কিশোরগঞ্জে ধাইজান নদীতে সেতু চান দুই ইউনিয়নের ২০ গ্রামের মানুষ
লুৎফুর আজম, নীলফামারী প্রতিনিধি: নীলফামারী কিশোরগঞ্জ উপজেলার বাহাগিলী-চাঁদখানা দু’টি নিকটবর্তী ইউনিয়নকে বিভক্ত করেছে ধাইজান নদী।
ওই দু’টি ইউনিয়নে একটি ব্রিজের অভাবে এপাড়,ওপাড় ২০গ্রামের প্রায় ১৫হাজার মানুষ চরম দুর্ভোগ পোহাচ্ছেন। এতে সবচেয়ে বেশি, সমস্যার সম্মুখীন হচ্ছে স্কুলগামী কোমলমতি শিশু-কিশোর, বৃদ্ধ ও চিকিৎসার ক্ষেত্রে মুমূর্ষু রোগী, গর্ভবতী মা। পাশাপাশি অগ্নি দুর্ঘটনায় ফায়ার সার্ভিসের গাড়ী, চিকিৎসাবাহী এম্বুলেন্স যথাসময়ে ঘটনাস্থলে পৌছাতে পারেনা । বাঁশের সাঁকোর উপর দিয়ে পারাপার হতে গিয়ে মাঝে মধ্যে দুর্ঘটনার কবলে পড়তে হচ্ছে পথচারীদের। দুর্ভোগ লাঘবে আর প্রতিশ্রুতি নয়, এবার একটি স্থায়ী সেতু নির্মাণ চান এলাকাবাসী।
উপজেলার বাহাগিলী ইউনিয়নের কাচারী পাড়া, তাতিপাড়া, সন্ন্যাসী পাড়া, গুচ্ছগ্রাম, চেয়ারম্যান পাড়া, মাছুয়াপাড়া অপরদিকে চাঁদখানা ইউনিয়নের সঞ্জাবাড়ি নগরবন, ধাইজান নদীরঘাটে সেতু না থাকায় সংকটে পড়েছেন দু’টি ইউনিয়নের স্থানীয় ১৫ হাজার লোকজন।
বিগত ৫০বছর ধরে সেখানকার বাসিন্দাদের নিজস্ব উদ্যোগে তৈরি বাঁশের সাঁকোটি যাতায়াতের একমাত্র ভরসা। স্থানীয় লোকজন প্রতি বছর এলাকার লোকদের কাছ থেকে চাঁদা তুলে নিজস্ব উদ্যোগে যে সাঁকোটি নির্মাণ করেন, তা ভরা বর্ষা মৌসুমে তলিয়ে যাওয়াসহ ভেসে যায়। একারণে সাঁকোটির পূর্বপাড়ের স্কুল-কলেজ গামী শিক্ষার্থী ও জনসাধারণকে কিশোরগঞ্জ যেতে যানবাহন সংকটসহ ধুলি, কাদা হাটুসমান বালু , ভাঙ্গাচোরা রাস্তায় ৮ কিলোমিটার অতিরিক্ত পথ ঘুরে স্ব স্ব কর্মস্থলে যেতে হয়। বিশেষ করে শিক্ষার্থীরা সময়মতো শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে যেতে হিমসিম খাচ্ছে। আর বর্ষাকালে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান যেতে শিক্ষার্থীরা একেবারেই অনীহা। অথচ সাঁকো পেরিয়ে ২শত গজ সামনে গেলে চাঁদখানা সরঞ্জাবাড়ী নগরবন পাকা সড়ক। এ সড়ক দিয়ে উপজেলা সদর ৩ কিলোমিটার পথ।
সরেজমিনে সোমবার সকালে গিয়ে দেখা যায়, নদীর উপর বাঁশের সাঁকোটি নড়বড়ে। এলাকাবাসী সাঁকোর উপর দিয়ে বাইসাইকেল,প্রায়োজনীয় মালামাল কাঁধে নিয়ে নড়বড়ে বাঁশের সাঁকোর উপর দিয়ে অতিসর্তকাতার সঙ্গে ঝুঁকি নিয়ে পাড় হচ্ছেন।
বাহাগিলী মাছুয়া পাড়া গ্রামের আব্দুস সামাদ,আমিনুর বলেন, সাঁকোর উপর দিয়ে চাঁদখানা সরঞ্জাবাড়ি দিয়ে গেলে কিশোরগঞ্জ উপজেলা শহরের দূরত্ব ৩ কিলোমিটার। ওই নদীর উপর সেতু না থাকায় যানবহন চলাচল করতে পারেনা। ফলে ব্যবসা-বাণিজ্য হাট-বাজার ও কৃষিকাজের জন্য দু’পাড়ের মানুষকে প্রায় সময় ধরে নদী পার হতে হয় ঝুঁকি নিয়ে। কৃষিপণ্য নিয়ে বাঁশের সাঁকো দিয়ে চলাচল করা যায় না। এ কারণে ৩ কিলোমিটার পথ ৮কিলোমিটার ঘুরে কৃষিপণ্য নিয়ে কিশোরগঞ্জ হাটে যেতে হয়। এতে পণ্য পরিবহনের খরচ বেড়ে যায়।
চাঁদখানা ইউপির মিজানুর রহমান দুলাল বলেন, এই ঘাটে সেতু না থাকার কারণে আমাদের এ এলাকার ২০টি গ্রামের মানুষকে প্রতি বছর দুর্ভোগ পোহাতে হয়। অনেক জনপ্রতিনিধি ভোটের আগে প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন আমাদের যাতায়াতের পথে সেতু নির্মান করে দেওয়ার। কিন্তু নিবার্চনের পর কেউ আর খোঁজ খবর নেয়নি।
বাহাগিলী ইউপি চেয়ারম্যান আতাউর রহমান শাহ্ দুলু বলেন, ঘাটে সেতু নির্মাণের বিষয়টি সাবেক, বর্তমান সংসদ সদস্য কে অবহিত করা হয়েছে। কিন্তু কোন কাজ হয়নি।
কিশোরগঞ্জ উপজেলা প্রকৌশলী অফিসার মজিদুল ইসলাম বলেন, সেতু র্নিমাণের বরাদ্দের জন্য প্রয়োজনীয় কাগজপত্র ঢাকায় পাঠানো হয়েছে। বরাদ্দ পেলে ওই ঘাটে সেতু নির্মাণ করা হবে।