চাদরে মোড়ানো হলো ক্যাপিটল হিল নিরাপত্তা
মোঃ নাসির, নিউ জার্সি (আমেরিকা) প্রতিনিধিঃ ট্রাম্পের শাসনকাল ছিল গোটা বিশ্বের জন্যই বিস্ময়কর ।যুক্তরাষ্ট্রের বিদায়ী প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ৪৫তম রাষ্ট্রপতি।আমি মোঃ নাসির মনে করি এ ছাড়াও তিনি একজন ধনাঢ্য ব্যবসায়ী, বিনিয়োগকারী, বিশিষ্ট সামাজিক ব্যক্তিত্ব ও লেখক হিসেবে আলোচিত। তিনি দ্য ট্রাম্প অর্গানাইজেশনের পরিচালক এবং ট্রাম্প এন্টারটেইনমেন্ট রিসোর্টের প্রতিষ্ঠাতা। গোটা বিশ্বের জন্যই বিস্ময়কর ছিল মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের চার বছরের মেয়াদকাল। সেই মেয়াদকালের বাইরেও তাঁর অঘটনগুলো জন্ম দিয়েছে নানা বিতর্ক। কখনো তিনি বিরোধীপক্ষ বা ব্যক্তিকে অবিশ্বাস্যভাবে কাছে টেনেছেন। আবার আপনজনদের দূরে ঠেলে দিয়েছেন। নানা রকম মন্তব্য করে সবসময়ই আলোচনায় থেকেছেন এই বিদায়ী প্রেসিডেন্ট। নির্বাচনে হেরে যাওয়ার কথা স্বীকার করতে প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প গররাজি ছিলেন । তবে ট্রাম্পের প্রচার শিবির থেকে পরাজয় মেনে নেওয়ার আলামত স্পষ্ট হয়ে উঠেছিল ।
দূর থেকে দেখে বোঝার উপায় নেই এটি মার্কিন পার্লামেন্ট ভবন – মার্কিন রাজনীতির পাওয়ার হাউস ক্যাপিটল হিল। বাইরে হাজার হাজার সেনা, ভেতরে শত শত। তাদের হাতে অত্যাধুনিক সব মারণাস্ত্র। চলছে দিনরাত পাহারা-টহল। সর্বশেষ প্রাচীরের ওপর বসানো হয়েছে ক্ষুরধার তারকাঁটা। ঘিরে ফেলা হয়েছে পুরো কংক্রিট চত্বর।
যুক্তরাষ্ট্রের নতুন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের অভিষেকে হামলার আশঙ্কায় নিশ্ছিদ্র নিরাপত্তার চাদরে মুড়ে ফেলা হয়েছে মার্কিন গণতন্ত্রের কেন্দ্রস্থল ক্যাপিটল হিল। বাইডেনের শপথের আর মাত্র চার দিন বাকি। তার আগেই রাজধানী ওয়াশিংটনজুড়ে নিরাপত্তাব্যবস্থা এমন জোরদার করা হয়েছে, মার্কিন ইতিহাসে যা একেবারেই নজিরবিহীন। রাজধানীকে তাই ডাকা হচ্ছে ‘ফোরট্রেস ওয়াশিংটন’ বলে।
কোনো আগাম নোটিশ ছাড়াই ১৪ জানুয়ারি বৃহস্পতিবার হঠাৎ করেই পার্লামেন্ট ভবনের চারপাশের ৮ ফুট উঁচু প্রাচীরে বসানো হয় ক্ষুরধার তারকাঁটা। ট্রাম্পপন্থী উগ্র হামলাকারীরা আগের মতো যেন এবারও দেয়াল বেয়ে উঠতে না পারে, সে জন্যই এ ব্যবস্থা। তারকাঁটার পেছনেই পাহারায় রয়েছে ন্যাশনাল গার্ডের সেনারা।
এদিন সন্ধ্যায় ক্যাপিটল হিলে হঠাৎ পরিদর্শনে আসেন মার্কিন ভাইস প্রেসিডেন্ট মাইক পেন্স। এ সময় তিনি ঘুরে ঘুরে নিরাপত্তা পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করেন ও পাহারায় থাকা নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যদের ধন্যবাদ ও শুভেচ্ছা জানান।
এ সময় পেন্স বলেন, ‘ভাইস প্রেসিডেন্ট হিসেবে আপনাদের সেবা করতে পারা অতি সম্মানের। দেশ ও নাগরিকদের সেবায় কাজ করছেন আপনারা। এ জন্য আপনাদের ধন্যবাদ জানাচ্ছি।’
এর দুই দিন আগেই পরিদর্শন করেন হাউস স্পিকার ও ডেমোক্র্যাট নেত্রী ন্যান্সি পেলোসি। নিরাপত্তা বিষয়ে ন্যাশনাল গার্ড সদস্যদের বেশ কিছু দিকনির্দেশনাও দেন তিনি।
গত ৬ জানুয়ারি পার্লামেন্টের এক যৌথ অধিবেশনে আনুষ্ঠানিকভাবে প্রেসিডেন্ট বাইডেনের বিজয় সত্যায়ন করে মার্কিন কংগ্রেস। কিন্তু সত্যায়নে বাধা দিতে অধিবেশনকালেই পার্লামেন্ট ভবন ক্যাপিটল হিলে সশস্ত্র হামলা চালায় প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সমর্থকরা।
যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাসে পার্লামেন্টে হামলার এ নজিরবিহীন ঘটনায় তোলপাড় শুরু হয় মার্কিন রাজনীতিতে। একে ‘গণতন্ত্রের ওপর হামলা’ অভিহিত করে নিন্দা জানান বিশ্বের বিভিন্ন দেশের নেতারা। এ ঘটনায় উসকানি দেওয়ায় ট্রাম্পকে অভিশংসন করা হয়েছে। হামলা ও তাণ্ডবে অংশ নেওয়ায় হামলাকারীদের খুঁজে খুঁজে গ্রেফতার করছে মার্কিন কর্তৃপক্ষ।
এরই মধ্যে খবর আসছে, আগামী ২০ জানুয়ারি বুধবার বাইডেনের শপথ অনুষ্ঠানে ফের হামলা চালানোর প্রস্তুতি নিচ্ছে ট্রাম্প সমর্থকরা। সেই আশঙ্কা মাথায় রেখেই পুরো ওয়াশিংটন ও পার্লামেন্ট ভবন ক্যাপিটল হিলে নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে।