ঢাকা | ডিসেম্বর ২৭, ২০২৪ - ৪:২৫ অপরাহ্ন

সংবাদ শিরোনামঃ

ছোট গল্প ◉ অভিশপ্ত নিয়তি ◉

  • দৈনিক নবোদয় ডট কম
  • আপডেট: Wednesday, January 20, 2021 - 6:45 pm
  • News Editor
  • পঠিত হয়েছে: 101 বার

◉ অভিশপ্ত নিয়তি ◉
_

দশ- বারো বছর পর একটা কফি শোপে প্রাক্তন স্ত্রীর সাথে দেখা। প্রথম দেখাতেই দুজন দুজনকে চিনতে পারলাম।

– কেমন আছো?
– ভালো, তন্দ্রা তুমি কেমন আছো?
– ভালো নেই ।
– কেন? ভালো থাকার জন্যই তো আমাকে ছেড়ে চলে গিয়েছিলে!
– হ্যাঁ, তোমার সাথে থেকে, শুধু প্রেম ভালোবাসা দিয়ে কি জীবন চলতো? কবিতা, গল্প খেয়ে কি আমার পেট ভরতো?
আমি ঠিক কাজ করেছি। আর মানুষ হিসাবেও তোমাকে বিয়ের পরে অনেক ভালো করেই চিনেছিলাম। তাই তোমাকে ছেড়ে দিয়ে ঠিক করেছিলাম। এখন আমার কোন কিছুর অভাব নেই। বড়লোক স্বামী আছে। যথেষ্ট স্বাধীনতা আছে। রাত চারটার সময়ও বাড়ি ফিরলেও আমার স্বামী তেমন কখনো জানতে চায়না। আমার চারচাকার গাড়িও আছে একটা না,দুইটা…..।
– তাহলে তো সবই আছে। তো খারাপ কেন?
– একটাই সমস্যা আমরা “কোন সন্তান” নিতে পারছিনা। হচ্ছে না। বহু চেষ্টা করেছি। কিন্তু হচ্ছেই না আজ আট বছরেও। আর এ জন্য অবশ্যই তুমিই দায়ী ।
– অবাক ব্যাপার! তোমাদের সন্তান হচ্ছে না, এজন্য আমি দায়ী কিভাবে?
– শুনলাম এখনো বিয়ে করোনি। এবার করে ফেল। এত দিন হয়ে গেলো বিয়ে করনি কেন?

তন্দ্রার অঙ্কটা আর বুঝতে বাকি থাকলোনা এবার আমার । জটিল হিসেব করেছে তন্দ্রা। আমি তো ওকে কোন অভিশাপ কখনো দেইনি। শুধু ভালোবেসেছি। এখনো ভালোবাসি। হয়ত এটুকু অপরাধ যে, ও ছেড়ে যাবার পরেও আজ এই মুহূর্ত পর্যন্ত প্রতিটি কাজে,দিন ও রাত্রি যাপনে,প্রতিটি পরিস্থিতিতে এমনকি প্রতিটি “নিশ্বাসে” ওকে মিস করি।

– দেখ আমি খারাপ মানুষ। আমার কষ্ট বা অভিশাপ কাউকে স্পর্শ করার কথা না। আর তোমাকেও বা কেন করবে? তোমার জন্য আমার বিয়ে বন্ধ রাখিনি। রেখেছি আমার সাহসের অভাবের কারণে। তোমাকে আমার কখনোই মনে পরে না। মনে রাখিওনি আর রাখতেও চাইনা, ok bye…। আমার তাড়া আছে। চলি….।

হ্যান্ড ব্যাগটা তুলে নিয়ে উল্টো রাস্তা ধরলাম। হাঁটতে হাঁটতে তন্দ্রার কান্না শুনতে পাচ্ছি। সে চিৎকার করে বলছেঃ

– তুমি যাকে ইচ্ছে তাকেই তাড়াতাড়ি বিয়ে করো। আমি তোমার বিয়ের সব খরচ দেব।
আমি মা হতে চাই….মা হতে চাই। আর না হয় ক্ষমা করো আমাকে। আমি মা হতে চাই……..।।

কষ্ট লাগছে আমার। কিন্তু এই কষ্ট আমার জীবনে নিয়মিত হয়ে গেছে। সয়ে গেছে একদম।

_ 2021