৪৯ লক্ষ টাকার ইয়াবা, তিন রোহিঙ্গাসহ ৭ জন গ্রেফতার
নিজস্ব প্রতিবেদক: চট্টগ্রাম জেলার লোহাগাড়া থানাধীন মিডওয়ে ইন রেস্টুরেন্ট এর সামনে ও কক্সবাজার জেলার উখিয়া থানাধীন কুতুপালং বাজার এলাকায় পৃথক দুটি অভিযান চালিয়ে আনুমানিক ৭৯ লক্ষ টাকা মূল্যের ১৫ হাজার ৭৬৩ পিস ইয়াবাসহ ৩ জন বাস্তুচ্যুত মায়ানমার নাগরিক (রোহিঙ্গা) সহ ৭ জন মাদক ব্যবসায়ীকে আটক করেছে র্যাব-৭। এসময় মাদক পরিবহনে ব্যবহৃত একটি বাস জব্দ করা হয়।
গত সোমবার ১৪ ডিসেম্বর রাত ১১টা ১৫ মিনিটের সময় চট্টগ্রাম জেলার লোহাগাড়া থানাধীন মিডওয়ে ইন রেস্টুরেন্ট এর সামনে ও কক্সবাজার জেলার উখিয়া থানাধীন কুতুপালং বাজার এলাকায় অভিযান চালিয়ে বিপুল পরিমান ইয়াবাসহ ৭ জনকে আটক করা হয়েছে বলে জানান র্যাব-৭ এর সহকারী পরিচালক মিডিয়া মোঃ নুরুল আবছার।
আটককৃত আসামিরা হলেন কক্সবাজার জেলার রামু থানাধীন গর্জনীয়া ৯ নং ওয়ার্ডের গর্জনীয়া ইউপির মৃত মনিন্দ্র দেবনাথের ছেলে লিটন দেবনাথ (৪০)।বর্তমানে কুতুপালং, ছমিউদ্দিন উকিলের ভাড়াঘর, থানা- উখিয়া, জেলা- কক্সবাজার।চট্টগ্রাম মহানগরীর ইপিজেড থানাধীন বন্দরটিলা (জেলেপাড়া) এলাকার মৃত সাধন দেবনাথের ছেলে রাজীব দেবনাথ (২৫), কক্সবাজার জেলার উখিয়া থানাধীন ট্যাংকখালী এলাকার মোঃ জহির আহমেদের ছেলে মোঃ ইলিয়াস (২৪), কক্সবাজার জেলার উখিয়া থানাধীন ট্যাংকখালী এলাকার মোঃ হাছু মিয়ার ছেলে মোঃ নূর আলম (২০) এবং কক্সবাজার জেলার উখিয়া থানাধীন ট্যাংকখালী এলাকার রশিদ আহম্মদের ছেলে আবু তাহের (৩৮)। অপর আসামীরা হলেন, কুড়িগ্রাম জেলার রৌমারী থানাধীন বাতের গ্রাম (মোসলেম মেম্বার এর বাড়ির পাশে) এলাকার মৃত সাহেব আলীর ছেলে ড্রাইভার মোঃ একরামুল হক (৪০)। বর্তমানে- নবীনগর বাস কাউন্টার সংলগ্ন সেন্টমার্টিন রেস্ট হাউজ, থানা- সাভার, জেলা- ঢাকা এবং কুড়িগ্রাম জেলার রৌমারী থানাধীন চেংটাপাড়া (ময়নাল মেম্বার এর বাড়ীর পাশে) এলাকার মোঃ মিরাজুলের ছেলে হেলপার ঢাকা জেলার মোঃ বকুল মিয়া (২৩)। বর্তমানে- মিনি কলোনী (মিনু মিয়ার বাড়ীর ভাড়াটিয়া), থানা-আশুলিয়া , জেলা- ঢাকা।
র্যাব-৭ এর সহকারী পরিচালক পতেংগা বিশেষ ক্যাম্প কমান্ডার এএসপি সোহেল মাহমুদ জানান, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে কক্সবাজার জেলার উখিয়া থানাধীন কুতুপালং বাজার সংলগ্ন ছমিউদ্দিন উকিলের মালিকানাধীন লিটন দেবনাথের বাসায় র্যাব-৭ অভিযান পরিচালনা করলে র্যাবের উপস্থিতি টের পেয়ে পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করলে র্যাব সদস্যরা ধাওয়া করে ৫ জনকে আটক করে।পরে আটককৃত আসামিদের ব্যাপক জিজ্ঞাসাবাদে দেহ তল্লাশী করে তাদের হাতে থাকা প্লাস্টিকের ব্যাগ হতে ১৩ হাজার ৮০০ পিস ইয়াবাসহ আসামিদের গ্রেফতার করা হয়।
তিনি জানান, গ্রেফতারকৃত আসামিদের জিজ্ঞাসাবাদে আরো জানা যায়, তারা দীর্ঘ দিন যাবত কক্সবাজার জেলার সীমান্তবর্তী এলাকা হতে মাদকদ্রব্য সংগ্রহ করে পরবর্তীতে বিভিন্ন কৌশলে চট্টগ্রামসহ দেশের বিভিন্ন অঞ্চলের মাদক ব্যবসায়ী ও মাদক সেবনকারীদের নিকট বিক্রয় করে আসছে। উদ্ধারকৃত মাদকদ্রব্যের আনুমানিক মূল্য ৬৯ লক্ষ টাকা।
র্যাব-৭, এর সহকারী পরিচালক সিনিয়র এএসপি মাশকুর রহমান জানান, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে চট্টগ্রাম জেলার লোহাগাড়া থানাধীন চট্টগ্রাম কক্সবাজার মহাসড়ক সংলগ্ন মিডওয়ে ইন রেস্তোরার সামনে একটি বিশেষ চেকপোস্টের মাধ্যমে গাড়ি তল্লাশি চালানো হয় । এসময় র্যাবের চেকপোস্টের দিকে আসা সন্দেহজনক গতিবিধির SAINTMARTIN PLUS এর একটি বাসকে থামানোর সংকেত দিলে বাসটি র্যাবের চেকপোস্টের সামনে থামিয়ে গাড়ীর চালক ও হেলপার সুকৌশলে পালানোর চেষ্টা করলে র্যাব সদস্যরা ধাওয়া করে দুই জনকে আটক করে। পরে আটককৃত আসামিদের ব্যাপক জিজ্ঞাসাবাদে তাদের দেখানো ও সনাক্তমতে নিজ হেফাজতে থাকা গাড়ীর ড্রাইভিং সিটের ডানপাশে রাখা হাতব্যাগ এর ভিতরে বিশেষ কায়দায় রক্ষিত ১,৯৬৩ পিস ইয়াবা ট্যাবলেট উদ্ধার করা হয় এবং উক্ত বাসটি (ঢাকা-মেট্রো-ব-১৩-১৫০৮) জব্দ করা হয়।
তিনি জানান, গ্রেফতারকৃত আসামিদের জিজ্ঞাসাবাদে আরো জানা যায়, তারা দীর্ঘ দিন যাবত কক্সবাজার জেলার সীমান্তবর্তী এলাকা হতে মাদকদ্রব্য সংগ্রহ করে পরবর্তীতে অভিনব কৌশলে ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন অঞ্চলের মাদক ব্যবসায়ীদের নিকট বিক্রয় করে আসছে। উদ্ধারকৃত মাদকদ্রব্যের আনুমানিক মূল্য ১০ লক্ষ টাকা এবং জব্দকৃত বাসের আনুমানিক মূল্য ১ কোটি টাকা।
তিনি আরও জানান, গ্রেফতারকৃত আসামিদের ব্যাপক জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায়, তারা দীর্ঘদিন যাবত বিভিন্ন সীমান্তবর্তী এলাকা হতে মাদকদ্রব্য সংগ্রহ করে পরবর্তীতে উক্ত মাদকদ্রব্য বিভিন্ন অভিনব কৌশলে চট্টগ্রাম জেলাসহ দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে বিক্রয় করে আসছে।
গ্রেফতারকৃত আসামিদের চট্টগ্রাম জেলার লোহাগাড়া থানা ও কক্সবাজার জেলার উখিয়া থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে।