বরে যোগাযোগ করতে পারেন(০১৯১২৫২৭০৫১/০১৭১৭৭৩৭২৬৬)”