ঢাকা | ডিসেম্বর ২৭, ২০২৪ - ৩:০২ অপরাহ্ন

সংবাদ শিরোনামঃ

তালন্দ কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ ও সভাপতি মানছেন না আদালতের নির্দেশ

  • দৈনিক নবোদয় ডট কম
  • আপডেট: Monday, April 3, 2023 - 1:12 pm
  • News Editor
  • পঠিত হয়েছে: 42 বার

সোহানুল হক পারভেজ রাজশাহী : রাজশাহীর তানোর পৌর এলাকার ঐতিহ্যবাহী তালন্দ ললিত মোহন ডিগ্রী কলেজের ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি ও ভারপ্রাপ্ত অধ্যাক্ষ আদালতের নির্দেশনা মানছেন না বলে অভিযোগ উঠেছে।

নীতিমালা বহির্ভূত ভাবে ডাক্তার না হয়েও কমিটিতে ভূয়া ডাক্তারকে রাখায় মহামান্য হাইকোর্টে রীট দায়ের হলে বিজ্ঞ আদালত জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়কে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে নির্দেশনা দেন।

সেই মোতাবেক চলতি বছরের ফেব্রুয়ারি মাসে ভূয়া ডাক্তারকে বাতিল করে প্রকৃত রেজিস্টার্ড ডাক্তারকে অন্তর্ভুক্ত করতে নির্দেশ দেয়।

কিন্তু কলেজের ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি প্রদীপ কুমার মুজমদার ও ভারপ্রাপ্ত অধ্যাক্ষ ডক্টর জসিম উদ্দিন সে আদেশ অমান্য করে তাকে কমিটিতে রেখেছেন বলে নিশ্চিত করেন রীট আবেদন কারী সাবেক কাউন্সিলর পিয়ারুল হক।

এতে করে আদালতকে চরম অবমাননা করেছেন বলে মনে করছেন কলেজ কর্তৃপক্ষ। সেই সাথে চরম অদক্ষতারও পরিচয় দিয়েছেন সভাপতি অধ্যাক্ষ বলে মনে করেন শিক্ষাবিদরা। ফলে দ্রুত কলেজ কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে আদালত অবমাননার দায়ে সভাপতি ও অধ্যাক্ষের পদত্যাগও দাবি করেন সচেতন মহল।

জানা গেছে, পৌর এলাকার তালন্দ ললিত মোহন ডিগ্রী কলেজের গভর্নিং বডিতে একজন ডাক্তারকে নিযুক্ত করতে হয়।

কিন্ত কলেজ কর্তৃপক্ষ জালিয়াতি ও ক্ষমতার অপব্যবহার করে ডাক্তার না হয়েও সুমন কুমার পাল কে চিকিৎসক দেখিয়ে কমিটির সদস্য করা হয়।বিরুদ্ধে পৌরসভার ১ নম্বর ওয়ার্ডের সাবেক কাউন্সিলর পিয়ারুল হাইকোর্টে রীট করেন। এর প্রেক্ষিতে হাইকোর্ট জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাইস চ্যান্সেলরকে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়ার নির্দেশ দেন। যার রীট পিটিশন নম্বর ৮৪৩২/২০২২।

এনির্দেশের প্রেক্ষিতে ভাইস চ্যান্সেলরের আদেশক্রমে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের (ভারপ্রাপ্ত) কলেজ পরিদর্শক ফাহিমা সুলতানা স্বাক্ষরিত চলতি বছরের ফেব্রুয়ারি মাসের ২২ তারিখে ৫৭৭৫২ নম্বর স্বারকে ভূয়া ডাক্তার সুমন কুমার পালকে বাতিল করে প্রকৃত রেজিস্টার্ড ডাক্তারের নাম কমিটিতে অন্তর্ভুক্ত করতে নির্দেশ দেন। আদালত ও জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের নির্দেশনা মোতাবেক কাজ করেন নি সভাপতি ও অধ্যাক্ষ।

রীট আবেদন কারী পিয়ারুল জানান, যতটুকু জানি এখনো কমিটির পদে সুমন কুমার পালকে বহাল রেখেছেন। আদালতের নির্দেশ, ভাইস চ্যান্সেলরের আদেশকে যদি বৃদ্ধাঙ্গলী দেখায় তাহলে কি বলার আছে। জবাব দিহিতা আইনের সঠিক ব্যবহার না হলে এমনই হয়। কারন সবকিছু ক্ষমতার কালো পর্দায় বন্দি।

কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যাক্ষ ডক্টর জসিম উদ্দিন জানান, সভাপতি অসুস্থ এজন্য মিটিং করা হয়নি। তবে দ্রুত মিটিং করে সিদ্ধান্ত নেয়া হবে। আপনি মিটিং করতে পারেন নি সেটা কি আদালত বা জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় কে অবহিত করেছেন জানতে চাইলে তিনি জানান মৌখিক ভাবে সিদ্ধান্ত হয়ে আছে।

তাহলে কি আদালত বা জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় কে অবমাননা করা হয় কিনা প্রশ্ন করা হলে কোন সদ উত্তর না দিয়ে সভাপতি অসুস্থতার দোহায় দিয়ে এড়িয়ে যান।

কলেজ ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি প্রদীপ কুমার মজুমদার জানান, এতদিন সিদ্ধান্ত হয়ে যেত, মিটিং দেওয়া যায়নি আমি অসুস্থ এজন্যে। আর সুমন কুমার পালকে মৌখিক ভাবে বাদ দেয়া হয়েছে, শুধু সভায় সিদ্ধান্ত নিতে হবে।

সে ডাক্তার না হয়ে কমিটিতে কিভাবে এসেছে জানতে চাইলে তিনি জানান, আমি সভাপতি হওয়ার আগ থেকে আছে বলে তিনিও দায় সারেন।জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের কলেজ পরিদর্শক (ভারপ্রাপ্ত) ফাহিমা সুলতানার ০১৭১১৫৬৩৪০০ মোবাইল নম্বরে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান, এখনতো অফিস সময় না, কাগজপত্র না দেখে কিছুই বলা যাবে না।

গত ফেব্রুয়ারি মাসে আপনার স্বাক্ষরিত আদেশে সুমন কুমার পালকে বাদ দিয়ে প্রকৃত চিকিৎসক কে কমিটিতে অন্তর্ভূক্ত করার কথা বলা হয়েছে, কলেজ এতদিনও বাস্তবায়ন করেনি, এত সময় ফেলে রাখতে পারে কিনা জানতে চাইলে তিনি জানান, এখন এবিষয়ে কোন কিছুই বলা ঠিক হবে না।

তবে আদেশ পাওয়ার পর দ্রুত বাস্তবায়ন করা কলেজ কর্তৃপক্ষের নৈতিক দায়িত্ব। মঙ্গলবার অফিসে গিয়ে ফাইলপত্র দেখে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।