বাইডেন-কমলা ও ন্যান্সি পেলোসিকে হুমকি
মোঃ নাসির, নিউ জার্সি (আমেরিকা) প্রতিনিধিঃ ক্যাপিটল হিলে ট্রাম্প সমর্থকের নজিরবিহীন তাণ্ডবের পর সারা দেশে বিরাজ করছে সতর্কাবস্থা। আগামী ২০ জানুয়ারি নবনির্বাচিত প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন ও ভাইস প্রেসিডেন্ট কমলা হ্যারিস শপথ নেবেন। যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট হিসেবে জো বাইডেন যাতে শপথ নিতে না পারেন সে লক্ষ্যে অভিষেক অনুষ্ঠানের আগেভাগেই সশস্ত্র বিক্ষোভের পরিকল্পনা নিয়েছে বর্তমান প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের উগ্রসমর্থকরা। বিক্ষোভের সময় রাজধানী ওয়াশিংটন ডিসিসহ ৫০টি স্টেটের ক্যাপিটল ভবনে হামলার পরিকল্পনাও রয়েছে ওই উগ্রপন্থীদের। এ বিষয়ে গত ১১ জানুয়ারি সোমবার গোয়েন্দা সংস্থা ফেডারেল ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (এফবিআই) এক বুলেটিন প্রকাশ করেছে।
এফবিআই’র বুলেটিনে বলা হয়েছে, ট্রাম্পের সশস্ত্র উগ্রবাদীরা নবনির্বাচিত প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন, ভাইস প্রেসিডেন্ট কমলা হ্যারিস ও হাউস স্পিকার ন্যান্সি পেলোসিকেও হুমকি দিয়েছে। অর্থাৎ উগ্রপন্থীদের টার্গেটে রয়েছেন জো বাইডেন, কমলা হ্যারিস এবং ন্যান্সি পেলোসি। আগামী ১৬ থেকে ২০ জানুয়ারির মধ্যে তাদের এই সশস্ত্র বিক্ষোভ ও হামলার পরিকল্পনা রয়েছে। এই গোষ্ঠীটি সরকারি বিভিন্ন ভবনেও হামলার আহ্বান জানিয়েছে। এ ব্যাপারে প্রচারপত্রও বিলি করা হচ্ছে। বাইডেনের শপথ গ্রহণ অনুষ্ঠানের আগে ট্রাম্পকে অপসারণ করা হলে তারা অভ্যুত্থান ঘটানোর হুমকিও দিয়েছে। তারা ১৭ থেকে ২০ জানুয়ারি ওয়াশিংটন ডিসিতে বিক্ষোভ করবে বলে জানিয়েছে।
গত ৬ জানুয়ারি ক্যাপিটল হিলে ট্রাম্প উগ্রসমর্থকদের হামলার প্রেক্ষাপটে বর্তমানে যুক্তরাষ্ট্রে ব্যাপক উত্তেজনা বিরাজ করছে। এরই মধ্যে এফবিআই’র এই সতর্ক বার্তায় মার্কিন রাজনীকিসহ সুশীল সমাজের নাগরিকদের মধ্যে ভীতির সঞ্চার করেছে। তাদের মধ্যে ৬ জানুয়ারির ব্যর্থ অভ্যুত্থানের মতো আবারো ‘অভ্যুত্থান’ ঘটতে পারে এমন আতঙ্ক বিরাজ করছে। গত ৬ জানুয়ারি প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প তার সমর্থকদের দিয়ে ব্যর্থ অভ্যুত্থানের চেষ্টার পর ট্রাম্প প্রশাসনের বেশ কয়েকজন শীর্ষ মন্ত্রী পদত্যাগ করেছেন। যার মধ্যে হোমল্যান্ড সিকিউরিটির ভারপ্রাপ্ত সেক্রেটারিও রয়েছেন। যে সব সন্ত্রাসী ভাইস প্রেসিডেন্ট মাইক প্যান্স এবং স্পিকার ন্যান্সি পলোসির চেয়ারে বসেছিলেন এবং যারা ক্যাপিটল হিলে ভাঙচুর ও বিভিন্ন জনকে হুমকি দিয়েছেন তাদেরসহ প্রায় শতাধিক ব্যক্তিকে গ্রেফতার করেছে নিরাপত্তা কর্মীরা। এখনো গ্রেফতার অভিযান চলছে। হামলাকারিদের বিভিন্ন কর্মকাণ্ডের তথ্য সংগ্রহ করছে আইন শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। ঘটনার সাথে জড়িত সন্দেহে ক্যাপিটল হিলের ২ পুলিশ সদস্যকে বরখাস্ত করা হয়েছে। প্রায় ২০ জন পুলিশ অফিসারকে নজরদারিতে রাখা হয়েছে। ক্যাপিটল হিলে হামলার সময় ভাইস পেসিডেন্ট, স্পিকারও কংগ্রেসম্যান এবং সিনেটরদের লুকানো পথে নিরাপদে নিয়ে যাওয়া হয়। যারা দ্বিতীয় তলা ছিলেন তাদের মধ্যে অনেকেই টেবিলের নিচে এবং বাথরুমে লুকিয়ে ছিলেন। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আসার পর আবারো হাউসের বৈঠক বসে এবং নির্বাচিত প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনকে চূড়ান্ত মনোনয়ন দেয়া হয়।
ক্যাপিটল ভবনে যখন তাণ্ডব চলছিল তখন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প ছিলেন পার্টিতে মশগুল। গোটা ঘটনাই ছিল ট্রাম্পের পূর্বপরিকল্পিত, হামলার পুরোটা সময় টিভি মনিটরে চোখ ছিল তার।
এদিকে এফবিআই দেশটির অভ্যন্তরীণ সতর্কতা জারি করে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী সব বাহিনীকে যেকোনো নাশকতা মোকাবিলায় সব ধরনের প্রস্তুতি নিতে বলেছে। যুক্তরাষ্ট্রের বড় বড় শহর, মহানগরে নেওয়া হচ্ছে কড়া নিরাপত্তা ব্যবস্থা। এই বিশেষ নিরাপত্তা ব্যবস্থা ১৬ থেকে ২০ জানুয়ারি পর্যন্ত বহাল থাকবে।। ৬ দিন আগ থেকেই প্রস্তুত থাকবে সবকিছু। শপথ অনুষ্ঠানকে শান্তিপূর্ণ ও নির্বিঘ্ন করতে ১৫ হাজার অতিরিক্ত ন্যাশনাল গার্ড মোতায়েন করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
এ ছাড়া নিরাপত্তার স্বার্থে যুক্তরাষ্ট্রের বিভিন্ন রাজ্য থেকে আরও ৩ হাজার নিরাপত্তা কর্মী নেওয়ার আহ্বান জানিয়েছে ডিসি কর্তৃপক্ষ। নিউইয়র্ক থেকে ২০০ পুলিশ কর্মকর্তা ওয়াশিংটন ডিসিতে নিরাপত্তার কাজে যোগ দেবেন।
একই সঙ্গে ওয়াশিংটনে ২৪ জানুয়ারি পর্যন্ত পর্যটকদের প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে।
মার্কিন ন্যাশনাল গার্ড ব্যুরোর প্রধান জেনারেল ড্যানিয়েল হোকানসন বলেন, রাজধানীর নিরাপত্তাসহ অন্যান্য বিষয়ে সহযোগিতার জন্য আগামী শনিবারের (১৬ জানুয়ারি) মধ্যে ওয়াশিংটনে প্রায় ১০ হাজার সেনা মোতায়েন করা হবে। স্থানীয় প্রশাসন অনুরোধ করলে এই সংখ্যা ১৫ হাজার পর্যন্ত উন্নীত করা হবে।
একদিকে করোনা, অন্যদিকে মার্কিন কংগ্রেস ভবনে ট্রাম্প সমর্থকদের হামলা। এরই মধ্যে নবনির্বাচিত প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের অভিষেক অনুষ্ঠান যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাসে আরেকটি ঐতিহাসিক দিন হতে চলছে।
করোনাভাইরাসের কারণে এবারের প্রেসিডেন্টের শপথ অনুষ্ঠান হবে খুব ছোট পরিসরে। নবনির্বাচিত প্রেসিডেন্ট বাইডেন তাঁর সমর্থকদের ডিসিতে ভ্রমণ না করে বাড়িতে বসে অভিষেক অনুষ্ঠান দেখার অনুরোধ জানিয়েছেন। এ ছাড়া পেনসিলভানিয়া অ্যাভিনিউয়ের ঐতিহ্যবাহী কুচকাওয়াজ, প্যারেডও করোনাভাইরাসের কারণে বাতিল করা হয়েছে।
বাইডেনের মন্তব্য : ‘আমেরিকা ইউনাইটেড’ স্লোগানে অনুষ্ঠেয় আসন্ন অভিষেক নিয়ে জো বাইডেন বলেছেন, ‘আমি বাইরে শপথ নিতে ভয় পাচ্ছি না। তবে যেসব লোক রাষ্ট্রদ্রোহের সঙ্গে যুক্ত হচ্ছেন, অন্যদের জীবন ঝুঁকিতে ফেলছেন, সরকারি স্থাপনা নষ্ট করছেন, বড় ধরনের ক্ষতির কারণ হয়ে উঠছেন, তাদের জবাবদিহির আওতায় আনা দরকার।’
ওয়াশিংটন ডিসিতে জরুরি অবস্থা জারি ট্রাম্পের : মার্কিন প্রেসিডেন্টের অভিষেক অনুষ্ঠানের আগে এমন কবে হয়েছে, কেউ জানে না। দিন যত যাচ্ছে, জো বাইডেনের শপথ অনুষ্ঠান নিয়ে আতঙ্ক উৎকণ্ঠা ততই বাড়ছে।
অভিষেক অনুষ্ঠানে কোনো ধরনের নাশকতা যেন না ঘটে, তার জন্য ওয়াশিংটন ডিসিতে জরুরি অবস্থা ঘোষণা করেছেন ট্রাম্প। গত সোমবার তিনি ডিপার্টমেন্ট অব হোমল্যান্ড সিকিউরিটি ও ফেডারেল ইমার্জেন্সি ম্যানেজমেন্ট এজেন্সিকে স্থানীয় কর্তৃপক্ষের সঙ্গে সমন্বয় করে কাজ করার নির্দেশ দিয়েছেন।
ওয়াশিংটনের মেয়রের আহ্বান : ওয়াশিংটনের মেয়র ২০ জানুয়ারি ঘিরে বাড়তি নিরাপত্তার কথা জানিয়ে ব্যবস্থা গ্রহণের আহ্বান জানিয়েছেন দেশটির ডিপার্টমেন্ট অব হোমল্যান্ড সিকিউরিটির কাছে (ডিএইচএস)। ভারপ্রাপ্ত ডিএইচএস সেক্রেটারি চ্যাড উলফ জানিয়েছেন, ওয়াশিংটনের মেয়র মুরিয়েল বাউজার গত সপ্তাহের অনাকাক্সিক্ষত ‘সন্ত্রাসী হামলার’ প্রেক্ষাপটে বিদ্যমান পরিস্থিতিকে অন্য যেকোনো সময়ের চেয়ে একেবারে আলাদা হিসেবে আখ্যা দিয়েছেন। এ অবস্থায় আগামী ২৪ জানুয়ারি পর্যন্ত ওয়াশিংটনে পর্যটকদের প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়েছে।
কিন্তু মুরিয়েল বাউজার এতেই নিশ্চিন্ত হতে পারছেন না। তিনি ন্যাশনাল স্পেশাল সিকিউরিটি ইভেন্টের পরিসর আগামী ২৪ জানুয়ারি পর্যন্ত বর্ধিত করার আহ্বান জানিয়েছেন। এই আহ্বানে সাড়া দিয়ে ২০ জানুয়ারি ঘিরে মার্কিন সিক্রেট সার্ভিসের বিশেষ নিরাপত্তা বলয় তৈরির কাজ ১৩ জানুয়ারি থেকে শুরু করার কথা জানিয়েছেন চ্যাড উলফ। সাধারণত ২০ জানুয়ারির অভিষেককে কেন্দ্র করে এই বিশেষ নিরাপত্তা বলয় তৈরি করা হয় ১৯ জানুয়ারি থেকে।
বিভিন্ন স্টেটে সতর্কাবস্থা : এদিকে কঠোর নিরাপত্তা বলয় শুধু রাজধানী ঘিরে নেওয়া হচ্ছে না। যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিটি স্টেটের রাজধানীতেই এমন নিরাপত্তার ব্যবস্থা করা হচ্ছে। প্রতিটি স্টেটের গভর্নরেরা সতর্ক অবস্থানে রয়েছেন।
মার্কিন সংবাদমাধ্যম নিউইয়র্ক টাইমসের প্রতিবেদনে বলা হয়, ব্যাটলগ্রাউন্ড হিসেবে পরিচিত সুইং স্টেট উইসকনসিনে ডোনাল্ড ট্রাম্প বোট জালিয়াতির অভিযোগ তুলেছিলেন। স্বাভাবিকভাবেই ভীষণ সতর্ক অবস্থায় রয়েছে অঙ্গরাজ্যটির কর্তৃপক্ষ। এই অঙ্গরাজ্যের গভর্নর টনি এভারস এরই মধ্যে অঙ্গরাজ্য ক্যাপিটলের পুলিশকে সহায়তার জন্য উইসকনসিন ন্যাশনাল গার্ডকে এখতিয়ার দিয়েছেন। একইভাবে মিশিগানের রাজধানী ল্যানসিংয়ে ক্যাপিটল ভবনের আশপাশে ও ভেতরে অস্ত্র নিয়ে প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে অঙ্গরাজ্যটির ক্যাপিটল কমিশন।
নিউইয়র্ক টাইমস জানায়, জর্জিয়া অঙ্গরাজ্যের পুলিশ এরই মধ্যে দাঙ্গা-সাজে সজ্জিত হয়েছে। বেশ সতর্ক অবস্থানে রয়েছে পুরো অঙ্গরাজ্য কর্তৃপক্ষ। অনুরূপ অবস্থানে রয়েছে অন্য অঙ্গরাজ্যগুলোও। বিশেষত ব্যাটলগ্রাউন্ড হিসেবে পরিচিত অঙ্গরাজ্যগুলো রয়েছে বিশেষ সতর্ক অবস্থানে। রাজধানী এলাকায় আরোপ করা হয়েছে কঠোর নিরাপত্তা ব্যবস্থা। হবে না-ই বা কেন? ডোনাল্ড ট্রাম্পের উগ্র সমর্থকগোষ্ঠী ও কট্টর রক্ষণশীল গোষ্ঠীগুলো বেশ তৎপর হয়ে উঠেছে। তারা অনেকটা খোলাখুলিই এখন যুদ্ধের কথা বলছে।
নিউইয়র্ক নগরেও অ্যান্টিফা আন্দোলনের বেশ কিছু সশস্ত্র সদস্য গত রোববার হেলমেট ও প্রতিরক্ষা সামগ্রী পরিধান করে রণসাজে সজ্জিত হয়ে বিক্ষোভ করেছে। তারা নগরের সেন্ট্রাল পার্ক থেকে মেডিসন স্কোয়ার পার্ক পর্যন্ত মার্চ করে। এ সময় তারা বিদ্বেষপূর্ণ নানা স্লোগান দেয়।
ওয়াশিংটন অঙ্গরাজ্যের অলিম্পিয়ায় ন্যাশনাল গার্ড সদস্যরা যেমন রণসাজে, ঠিক তেমন সাজ দেখা গেল বিক্ষোভকারীদের অনেকের শরীরে। ‘নিজের শপথকে সম্মান কর’, ‘মুক্তির জন্য প্রতি দিন লড়’ ইত্যাদি স্লোগান দেয় তারা।
আইডাহো অঙ্গরাজ্যের অ্যামন বান্ডির কথাই ধরা যাক। বিভিন্ন সময় সরকারবিরোধী আন্দোলন করে পরিচিতি পাওয়া এই ব্যক্তিকে দেখা গেল আইডাহোর গভর্নর কার্যালয়ের বাইরে ‘ওয়ান্টেড’ লেখা পোস্টারসহ নিজের সংগঠনের কর্মীদের নিয়ে অবস্থান নিতে। ওই পোস্টারে সাঁটা রয়েছে আইডাহোর গভর্নরের ছবি। নিজের অবস্থানের বিষয়ে অ্যামন বান্ডি নিউইয়র্ক টাইমসকে বলেন, ‘এমন অনিশ্চয়তার সময়ে আমরা চাই আমাদের প্রতিবেশীরা আমাদের পাশে দাঁড়াক এবং এই দেশের ভেতরে চলমান যুদ্ধে আমাদের সঙ্গে একসঙ্গে লড়াই করুক।’
এ ধরনের নানা সরকারবিরোধী গোষ্ঠীর কাছ থেকে আসা হুমকি ও গত ৬ জানুয়ারি ক্যাপিটল হিলে হওয়া হামলার প্রেক্ষাপটে সবগুলো অঙ্গরাজ্যই সতর্ক অবস্থানে রয়েছে। এসব সংগঠনের পক্ষ থেকে আগামী ১৭ জানুয়ারি ৫০টি অঙ্গরাজ্যেই বিক্ষোভের ডাক দেওয়া হয়েছে আগেই। এর মধ্যে এফবিআইয়ের দেওয়া এই হুঁশিয়ারি সবাইকে আরও সচকিত করেছে।
ক্যালিফোর্নিয়ার গভর্নর গেভিন নিউসাম গত সোমবার এক বিবৃতিতে বলেছেন, সামনের দিনগুলোতে স্যাক্রামেন্টোয় বিক্ষোভের আশঙ্কায় সবাই ব্যাপক সতর্ক অবস্থানে রয়েছে। প্রয়োজন হলে ন্যাশনাল গার্ড মোতায়েন করা হবে। ক্যালিফোর্নিয়ার ক্যাপিটলের সুরক্ষায় নিয়োজিত থাকবে ক্যালিফোর্নিয়া হাইওয়ে পেট্রল। তিনি বলেন, ‘আমি আপনাদের আশ্বস্ত করতে চাই যে, আমরা উচ্চ পর্যায়ের নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিয়েছি।’
সবচেয়ে মজার কথা বলেছেন টেক্সাসের আইনপ্রণেতা ব্রিসকো কেইন। নিউইয়র্ক টাইমসকে তিনি বলেন, ‘অস্টিনে আমাদের আইনসভা নিরাপদ। কারণ, এখানকার অধিকাংশ আইনপ্রণেতা নিজেদের সঙ্গে অস্ত্র রাখেন। আমার সঙ্গেও আছে। আমি চাই না এটা কখনো ব্যবহারের প্রয়োজন পড়ুক।’
ট্রাম্প পদত্যাগ করবেন না, পেন্সের কাছে ক্ষমতা হস্তান্তরও করবেন না, এমনকি ক্ষমাও চাইবেন না : প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প পদত্যাগ করবেন না। এমনকি তিনি ভাইস প্রেসিডেন্ট মাইক পেন্সের কাছে ক্ষমতা হস্তান্তরও করবেন না। এ ছাড়া তিনি ক্ষমাও চাইবেন না।
হোয়াইট হাউসের শীর্ষ উপদেষ্টারা এমন কথা জানিয়েছেন। তারা অর্থমন্ত্রী এমনুচিন, পেন্স ও চিফ অব স্টাফ মার্ক মেডোসসহ ট্রাম্পের মন্ত্রী পরিষদের শীর্ষ পর্যায়ের সদস্যদের সঙ্গে কথা বলে এই মন্তব্য করেন।
প্রেসিডেন্ট ক্ষমতা ছাড়ার আগে সিনিয়র উপদেষ্টাদের নিজেকে ক্ষমা করার ক্ষমতা সম্পর্কে জিজ্ঞাসা অব্যাহত রেখেছেন।
ট্রাম্পের বিরুদ্ধে কংগ্রেসে অভিশংসন প্রস্তাব উত্থাপন : মার্কিন প্রতিনিধি পরিষদে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের বিরুদ্ধে অভিশংসন প্রস্তাব উত্থাপন করা হয়েছে। গত সোমবার পূর্ব ঘোষণা অনুযায়ী এ প্রস্তাব উত্থাপন করা হয়। এতে তাঁর বিরুদ্ধে ‘বিশৃঙ্খলায় উসকানির’ অভিযোগ আনা হয়েছে।
কংগ্রেসে ট্রাম্পের বিরুদ্ধে আনা অভিশংসন প্রস্তাবের ওপর ১৩ জানুয়ারি ভোট হওয়ার কথা। এর মধ্য দিয়ে ট্রাম্প হতে যাচ্ছেন যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাসের প্রথম প্রেসিডেন্ট, যিনি দুবার অভিশংসন প্রক্রিয়ার মধ্য দিয়ে যাবেন।
অভিশংসন প্রস্তাবে নির্বাচনে জয়ের ট্রাম্পের ভুয়া দাবি ও ৬ জানুয়ারি সহিংসতার আগে সমর্থকদের উদ্দেশ্যে তাঁর দেওয়া বক্তব্যের কথা উল্লেখ করা হয়। এতে জর্জিয়ার রিপাবলিকান সেক্রেটারি অব স্টেটকে ফোন করার কথাও উল্লেখ করা হয়, যাতে ট্রাম্প রাজ্যে তাঁর জয়ের জন্য প্রয়োজনীয় ভোট ‘খুঁজে বের করতে’ তাঁর প্রতি আহ্বান জানিয়েছিলেন।
অভিশংসন প্রস্তাবে বলা হয়, এসব কিছুর মাধ্যমে ট্রাম্প যুক্তরাষ্ট্রের নিরাপত্তা ও সরকারি প্রতিষ্ঠানগুলোকে বিপন্ন অবস্থার মধ্যে ফেলেছেন। তিনি গণতান্ত্রিক ব্যবস্থার অখণ্ডতাকে হুমকি দিয়েছেন, শান্তিপূর্ণ ক্ষমতার হস্তান্তরে হস্তক্ষেপ করেছেন। অধিকন্তু তিনি প্রেসিডেন্ট হিসেবে বিশ্বাসঘাতকতা করেছেন।
ন্যান্সি পেলোসি ও সিনেটে সংখ্যালঘু দলের নেতা চাক শুমার আগেই বলেছেন, ২৫তম সংশোধনীর প্রয়োগে মাইক পেন্স যদি রাজি না হন, তবে ট্রাম্পের বিরুদ্ধে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টিতে উসকানির অভিযোগে অভিশংসন প্রস্তাব তোলা হবে প্রতিনিধি পরিষদে। স্পিকার পেলোসিসহ ডেমোক্র্যাটিক ও রিপাবলিকান দলের আইনপ্রণেতাদের অনেকেই খোলাখুলি বলেছেন, আগামী ২০ জানুয়ারি বাইডেনের কাছে ক্ষমতা হস্তান্তরের আগ পর্যন্ত ট্রাম্পের হাতে ক্ষমতা রাখাটা আর নিরাপদ নয়।
এদিকে প্রতিনিধি পরিষদে ট্রাম্প এবারও অভিশংসিত হলে সিনেটে বিষয়টি ১৯ জানুয়ারির আগে উঠবে না। সে ক্ষেত্রে সিনেটে অভিশংসন শুনানি বাইডেনের ক্ষমতা গ্রহণের পর প্রথম সপ্তাহে অনুষ্ঠিত হবে। এটি নতুন প্রশাসনের জন্য এক সমস্যা তৈরি করবে বলে মনে করা হচ্ছে।
হঠাৎ পদত্যাগ ট্রাম্পের হোমল্যান্ড সিকিউরিটি প্রধানের : ক্যাপিটল হিলে হামলার পর ট্রাম্প সমর্থকরা আরও হামলা চালাতে পারে, গোয়েন্দাদের এমন আশঙ্কার মধ্যেই পদত্যাগ করেছেন প্রেসিডেন্ট ডনাল্ড ট্রাম্পের হোমল্যান্ড সিকিউরিটি বিভাগের ভারপ্রাপ্ত প্রধান চ্যাড ওলফ।
নিজের পদে থাকার কথা জানানোর এক সপ্তাহেরও কম সময় পরে এবং নতুন প্রেসিডেন্ট হিসেবে বাইডেনের শপথ গ্রহণের ১০ দিন আগে পদ থেকে সরে দাঁড়ানোর ঘোষণা দিলেন তিনি। সোমবার আচমকা পদত্যাগের কথা ঘোষণার কারণ হিসেবে ওলফ তার দায়িত্ব পালনের আইনি বৈধতার কথা উল্লেখ করেন।
ওলফ ২০১৯ সালের নভেম্বর থেকে দায়িত্ব পালন করছেন। তবে তার দায়িত্ব পালনে সিনেটের অনুমোদন নেয়া হয়নি। কিন্তু সাম্প্রতিক সময়ে নানা ব্যাপারে আদালতের রায় কার্যকর হওয়ায় তিনি আগে ভাগে পদ ছাড়ছেন বলে মনে হচ্ছে।
দাঙ্গার পর প্রথম কথা বললেন ট্রাম্প-পেন্স : মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের উসকানিতে তাঁর উগ্র সমর্থকদের ক্যাপিটল হিল হামলার পর থেকে কথা বন্ধ ছিল প্রেসিডেন্ট ও ভাইস প্রেসিডেন্টের মধ্যে। অবশেষে এই নীরবতা ভেঙেছে। গত ৬ জানুয়ারি হওয়া ওই হামলার পর গত সোমবার প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প ও ভাইস প্রেসিডেন্ট মাইক পেন্সের মধ্যে প্রথম কথা হয়েছে।
৬ জানুয়ারির ওই ঘটনার পর ক্ষমতা থেকে ট্রাম্পের অপসারণের লক্ষ্যে সংবিধানের ২৫তম সংশোধনীর প্রয়োগ ঘটানোর দাবি জোরালো হলেও পেন্স তাতে সাড়া দেননি। অবশ্য তিনি এটি খারিজও করেননি। এই বিকল্পটি তিনি হাতে রেখে দিতে চেয়েছেন, যেন ২০ জানুয়ারির আগে আরও বাজে কোনো পরিস্থিতির সৃষ্টি হলে এটি কাজে লাগানো যায়।
মার্কিন পার্লামেন্ট ভবনে তাণ্ডব, অ্যান্টি-ফ্যাসিস্টদের দুষছেন ট্রাম্প : গত ৬ জানুয়ারি যুক্তরাষ্ট্রের পার্লামেন্ট ভবনে তাণ্ডবের ঘটনায় অ্যান্টিফা জনগণকে গোপনে দুষছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। যদিও ভিডিও ও ছবিতে দেখা যাচ্ছে, সেখানে সহিংসতা সৃষ্টিকারীরা ট্রাম্পের সমর্থক।
কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল-জাজিরা এক প্রতিবেদনে বলছে, অ্যান্টি-ফ্যাসিস্টকে বলা হয় অ্যান্টিফা। জর্জ ফ্লয়েড হত্যাকাণ্ডের জেরে বিক্ষোভের ঘটনায় অ্যান্টিফাকে সন্ত্রাসী সংগঠন হিসেবে চিহ্নিত করার হুমকি দিয়েছিলেন ট্রাম্প।
গত সোমবার সকালে হোয়াইট হাউসের সংখ্যালঘু নেতা কেভিন ম্যাককার্থির সঙ্গে ৩০ মিনিটের বেশি সময় ধরে কথা বলেন ট্রাম্প। এ সময় তিনি বলেন, মার্কিন পার্লামেন্টে তাণ্ডবকারীরা অ্যান্টিফা। তবে কেভিন ম্যাককার্থি ট্রাম্পকে সাফ জানিয়ে দিয়েছেন, তারা অ্যান্টিফা নয়। তারা মাগা বা ট্রাম্পের সমর্থক। আমি জানি। আমি সেখানে ছিলাম।
ডোনাল্ড ট্রাম্পকে উপদেশ দিয়ে ম্যাককার্থি বলেছেন, জো বাইডেনকে ফোন করুন এবং তার সঙ্গে দেখা করুন। সফল (ভোটে) হওয়ার জন্য তাকে বার্তা পাঠান।
বাইডেনের অভিষেক হবে কখন : যুক্তরাষ্ট্রের আইন অনুসারে অভিষেক অনুষ্ঠিত হবে ২০ জানুয়ারি। উদ্বোধনী বক্তব্য দেয়ার কথা স্থানীয় সময় সাড়ে এগারোটায়। আর জো বাইডেন ও কমালা হ্যারিসের শপথ নিতে নিতে দুপুর গড়াবে। দিনের আরও পরের দিকে জো বাইডেন হোয়াইট হাউসে যাবেন। আগামী চার বছরের জন্য সেটাই হবে তার অফিস ও বাসভবন।
ডোনাল্ড ট্রাম্প কি সেখানে থাকবেন : গত ১৫০ বছরের ইতিহাসে এই প্রথমবারের মতো বিদায়ী প্রেসিডেন্ট শপথ অনুষ্ঠানে অনুপস্থিত থাকবেন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প। ‘যারা জিজ্ঞেস করেছেন তাদের জন্য বলছি ২০ জানুয়ারির অভিষেক অনুষ্ঠানে আমি যাচ্ছি না’- প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প গত শুক্রবার এই টুইট করেছেন।
এর আগে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প জানিয়েছেন যে নির্বাচনের ফলাফল মেনে না নিলেও তিনি জো বাইডেনের হাতে শান্তিপূর্ণ ক্ষমতা হস্তান্তরের বিষয়টি নিশ্চিত করবেন। এর কয়েক ঘণ্টা পরেই তিনি জানান যে নতুন প্রেসিডেন্টের অভিষেক অনুষ্ঠানে তিনি যোগদান করা থেকে বিরত থাকবেন।
তার কয়েকজন সমর্থক বিষয়টিকে আরও এক ধাপ নিয়ে গেছেন। তারা পরিকল্পনা করছেন জো বাইডেনের শপথ গ্রহণের সময়, পাশাপাশি ঠিক একই সময়ে ডোনাল্ড ট্রাম্পের জন্য ভার্চুয়াল অভিষেক অনুষ্ঠান আয়োজনের। ফেসবুকে এরকম একটি অনুষ্ঠান আয়োজনের কথাও ঘোষণা করা হয়েছে এবং ইতিমধ্যে তাতে প্রায় ৭০ হাজার মানুষ জানিয়েছেন যে মি. ট্রাম্পের সমর্থনে তারা অনলাইনের অভিষেক অনুষ্ঠানে যোগ দেবেন।
ডোনাল্ড ট্রাম্প যখন প্রেসিডেন্ট হিসেবে শপথ নিয়েছিলেন সেসময় তার প্রতিদ্বন্দ্বী ডেমোক্র্যাট প্রার্থী হিলারি ক্লিনটন তার স্বামী সাবেক প্রেসিডেন্ট বিল ক্লিনটনকে নিয়ে তাতে উপস্থিত ছিলেন।
এর আগে মাত্র তিনজন প্রেসিডেন্ট- জন অ্যাডামস, জন কুইন্সি অ্যাডামস এবং অ্যান্ড্রু জনসন তাদের উত্তরসূরিদের অভিষেক অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন না। তবে এগুলোর সবই ছিল গত শতাব্দীর আগের ঘটনা।
করোনা মহামারির মধ্যে কীভাবে হবে অভিষেক : স্বাভাবিক পরিস্থিতিতে এই অভিষেক অনুষ্ঠানকে কেন্দ্র করে হাজার হাজার মানুষ ওয়াশিংটন ডিসিতে জড়ো হয়ে থাকে। সেদিন তারা উপস্থিত হয় ন্যাশনাল মলে।
বারাক ওবামা ২০০৯ সালে প্রথম মেয়াদে যেবার প্রেসিডেন্ট হিসেবে শপথ নিয়েছিলেন সেসময় প্রায় ২০ লাখ মানুষ সেখানে জড়ো হয়েছিলেন।
তবে এবার এই উদ্যাপন হবে খুবই সীমিত পরিসরে। নতুন প্রেসিডেন্ট বাইডেনের টিম থেকে রাজধানীতে না আসার জন্য ইতিমধ্যেই আহ্বান জানানো হয়েছে।
মি. বাইডেন এবং কমালা হ্যারিস উভয়েই মলকে সামনে রেখে ক্যাপিটল হিলের সম্মুখে শপথ গ্রহণ করবেন। ১৯৮১ সালে প্রেসিডেন্ট রোনাল্ড রিগ্যানের আমল থেকেই এই রীতি চালু হয়েছে। এবার মহামারির কারণে শপথ অনুষ্ঠান দেখার জায়গাগুলোতে স্থাপন করা স্ট্যান্ড সরিয়ে নেয়া হয়েছে।
অতীতে এই অনুষ্ঠানের জন্য দুই লাখের মতো টিকেট দেওয়া হতো। কিন্তু এবার, করোনাভাইরাসের সংক্রমণ যখন বেড়েই চলেছে, এক হাজার টিকেট দেওয়া হবে বলে জানানো হয়েছে।
এছাড়াও পেনসিলভানিয়া অ্যাভিনিউ থেকে হোয়াইট হাউসের অভিমুখে যে কুচকাওয়াজ অনুষ্ঠিত হয়, বলা হচ্ছে, এবার সেটা হবে সারা দেশে এবং অনলাইনে।
শপথ গ্রহণের পর সামরিক বাহিনীর সদস্যরা নতুন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনকে তার স্ত্রীসহ এবং ভাইস প্রেসিডেন্ট কমালা হ্যারিসকে তার স্বামীসহ হোয়াইট হাউসে নিয়ে যাবেন। এসময় তাদের সঙ্গে থাকবে বাদ্যযন্ত্রীদের একটি দল।
ক্যাপিটলে চলে হামলা, ওদিকে পার্টিতে ব্যস্ত ট্রাম্প : ক্যাপিটল ভবনে উগ্র সমর্থকদের তাণ্ডবের সময় পার্টি করছিলেন তিনি! বলা হচ্ছে, গোটা ঘটনাই ছিল ট্রাম্পের পূর্বপরিকল্পিত, হামলার পুরোটা সময় টিভি মনিটরে চোখ ছিল তার।
মূলত ভাইরাল হওয়া একটি ভিডিওকে ঘিরেই শুরু হয়েছে এই বিতর্ক। ভিডিওতে ডোনাল্ড ট্রাম্প, তার মেয়ে ইভাঙ্কা এবং ছেলে ট্রাম্প জুনিয়রকে একটি কক্ষে হাস্যোজ্জ্বল মুখে আনন্দ-ফূর্তি করতে দেখা যায়।
এসময় ট্রাম্প অনেকগুলো টিভি মনিটরের সামনে দাঁড়িয়ে ক্যাপিটলে তার সমর্থকদের আনাগোনা পর্যবেক্ষণ করছিলেন।
ভিডিওটি ধারণ করেছেন খোদ ট্রাম্প জুনিয়রই। মোবাইল ফোনে ধারণ করা ভিডিওটির শুরুতেই তাকে সর্মথকদের ‘দেশপ্রেমিক’ উল্লেখ করে ধন্যবাদ জানাতে দেখা যায়। ট্রাম্পকন্যা ইভাঙ্কাও বিক্ষোভকারীদের ‘দেশপ্রেমিক’ আখ্যা দিয়ে একটি টুইট করেছিলেন, যদিও পরে সেটি মুছে ফেলা হয়।
ভিডিওতে ট্রাম্প জুনিয়র তার বাবার সমর্থকদের লড়াইয়ে নামার আহ্বান জানান। এরপর ঘুরে ঘুরে পুরো কক্ষের দৃশ্য দেখাতে থাকেন।
সেখানে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প ও ইভাঙ্কাকে হোয়াইট হাউসের একাধিক জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তার সঙ্গে কথা বলতে দেখা যায়। এসময় ট্রাম্পের সামনে থাকা টিভি মনিটরগুলোতে তার সমর্থকদের দেখা যাচ্ছিল।
ভিডিওতে অনেককেই হাসতে এবং কাউকে কাউকে উচ্চস্বরে বাজতে থাকা গানের তালে নাচতে দেখা যায়।
কংগ্রেসে হামলায় ভেতরের সহযোগিতা ছিল, বিশ্বাস গোয়েন্দাদের : কংগ্রেসের ভেতরে জোরপূর্বক প্রবেশ করে ভাঙচুর ও সহিংসতা চালানোর ঘটনা নিয়ে ইউরোপীয় নিরাপত্তা কর্মকর্তারা বলছেন, আদতে সহিংস অভ্যুত্থান চালাতে চেয়েছিল ট্রাম্পের সমর্থকরা। তাদের বিশ্লেষণ, এই হামলায় ক্যাপিটল হিলের নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা মার্কিন ফেডারেল সংস্থাগুলোও হামলাকারীদের সহায়তা করে থাকতে পারে।
খবরে বলা হয়, হামলার বিষয়ে তিন জন ইউরোপীয় কর্মকর্তার সঙ্গে কথা বলেছে বিজনেস ইনসাইডার। তাদের মধ্যে একজন প্যারিসের জননিরাপত্তা বিষয়ক পুলিশ কর্মকর্তা, বাকি দুইজন ন্যাটো-সদস্যভুক্ত দেশের দুই গোয়েন্দা কর্মকর্তা। কর্মকর্তাদের ভাষ্যমতে, হামলাটিতে এমন সব অবস্থাগত প্রমাণ পাওয়া গেছে, যেগুলোর ভিত্তিতে অন্য যেকোনো দেশে এটিকে খোলামেলাভাবে অভ্যুত্থান বলা যেত।
নাম না প্রকাশের শর্তে ওই কর্মকর্তারা আরও বলেন, ফেডারেল সংস্থার কর্মকর্তারাই ওই বিশৃঙ্খলার সুযোগ করে দিয়েছেন।
ন্যাটোর এক কর্মকর্তা বলেন, ‘প্রেসিডেন্টের সমর্থকরা সামরিক পোশাক পরে, বিদ্রোহী-ঘরানার পতাকা উড়িয়ে ক্যাপিটল ভবনে হামলা চালায়। ভবনটিতে ওই প্রেসিডেন্টের নিয়ন্ত্রাধীন ফেডারেল আইনপ্রয়োগকারী সংস্থাগুলো কোনো নিরাপত্তা দেয়াল তৈরি করেনি। বিক্ষোভকারীরা সহজেই পুলিশকর্মীদের ধরাশায়ী করে ফেলে। প্রেসিডেন্ট এরপর এক বিবৃতিতে জানান, তিনি তার সমর্থকদের ভালোবাসেন। কিন্তু তাদের থামতে বলেন না।’ ন্যাটোর ওই কর্মকর্তা জানান, ট্রাম্প একটি ব্যর্থ অভ্যুত্থানের চেষ্টা চালিয়েছেন।
এদিকে, মার্কিন সামরিক বাহিনীকে প্রশিক্ষণ দিয়ে থাকেন, এমন এক ফরাসি পুলিশ কর্মকর্তার বিশ্বাস, কংগ্রেসের চারপাশে নিরাপত্তাকর্মী মোতায়েনের ব্যাপারে কেউ হস্তক্ষেপ করেছে। তদন্ত করলে এমনটা বের হয়ে আসবে।